রাজশাহীতে পুলিশের
গুলিতে শিবির নেতা এবং যশোর ও
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কথিত
বন্দুকযুদ্ধে জামায়াত ও শিবিরের দুই
নেতা নিহত হয়েছেন। এ
দিকে যশোরে একই ঘটনায়
কলারোয়া পৌর ছাত্রদল
সভাপতি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
রাজশাহী ব্যুরো ও
রাবি সংবাদদাতা জানান,
রাজশাহীতে পুলিশের
গুলিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক
নেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম মো:
শাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার মধ্য
রাতে নগরীর
কাটাখালি বাজারসংলগ্ন এলাকায়
এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহাবুদ্দিন
ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
শাখার তথ্য সম্পাদক ও নাটোর জেলার
ছাতনী এলাকার রফিকুল্লাহর ছেলে।
তিনি রাবির ক্রপ সায়েন্স বিভাগের
মাস্টার্সের শিার্থী ছিলেন।
এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের আরো দুই
নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
তারা হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের
আবুল কাশেমের ছেলে ও রাবির
হবিবুর হল সভাপতি হাবিবুর রহমান
এবং যশোরের এনায়েতপুরের গোলাম
রহমানের ছেলে ও বিনোদপুর আবাসিক
শাখার সভাপতি মফিজুর রহমান।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ
(রামেক)
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ
হেফাজতে তারা চিকিৎসাধীন
রয়েছেন।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার
দিকে শিবিরের রাবি শাখার তথ্য
সম্পাদক মো: শাহাবুদ্দিন, হবিবুর হল
সভাপতি হাবিবুর রহমান ও বিনোদপুর
আবাসিক শাখার সভাপতি মফিজুর
রহমান বন্ধুর বাড়ি থেকে দাওয়াত
খেয়ে মোটরসাইকেলে ফেরার
পথে কাটাখালি পৌরসভার
সামনে মতিহার থানা পুলিশ তাদের
গতি রোধ করে আটক করে।
পরে শাহাবুদ্দিনকে অমানুষিক
নির্যাতনের পর
গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এ সময়
পুলিশ অপর দুই শিবির নেতা হাবিবুর
রহমান ও মফিজুর রহমানকেও
গুলি করে আহত করে।
সূত্রটি আরো জানায়, আটক করার পর
তাদের কোনো সন্ধান
পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাত ২টার
দিকে একজনকে মৃত ও অপর
দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রামেক
হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
গুলিবিদ্ধ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ব্যাপারে রামেক হাসপাতাল
পুলিশ বক্সের
দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই)
বদিউজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার
রাত ২টার
দিকে কে বা কারা গুলিবিদ্ধ
অবস্থায়
তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন
। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক
শাহাবুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তার
লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
তিনি আরো জানান, গুলিবিদ্ধ অন্য
দু’জনের মধ্যে মফিজুরের দুই পায়ে ও
হাবিবুরের ডান পায়ে হাঁটুর
নিচে গুলি লেগেছে। তাদের পুলিশ
হেফাজতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্
ছে।
মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন
সাংবাদিকদের বলেন,
রাতে কাটাখালি পৌরসভার
সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তিন
শিবির নেতা সেখানে দায়িত্বরত
পুলিশের ওপর ককটেল নিপে করে। এ সময়
মাহবুবুর রহমান নামের এক পুলিশ
কনস্টেবলকে পেছন থেকে রড
দিয়ে আঘাত করে তারা। দুর্বৃত্ত
বুঝতে পেরে আত্মরায় পুলিশ
তাৎণিকভাবে গুলি চালায়।
এতে একজন নিহত ও অপর দু’জন গুলিবিদ্ধ
হয়ে আহত হন। আহতদের রামেক
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায়
বিভিন্ন নাশকতার
সাথে তারা জড়িত বলে দাবি করেন
ওসি। আহত পুলিশ সদস্যকেও রামেক
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে
জানান তিনি।
নিহত শাহাবুদ্দিনের
স্বজনেরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত
৯টার দিকে ব্যক্তিগত কাজ শেষ
করে কাটাখালি বাজার
দিয়ে ফেরার পথে পুলিশ তাদের আটক
করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
পরিবারের সদস্যসহ বন্ধুরা বারবার
তাদের অবস্থান জানতে চাইলে পুলিশ
তাদের আটক করার কথা অস্বীকার
করে। পরে রাত ২টার দিকে খবর
আসে রামেক হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ
অবস্থায় তাদের
ভর্তি করা হয়েছে এবং শাহাবুদ্দিন
মারা গেছেন। নিহতের পরিবারের
অভিযোগ, পুলিশ
পরিকল্পিতভাবে শাহাবুদ্দিনকে হত্য
া করেছে।
স্বজনেরা আরো বলেন,
আমরা ভেবেছিলাম
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমাদের
সন্তানেরা নিরাপদেই আছেন। কারণ
আমাদের জানা মতে,
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে হত্যা নয়
বরং অভিযুক্তকে আইনের
হাতে তুলে দেয়। পুলিশ যে নৃশংস
অমানবিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে,
তাতে আমরা বাকরুদ্ধ। আইনের
রকেরা যদি বেআইনিভাবে এমন নৃশংস
হত্যাকাণ্ড চালায়
তাহলে নাগরিকেরা যাবেন
কোথায়? আমরা এ হত্যার উপযুক্ত বিচার
চাই; যাতে আর কোনো মা-বাবার বুক
এভাবে খালি না হয়।
রাজশাহী ছাত্রশিবিরের বিবৃতি : এ
দিকে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও
প্রতিবাদ জানিয়েছেন
ছাত্রশিবিরের
রাবি সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন ও
সাংগঠনিক সম্পাদক শোয়েব
শাহরিয়ার এবং রাজশাহী মহানগর
সভাপতি ডা: আনোয়ারুল ইসলাম ও
সেক্রেটারি নাফিস রাইয়ান।
গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ
ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের দ্রুত
গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, রাতে বন্ধুর
বাড়ি থেকে দাওয়াত
খেয়ে মোটরসাইকেলে ফেরার
পথে কাটাখালি পৌরসভার
সামনে মতিহার থানা পুলিশ তিন
শিবির নেতার গতি রোধ করে আটক
করে। পরে শিবির
নেতা শাহাবুদ্দিনকে অমানুষিক
নির্যাতনের পর
গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এ সময়
পুলিশ অন্য দুই শিবির নেতা হাবিবুর
রহমান ও মফিজুর রহমানকেও
গুলি করে আহত করে।
নেতারা আরো বলেন, আমরা বেশ
কয়েক দিন ধরে দেখছি পুলিশ
অবৈধভাবে রাজনৈতিক
নেতৃবৃন্দকে হত্যা করছে। পুলিশ
এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড
ঘটিয়ে নিজেদের জনগণের
শত্র“তে পরিণত করছে। আমরা স্পষ্ট
ভাষায় বলতে চাই,
ছাত্রজনতাকে যেভাবে গুলি করে হত্য
া করা হচ্ছে, তার বিচার
বাংলাদেশের মাটিতেই হবে।
উন্মাদ এই সরকারের বাঁচার আর
কোনো পথ নেই। সরকার যদি এখনই
মতা থেকে সরে না দাঁড়ায়
তাহলে তাদের পরিণতি ক্রমেই ভয়াবহ
হতে থাকবে।
নেতৃবৃন্দ পুলিশকে আওয়ামী সরকারের
গুণ্ডাবাহিনী হিসেবে ভূমিকা পালন
করার পরিবর্তে জনগণের সেবক
হিসেবে ভূমিকা অবলম্বনের আহ্বান
জানান।
রাজশাহী জামায়াতের বিবৃতি :
জামায়াতে ইসলামীর
রাজশাহী মহানগর আমির প্রফেসর এম
আবুল হাশেম ও সেক্রেটারি ডা:
মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর গতকাল শুক্রবার
এক যুক্ত বিবৃতিতে পুলিশ কর্তৃক
ইসলামী ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য
সম্পাদক
শাহাবুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা এবং শ
িবির নেতা হাবিবুর ও
মফিজুরকে গুলি করে আহত করার তীব্র
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায়
জড়িত পুলিশ সদস্যদের
অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর
দাবি জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, মেধাবী এসব
ছাত্রকে আটকের পর গুলি করে হত্যা ও
আহত
করে হাসপাতালে ভর্তি করা দুঃখজনক
। কারণ তাদের কোনো মিছিল-
মিটিং বা পিকেটিং থেকে আটক
করা হয়নি। তাই কিসের
ভিত্তিতে শাহাবুদ্দিনকে রাতে গুল
ি করে হত্যা ও অন্য
দু’জনকে পায়ে গুলি করা হলো,
দেশবাসী আজ তা জানতে চায়।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হত্যার সাথে জড়িত
পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত
করে বিচারের আওতায়
আনা এবং দেশ ও বিদেশের
মানবাধিকার সংস্থাকে সুষ্ঠু তদন্তের
আহ্বান জানান।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, হত্যা-নির্যাতন
চালিয়ে সরকার মতায়
টিকে থাকতে পারবে না। গণ-
আন্দোলনের মাধ্যমেই এ সরকারের পতন
হবে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস
চালিয়ে কখনো মতায়
টিকে থাকা যায় না।
ফ্যাসিবাদী সরকার বিরোধী দলের
গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে বানচাল
করতে অগণতান্ত্রিক ও
স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করেছে।
সর্ব েেত্র ব্যর্থ এ সরকার
দিশেহারা হয়ে জনগণের
দৃষ্টিকে ভিন্ন
দিকে ফেরাতে বিরোধী দলের
নেতাকর্মীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন,
গ্রেফতার-অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ
বাহিনীকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার
করছে। এ অবস্থা আর চলতে পারে না।
এর জন্য সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে।
তারা বলেন, রাজশাহীতে পুলিশ
গুলি করে শিবির
নেতা শাহাবুদ্দিনকে হত্যা করেছে,
আরো দু’জনকে গুলি করে হাসপাতালে
ভর্তি করেছে। যার নিন্দা জানানোর
ভাষা আমাদের নেই।
রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের
বিােভ, আটক ৮
পুলিশের গুলিতে শিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি)
তথ্য সম্পাদক শাহাবুদ্দিন নিহত হওয়ার
প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিােভ
মিছিল করেছে সংগঠনটির
নেতাকর্মীরা। শুক্রবার
বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর
নিউমার্কেট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন
করেন তারা। পরে শিবির
কর্মী মনে করে আট জনকে আটক
করে পুলিশ।
প্রত্যদর্শীরা জানান,
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর
নিউমার্কেটের প্রধান ফটকের
সামনে থেকে মহানগর
ছাত্রশিবিরের
উদ্যোগে একটি বিােভ মিছিল বের
হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক
প্রদণি করে শহীদ নজমূল হক
বালিকা বিদ্যালয়ের
সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব
দেন মহানগর শিবিরের
সেক্রেটারি নাফিস রাইয়ান। এ সময়
তারা শিবির নেতা শাহাবুদ্দিন
হত্যার প্রতিবাদে ডাকা হরতালের
সমর্থনে স্লোগান দেন এবং দোষীদের
গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর
হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটককৃতদের থানায়
নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে এ
বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে পুলিশের
গুলিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য
সম্পাদক মো: শাহাবুদ্দিন নিহতের
প্রতিবাদে রাজশাহী বিভাগের আট
জেলায় আগামীকাল রোববার সকাল
৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত
টানা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল
ডেকেছে ছাত্রশিবির। একই
সাথে আজ শনিবার বিােভ
কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। গতকাল
শুক্রবার ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী অঞ্চলের নেতৃবৃন্দের এক
জরুরি বৈঠকে এই হরতাল ও বিােভ
কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর
শাখার প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান
স্বারিত এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচির
ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
যশোর অফিস জানায়, পুলিশের
সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাতক্ষীরার
জামায়াত কর্মী শহীদুল ইসলাম (৫০)
যশোরে নিহত হয়েছেন।
তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার
কাশিমপুর গ্রামের নূর আলী সানার
ছেলে ও
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের
আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল
খালেকের ভাগ্নে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম
আরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার
রাত ৩টায় যশোর সদর উপজেলার
রামনগরে ক্ষণিকা পিকনিক কর্নারের
সামনে একটি মাইক্রো বাস
থামালে যাত্রীরা পুলিশকে লক্ষ্য
করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশ
পাল্টা গুলি করলে শহিদুল গুলিবিদ্ধ
হন। তাকে আহতাবস্থায় যশোর
মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত
ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাইক্রোর অন্য
যাত্রীরা পালিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, নিহত শহীদুল ইসলাম
পলাতক আসামি। তাকে ও
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর
ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল
মজিদকে নিয়ে শার্শা থানার পুলিশ
বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরে আনার
পথে তারা পালিয়ে যান।
তারা একাধিক মামলার আসামি।
আবদুল মজিদের ভগ্নিপতি আবুল কালাম
আজাদ বলেছেন ভিন্ন কথা।
তিনি জানান, তাদের
দু’জনকে শার্শা থানা থেকে গাড়িত
ে তুলে যশোরে আনা হয়।
তিনি মোটরসাইকেলে ওই গাড়ির
পেছনে পেছনে যশোর শহর পর্যন্ত
আসেন। পরে কোতোয়ালি থানায়
এসে খোঁজ নিলে বলা হয়,
তারা যশোর-বেনাপোল সড়কের
নতুনহাটের কাছ
থেকে পালিয়ে গেছেন।
তিনি দৃঢ়তার সাথে জানান,
তারা পালাননি। যশোর
জেলা জামায়াতের পক্ষ
থেকে দাবি করা হয়েছে শহীদুল
ইসলাম জামায়াতের একজন
নিবেদিতপ্রাণ কর্মী।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার
সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এ
দিকে সাতক্ষীরা থেকে পাওয়া খবর
ে জানা গেছে, আবদুল
মজিদকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায়
সাতক্ষীরা সদর
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যশোর জেলা জামায়াতের
ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাদ্দিস আবু সাঈদ ও
সেক্রেটারি মাস্টার
নূরুন্নবী জানান, শহীদুল
ইসলামকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা কর
া হয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন
বন্ধ করার কৌশল
হিসেবে বিরোধী দলের
নেতাকর্মীদের
এভাবে হত্যা করা হচ্ছে। জামায়াত
নেতৃদ্বয় বিচারবহির্ভূত এ
হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান,
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়
পুলিশের সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’
ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতার
মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় শিবির
নেতাদের দাবি, নিহত শাহাব উদ্দীন
পাটোয়ারী (২৩) চৌদ্দগ্রাম
উপজেলা সদর শিবিরের সভাপতি।
তার বাড়ি চৌদ্দগ্রাম
পৌরসভা এলাকার
চান্দিশকরা গ্রামে।
তিনি চৌদ্দগ্রাম নজমিয়া সিনিয়র
মাদরাসার শিক মাওলানা জয়নাল
আবদীন পাটোয়ারীর ছোট ছেলে।
শাহাব উদ্দীন
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলে
জের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের
অনার্স শেষ পর্বের ছাত্র ছিলেন।
শিবির নেতা হত্যার
প্রতিবাদে রোববার সকাল
৬টা থেকে চট্টগ্রাম
বিভাগে হরতালের ডাক
দেয়া হয়েছে।
সাদা পোশাকের পুলিশ বৃহস্পতিবার
বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে শাহাব
উদ্দীনকে নিজ
বাড়ি থেকে নিয়ে যায়
বলে দাবি করেছেন নিহতের
মা ছাকিনা বেগম। কুমিল্লার পুলিশ
সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, পুলিশের ওপর
হামলার পর গোলাগুলিতে ওই শিবির
নেতা নিহত হন। তবে কখন, কোথায় এ
ঘটনা ঘটে সে বিষয়ে কিছু
জানাননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের
ওয়ার্ডবয় শাহজাহান বলেন, শুক্রবার
সকাল সোয়া ৬টার দিকে চৌদ্দগ্রাম
থানার এসআই ইব্রাহীম অজ্ঞাত পরিচয়
এক যুবকের লাশ
হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার
মাথায় গুলির চিহ্ন ছিল।
লাশটি হাসপাতালের
মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান
তিনি। কুমেকের নার্স
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক
দুলাল চন্দ্র সূত্রধর জানান, চৌদ্দগ্রাম
থানার উপপরির্দশক ইব্রাহীম শুক্রবার
সকালে ওই যুবকের লাশ কুমেক
মর্গে নিয়ে আসেন। নিহত শিবির
নেতা শাহাব উদ্দীনরা দুই ভাই ও তিন
বোন। ভাইবোনদের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
তার বড় ভাই মাঈন উদ্দীন
বিদেশে থাকেন। মেধাবী ছাত্র
নেতা শাহাব উদ্দীন
পাটোয়ারীকে বন্দুকযুদ্ধের
নামে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা কর
া হয়েছে বলে দাবি করেছেন
কুমিল্লা দণি জেলা ছাত্রশিবিরের
সভাপতি আবদুর রব ফারুকী। এ
দিকে শিবির নেতা শাহাব
উদ্দীনকে হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম
বিভাগে রোববার সকাল
৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত
৪৮ ঘণ্টার হরতাল
ডেকেছে ছাত্রশিবির। শিবিরের
কেন্দ্রীয় কর্যকরী পরিষদের সদস্য
কুমিল্লা মহানগর সভাপতি শাহ আলম
হরতাল কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন। তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক
মেধাবী ছাত্র নেতাদের হত্যা বন্ধ
না করা হলে চট্টগ্রাম বিভাগসহ
দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
রাজশাহীতে নিহত শিবির নেতার
লাশ হস্তান্তর
রাজশাহী ব্যুরো ও
রাবি সংবাদদাতা জানান, পুলিশের
গুলিতে নিহত
ইসলামী ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
শাখার তথ্য সম্পাদক মো:
শাহাবুদ্দিনের লাশ তার পরিবারের
সদস্যদের কাছে হস্তান্তর
করেছে পুলিশ। রাজশাহী মেডিক্যাল
কলেজ (রামেক)
হাসপাতালে ময়নাতদন্ত
শেষে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার
দিকে নিহতের পিতা রফিক উল্লাহর
কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
রামেক হাসপাতালে দুই
শিার্থী আটক
এ দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল
কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিহত
শাহাবুদ্দিনের সহপাঠীরা তার লাশ
দেখতে এলে দুই শিার্থীকে আটক
করে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার
বেলা ২টার দিকে হাফিজ ও কবির
নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
কাল দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান
শিবিরের : আজ বিক্ষোভ
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে নির্বিচার
ে নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, গুলি,
নির্যাতন, বাড়িঘর ভাঙচুর ও
গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে কাল
রোববার দেশব্যাপী সকাল-
সন্ধ্যা হরতালের
কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রশিবির।
গতকাল এক বিবৃতিতে শিবির
সভাপতি আবদুল জব্বার ও
সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর
রহমান এ হরতাল আহ্বান করেন। এ
ছাড়া আজ শনিবার
সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও
ঘোষণা করা হয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, ছাত্রজনতার মুক্তির
আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোক
াবেলা করতে না পেরে নৃশংস ও
অমানবিকতার পথ
বেছে নিয়েছে অবৈধ সরকার।
আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়
ে নেতাকর্মীদের
বাসা থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে
গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।
অনেককে গ্রেফতারের পর অস্বীকার ও
মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর
রাতে বন্দুকযুদ্ধের নাটক
সাজিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়ে
ছে।
তারা বলেন,
কোনো কোনো নেতাকর্মীকে গুলি ক
রে হত্যা করার পর গাড়ির
নিচে ফেলে হত্যার নাটক
সাজাতেও দ্বিধা করেনি। চলমান
আন্দোলনে এক মাসে চট্টগ্রামে দুই,
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই, ঢাকায় এক,
রাজশাহীতে এক ও কুমিল্লায় একজনসহ
ছাত্রশিবিরের সাতজন
নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা ও
শতাধিক
নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে পায়ে পিস্
তল ঠেকিয়ে গুলি করেছে রাষ্ট্রীয়
বাহিনী। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের
বিভিন্ন স্থানে দুই
নেতাকর্মীকে হত্যা ও ১৪
জনকে পায়ে পিস্তল
ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে।
যারা বিভিন্ন কলেজ-
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন,
সারা দেশে ডাকাতের
মতো নেতাকর্মীদের
বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও
লুটপাট করছে যৌথবাহিনী ও
সরকারদলীয় ক্যাডারেরা।
চলছে নির্বিচারে গণগ্রেফতার।
একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে এ
ধরনের অসভ্য আচরণ
কল্পনা করা না গেলেও এ
দেশে তা প্রতিদিনই ঘটছে। কিন্তু
এভাবে চলতে দেয়া যায় না। তাই
নির্বিচারে বিরোধী নেতাকর্মীদে
র হত্যা, গুম, গুলি, বাড়িঘর ভাঙচুর ও
গণগ্রেফতারের
প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস
বন্ধের দাবিতে আজ
সারা দেশে বিক্ষোভ এবং কাল
রোববার দেশব্যাপী সকাল-
সন্ধ্যা হরতালের
কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
পুলিশের মামলা দায়ের : পুলিশের
গুলিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
শাখার তথ্য সম্পাদক মো: শাহাবুদ্দিন
নিহতের ঘটনায় থানায়
মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ
বাদি হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর
মতিহার থানায় মামলাটি দায়ের
করে। এ ব্যাপারে মতিহার থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর
হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার
রাতে শিবির নেতা নিহতের ঘটনায়
থানায় মামলা হয়েছে। তবে এ
ব্যাপারে আর কোনো তথ্য
জানাননি তিনি।
Posted 7th February by Kutubi
Home »
» রাজশাহীতে পুলিশের
গুলিতে শিবির নেতা এবং যশোর ও
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কথিত
বন্দুকযুদ্ধে জামায়াত ও শিবিরের দুই
নেতা নিহত হয়েছেন। এ
দিকে যশোরে একই ঘটনায়
কলারোয়া পৌর ছাত্রদল
সভাপতি গুলিবিদ্ধ
রাজশাহীতে পুলিশের গুলিতে শিবির নেতা এবং যশোর ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কথিত বন্দুকযুদ্ধে জামায়াত ও শিবিরের দুই নেতা নিহত হয়েছেন। এ দিকে যশোরে একই ঘটনায় কলারোয়া পৌর ছাত্রদল সভাপতি গুলিবিদ্ধ
Written By Unknown on শুক্রবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ | ৯:৫২ AM
Related Articles
If you enjoyed this article just Click here Read Dhumketo ধূমকেতু, or subscribe to receive more great content just like it.
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন