একটি জাতি যখন পচে, এভাবেই
ভেতরে-বাইরে নষ্ট হয়ে যায়।
জাতি যে দুই ভাগে ভয়ানক রকমের
দ্বিধাবিভক্ত, সর্বত্রই তা দৃশ্যমান।
আমাদের
সমালোচনাগুলো সরাসরি ব্যক্তিগত
আক্রমণ ও পদার্থবিহীন। এটাকে কখনোই
রাজনীতি বলা যাবে না।
প্রতিদিনকার প্রায়
৬০টি টকশোতে ১৫০ জনের
বেশি অতিথি এবং ৬০ জন
সঞ্চালককে আমার প্রশ্নÑ ঘণ্টার পর
ঘণ্টা আলোচনা হয়, কিন্তু মূল
সমস্যা কবে আলোচনা হয়েছে?
বিপদসঙ্কেত চার নম্বর, আলোচনা হয় গরুর
রচনা। ব্যক্তিগত আক্রমণ অবশ্যই ফার্সের
মতো।
সবাইকে ‘না’ বলার সাহস একটি রাষ্ট্র
কিভাবে পায়, সেই খুঁটির জোর
আমাদের প্রধান আলোচনা হওয়া উচিত
ছিল। ‘‘পৃথিবীর কোনো দেশই এতবার
আমেরিকাকে ‘না’ বলেনি।” পৃথিবীর
আর কোনো দেশ বিশ্বমোড়লদের
এভাবে অপমান করে রেহাই পায়নি।
উদারহণস্বরূপ, গ্রানাডার স্বৈরশাসক
‘নরিয়েগা’কে শায়েস্তা করতে ব্যর্থ
হলে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান তাকে ৪৮
ঘণ্টার
নোটিশে বিমানে তুুলে এনে আমের
িকায় রেখে দিলেন।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত
হাইতির প্রেসিডেন্ট
এরিস্টডকে উৎখাতে মাত্র তিন মাস
সময় নিয়েছিল আমেরিকা।
ফাঁসি হয়েই যায় কিন্তু আমেরিকার
আপত্তিতে কিছু দিন দম নিলেও
প্রক্রিয়া আবার শুরু। এই দায়দায়িত্ব
কোনোভাবেই আমাদের নয়
বরং রাষ্ট্রের একার। ফাঁসি দিতেই
হবে ধরনের
মনমানসিকতা অস্বাভাবিক। বঙ্গবীর
কাদের
সিদ্দিকীকে লেখা প্রধানমন্ত্রীর
চিঠির দুটো লাইন খুব মারাত্মক।
আমি সাধারণ মানুষ। প্রতিশোধ
নিয়ে আগেও কলাম লিখেছি। কলাম
প্রকাশ হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর,
বঙ্গবীরকে লেখা ৮২ সালের
চিঠিতে তা স্বচক্ষে দেখে আমি স্তম্
ভিত। আমি কি গণক? জীবনের নানান
অলিগলি ও ওয়ালস্ট্রিট
থেকে মেইনস্ট্রিট পর্যন্ত হাঁটার
কারণেই হয়তো মানুষের
মনমানসিকতা ও বডিল্যাঙ্গুয়েজ একটু
বেশিই বুঝি। সেই মতে, সার্বিক
পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে যা বুঝি,
জামায়াত-শিবিরকে ছাত্রলীগের
সাথে তুলনা করা, জামায়াত-
শিবিরকে অপমান করা। জামায়াত-
শিবিরের কর্মকাণ্ড মুখে আর লীগের
কর্মকাণ্ড খবরের কাগজে। হত্যার
নেশায় মেতে উঠেছে রাষ্ট্র, এমন
সুপরিকল্পিত হত্যার দৃষ্টান্ত এখন আর
কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই।
তবে আফ্রিকার কিছু দেশ আর
মধ্যপ্রাচ্যে যা ঘটছে, ঠাণ্ডা মাথায়
রাষ্ট্রের চেহারা ক্রমেই সেই
পথে এগোচ্ছে, যা অবশ্যই
পূর্বপরিকল্পিত। হুটু-টুটসিরা ছয় বছর পর
ক্লান্ত হয়েছিল। নাৎসি বাহিনীও
তাই। মিলেশোভিচ হত্যা করছে তিন
বছর। আমাদের দেশে চেতনাবাদি ও
চেতনাহীনদের যুদ্ধ ৪৩ বছর।
৭৩, ৭৪-এর হত্যাকাণ্ডের প্রত্যাবর্তন
২০১০ সাল থেকে, একমাত্র উদ্দেশ্য
বিরোধীপক্ষকে নির্মূল করা। সেই
লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত-
শিবিরকে নিমূর্ল করার প্রক্রিয়া ৯৯
ভাগই সম্পন্ন। সেই দৃষ্টান্ত যথাতথা।
কিন্তু প্রায় ১০ শতাংশ জামায়াত-
শিবির ও ৩৫ শতাংশ
বিএনপি যাবেটা কোথায়?
তাদেরকে কি জাহাজে করে আন্দাম
ানে পাঠিয়ে দেবো? সেই সুযোগ
এখন আর নেই। তা হলে এদের জন্য
একটি দেশ প্রয়োজন। সেই সুযোগও নেই।
তার মানে এই দাঁড়াল, যেহেতু বিশেষ
করে জামায়াত-শিবিরের জন্য দেশ
বা দ্বীপ কোনোটাই
খুঁজে পাওয়া যাবে না, সেহেতু হুটু-
টুটসি কিংবা বসনিয়ার মুসলমানদের
মতো গায়ের জোরে নির্মূল করা হবে।
প্রতিদিনকার ক্রসফায়ারে হত্যার
সংখ্যা কতটুকু আসছে না, সর্বাধিক
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন সেটাই।
আমি কোনো দল করি না,
মানবতা আমার পুঁজি।
বাংলাদেশে মৃত্যু এখন এত সস্তা যে,
দুই পয়সায় কেনার মতো। মৃত্যু এখন এত সহজ
যে, বিষয়টি এমনÑ মরেছে তাতে কী,
আবার জীবিত হবে। মৃত্যু যে নিষ্ঠুর
এবং একমাত্র স্থায়ী ঠিকানা,
বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ার যেটাই বলি,
পাষণ্ডদের কথায় সেটা মনে হয় না।
যে নারী বিধবা হলো, যে মায়ের বুক
খালি হলো, যে সন্তান হারাল তার
অভিভাবক... পাষণ্ড বন্দুকধারীদের
কাছে প্রশÑ মৃত্যু কি পরিবর্তনযোগ্য?
হলে, চালিয়ে যান।
যারা খাজা খায়েরউদ্দিনের
মতো দালিলিকভাবে প্রমাণিত
যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দিলো, তার
সমালোচনা করব না? যারা ভুট্টো-
টিক্কা খানের রক্তরঞ্জিত
হাতে করমর্দন করেছিল, তাদের
নিন্দা করব না? যারা ভুট্টোর
শরীরে লেগে থাকা শহীদের রক্তের
চেহারা দেখেও
তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিল,
সমালোচনা করব না? যারাই সব
জানা সত্ত্বেও ভুট্টো-টিক্কা খানের
মতো যুদ্ধাপরাধীদের সাথে মিলিত
হতে তাদের দেশে যায়
কিংবা দেশে এনে ৭১-কে অপমান
করে, তারা ধোয়া তুলসিপাতা হলে,
আজ যাদেরকে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত
করা হলো, তাদের অপরাধটা কোথায়!
ইমেইল : farahmina@gmail.com
ওয়েবসাইট : www.minafara
Home »
» যুদ্ধাপরাদ by মিনা ফারাহ
যুদ্ধাপরাদ by মিনা ফারাহ
Written By Unknown on শুক্রবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ | ৬:৩১ AM
Related Articles
If you enjoyed this article just Click here Read Dhumketo ধূমকেতু, or subscribe to receive more great content just like it.
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন