রংপুর জেলার মিঠাপুকুর
উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত
ভাইসÑচেয়ারম্যান আবদুল বাসেত
মারজানসহ নিখোঁজ চার জনের সন্ধান
চান তাদের পরিবারে সদস্যরা।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক
সাংবাদ সম্মেলনে পুলিশের
হাতে আটক আবদুল বাসেত মারজানের
স্ত্রী রোকাইয়া খানম লুকি একই
এলাকার আল-আমীন, তার
স্ত্রী বিউটি বেগম ও তাদের
প্রতিবেশী মৌসুমীর সন্ধান
দাবি করেন। রোকাইয়া খানম
লুকি বলেন, ১৪ই জানুয়ারী মিঠাপুকুর
উপজেলায়
যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হ
ামলায় ৪জন নিহত হয়। এই
ঘটনাকে কেন্দ্র
করে যৌথবাহিনী সাধারণ মানুষের
বাড়িÑঘরে হামলা, ভাংচুর ও
গণহারে গ্রেপ্তার করে। ঘটনা স্থল
থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার
দূরে অবস্থিত সিটলি গ্রাম থেকে গত
১৫ই জানুয়ারী প্রকাশ্য
দিবালোকে হাজার হাজার মানুষের
উপস্থিতিতে যৌথবাহিনী আল-
আমিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার
স্ত্রী বিউটি বেগম ও
প্রতিবেশী মৌসুমী আল-
আমিনকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ
করলে তাদের সবাইকে আটক করে র্যাব
অফিসে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার পর
প্রায় ২২ দিন অতিবাহিত হচ্ছে, অথচ
তাদেরকে আদালতে সোপর্দ
করা হয়নি এবং পরিবারের কাছেও
ফেরৎ দেয়া হয়নি। তিনি বলেন,
৩১শেজানুয়ারী আমার
স্বামী মিঠাপুকুর উপজেলার ভাইস-
চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মারজান
পরিষদের কাজে ঢাকায় আসেন।
তিনি মোহাম্মদপুরের তাজমহল
রোডে এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান
করছিলেন। ১লা ফেব্রুয়ারী ভোর
রাতে সাদা পোশাকধারী ডিবি পুল
িশ বিনা ওয়ারেন্টে আমার
স্বামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
এরপর ৫ দিন অতিবাহিত
হচ্ছে তাকে এখনো কোন
আদালতে সোপর্দ
করা হয়নি এবং পরিবারের কাছেও
ফেরৎ দেয়া হয়নি। তিনি বলেন,
আমরা এ ঘটনার পর পুলিশ, ডিবি ও
র্যাবের সাথে বিভিন্ন সময়
বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেছি।
কিন্তু তাদের কোন সন্ধান
পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তারা যদি কোন অন্যায়
করে থাকে তাহলে তাদের
বিচারের জন্য আদালত আছে।
তারা কোন অন্যায়
করলে আমরা যে কোন
শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত
আছি। কিন্তু বিনা-বিচারে দিনের
পর দিন
তাদেরকে আটকিয়ে রাখা সম্পূর্ণ
অন্যায়, অমানবিক ও মানবাধিকার
পরিপন্থী। আমাদের পরিবারের
মাঝে সর্বদা অশান্তি, উদ্বেগ ও
উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। আমার শিশু
সন্তানরা তাদের পিতার জন্য
এবং আল-আমিন ও বিউটি বেগমের
সন্তানরা তাদের বাবা-মায়ের জন্য
সর্বদা কান্না-কাটি করছে। তাদের
খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ।
Posted 11 minutes ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: অপহরণ, মানবজমিন, রংপুর
5
FEB মিঠাপুকুরের ভাইস
চেয়ারম্যানসহ নিখোঁজ চার
জনের সন্ধান দাবি
0 Add a comment
‘অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো না পর্যন্ত
আন্দোলন চলতে থাকবে’ এমন মন্তব্য
করে বিএনপির চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়া বলেছেন,
“কোনো অনৈতিক চাপ বা ভীতির
মুখে আমি নত হব না।
যেকোনো পরিণতির জন্য
আমি তৈরি আছি।” বৃহস্পতিবার
বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক
বিবৃতিতে বিএনপির চেয়ারপারসন
এমনটা জানিয়ে সবাইকে আন্দোলনে
শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন,
“আমি পরিষ্কার ভাষায় আবারও
বলতে চাই, মানুষের জীবন
নিয়ে অপরাজনীতি আমরা করি না।
হত্যা ও লাশের রাজনীতির
সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এমন হীন ও নৃশংস
অপরাজনীতি আমরা কখনো করব না।
এখন যারা ক্ষমতা আঁকড়ে আছে, তারাই
অতীতে আন্দোলনের
নামে যাত্রীবাহী বাসে গান
পাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে ডজন
খানেক মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। লগি-
বৈঠার তাণ্ডবে মানুষ
হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে।
লাগাতার
হরতালে এসএসসি পরীক্ষা তিন মাস
পর্যন্ত পেছাতে বাধ্য করেছে।”
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন,
“অতীতের ধারাবাহিকতায় নিরপরাধ
মানুষকে নৃশংস পন্থায় হত্যাকাণ্ড
চালানো হচ্ছে। এর দায়
চাপিয়ে আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রচার
মাধ্যমে অপপ্রচার ও বিরোধী দলকে এ
সুযোগে দমন করার অপরাজনীতি ব্যর্থ
হবে। বাংলাদেশের মানুষ এত
বোকা নেই।”
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন,
“তার ছোট ছেলের
মৃত্যুতে তিনি শোকাবহ অবস্থার
মধ্যে রয়েছেন। এ বিপর্যয়ের ধকল
কাটিয়ে ওঠার আগেই তার
সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন,
“সুপরিকল্পিতভাবে সর্বমুখী চাপ ও
অনিরাপদ
পরিস্থিতি তৈরি করে তারা আমাক
ে জনগণ ও নেতা-
কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সচেষ্ট।
কিন্তু আমি সবাইকে পরিষ্কার ভাষায়
বলতে চাই, কোনো অনৈতিক চাপ
বা ভীতির মুখে আমি নত হব না,
ইনশা আল্লাহ।
যেকোনো পরিস্থিতি বা পরিণতির
জন্য আমি তৈরি আছি।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান
সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত
খালেদা জিয়ার
পুরো বিবৃতিটি এখানে তুলে ধরা হল
ো:
“সকলের অংশগ্রহণের
ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ
ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের
মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র
ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্দোলন
চলছে। আমরা দেশবাসীর আশা-
আকাঙ্খার প্রতিফলন
ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলনের ডাক
দিয়েছি। আমরা বলেছি,
একটি যৌক্তিক
পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত এ
আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দেশের
সাধারণ মানুষ এবং গণতন্ত্রের
সংগ্রামে অবতীর্ণ নেতা-
কর্মীরা অনেক কষ্ট সয়ে এবং বিচার
বহির্ভূত হত্যা, গুম, গুলি করে আহত করা,
অত্যাচার, নির্যাতন, লাঠিচার্জ,
কাঁদানে গ্যাস, পাইকারি গ্রেফতার,
পুলিশি রিমান্ড, বাড়িতে হামলার
মতো ভয়ংকর ত্রাসের রাজত্বের
মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রবল বাঁধা ও অত্যাচারের মুখেও যখন
যেখানেই সম্ভব হচ্ছে, মিছিল ও
প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন তারা।
আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন
হয়ে মুষ্টিমেয় স্তাবক ও
সুবিধাভোগীদের দ্বারা বেষ্টিত
সরকার জনগণের আন্দোলনে ভীত
হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল
হয়ে পড়েছে। এইসব বাহিনীর
নিয়ন্ত্রণভার দলবাজ ও বিতর্কিত
কতিপয় কর্মকর্তার
হাতে তুলে দিয়ে তাদের
মাধ্যমে জনগণ ও
প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলসমূহের ওপর
চরম জুলুম-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ
চালানো হচ্ছে। গত ৬
জানুয়ারি দেশব্যাপী অবরোধ
কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৩
জন বিরোধী দলীয় নেতা-
কর্মীকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
গুলি, সাজানো বন্দুকযুদ্ধ ও নৃশংস
অন্যান্য পন্থায় হত্যা করা হয়েছে।
গুলি করে ও অন্যান্য পন্থায় আহত
করা হযেছে শত শত নেতা-কর্মীকে।
আটকের পর নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য
নেতা-কর্মী। ১৭ হাজারের
বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার
করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায়
গ্রেফতারের ভয়ে ঘর-
বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন
কয়েক লক্ষ। অনেকের বাড়ি-ঘরে গভীর
রাতে হানা দিয়ে ভাঙচুর, লুঠতরাজ,
অগ্নিসংযোগের
পাশাপাশি মহিলাসহ পরিবারের
সদস্যদের নির্যাতন ও
হেনস্তা করা হচ্ছে।
এভাবে সারাদেশে এক ভীতিকর
পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
জনগণের ওপর এমন চরম জুলুম-অত্যাচারের
পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণভাবে স
রকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আন্দোলনরত
বিরোধী দল, জনগণ ও গণতান্ত্রিক
আন্দোলনের
বিরুদ্ধে একতরফা অপপ্রচার
চালানো হচ্ছে। সকলের মৌলিক-
মানবিক সমস্ত অধিকার
কেড়ে নেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন
ছাড়া প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের
স্বাভাবিক ও নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম
পরিচালনাও অসম্ভব
করে তোলা হয়েছে। অফিস বন্ধ
করে দেয়া, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন
করতে না দেয়া, এমনকি দলের
পক্ষে কেউ বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান
করলেই সেই নেতাকে আটক
করে মিথ্যা মামলায়
জড়িয়ে হেনস্তা করা বর্তমানে নিয়ম
িত রীতিতে পরিণত হয়েছে। অপর
দিকে রাজনৈতিক কর্মসূচির
নামে শাসক দলের
সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা এমনকি মার
ণাস্ত্র নিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর
ছত্রছায়ায়
প্রকাশ্যে মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।
তারা আমাদের দলের সিনিয়র
নেতাদের ওপর গুলি করছে। তাদের
গাড়ি, বাড়ি ও
অফিসে বোমা হামলা চালাচ্ছে।
আমরা বারবার বলে এসেছি, আমাদের
আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও
নিয়মতান্ত্রিক। এ আন্দোলন
আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই অগ্রসর
করে নেয়ার নীতিতে বিশ্বাস করি।
কিন্তু আমাদের আন্দোলন
চলাকালে যাত্রীবাহী ও অন্যান্য
যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরে ইতোম
ধ্যে নারী-শিশুসহ বেশ কয়েকজন
নাগরিকের জীবন
কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই শোচনীয়
মৃত্যুর পাশাপাশি বার্ণ
ইউনিটে ঝলসানো দেহ
নিয়ে অনেকে যন্ত্রনায় কাৎরাচ্ছেন।
নিরপরাধ মানুষের ওপর এই বীভৎস
আক্রমণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
যারা হতাহত হয়েছেন তাদের
প্রতি গভীর সহানুভূতি ও
সমবেদনা জানাই। এইসব হীন ও নৃশংস
হামলায় জড়িত প্রকৃত অপরধীদের
খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
দাবি আমরা আগেই জানিয়েছি, আজ
আবারো তার পুনরাবৃত্তি করছি।
তবে জীবন-বিনাশী এই সব ঘৃণ্য হামলার
ব্যাপারে ইতোমধ্যেই জনমনে গভীর
সন্দেহ ও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ
পরিপূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস
দিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রহরায়
এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে জবরদস্ত
ি করে শাসকগোষ্ঠী কিছু কিছু
যানবাহন রাস্তায় নামাচ্ছে। সেই সব
যানবাহনে কেমন করে ঘাতক বোমার
নৃশংস হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে,
তা এক জ্বলন্ত প্রশ্ন। দ্বিতীয়ত, এইসব
হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে আজ
পর্যন্ত তেমন
কাউকে হাতে নাতে ধরা সম্ভব হয়নি।
কোথাও কোথাও বোমা, গুলি,
আগ্নেয়াস্ত্রসহ শাসক দলের চেলা-
চামুণ্ডারা পুলিশের
হাতে ধরা পড়লেও উচ্চ পর্যায়ের
নির্দেশে তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার
ঘটনা ঘটছে। অথচ ঘটনার পরপরই
বিরোধী দল ও আন্দোলনের
বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনরা একতরফা প্রচারণ
া শুরু করে দিচ্ছে। কোনো তদন্ত ও তথ্য
প্রমান ছাড়াই আমিসহ বিরোধী দলের
শীর্ষস্থানীয় ও স্থানীয় নেতা-
কর্মীদের বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের
নির্দেশে পুলিশ মামলা দায়ের
করছে। কারারুদ্ধ ও
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক
নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও এসব ঘটনায়
মামলা হচ্ছে। বিভিন্ন
বিষয়ে আমাকে সহায়তাকারী অরাজ
নৈতিক ব্যক্তিবর্গ এমনকি প্রবীণ
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এমাজউদ্দিন
আহমদকে পর্যন্ত বোমাবাজির মামলায়
অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমাদের
পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, আমার
উপদেষ্টা ও দলের যুগ্ম-মহাসচিবসহ
সিনিয়র নেতাদেরকে পর্যন্ত
রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
আমি পরিষ্কার ভাষায়
আবারো বলতে চাই, মানুষের জীবন
নিয়ে অপরাজনীতি আমরা করিনা।
হত্যা ও লাশের রাজনীতির
সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এমন হীন ও নৃশংস
অপরাজনীতি আমরা কখনো করবো না।
এখন যারা ক্ষমতা আঁকড়ে আছে তারাই
অতীতে আন্দোলনের
নামে যাত্রীবাসে গান পাউডার
দিয়ে আগুন লাগিয়ে ডজন ডজন
মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। লগি-
বৈঠার তা-বে মানুষ
হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে।
একটার বদলে দশটা লাশ ফেলার
প্রকাশ্য নির্দেশ দিয়েছে।
অফিসগামী কর্মকর্তাদের প্রকাশ্য
রাজপথে বিবস্ত্র করেছে। সমুদ্রবন্দর অচল
করেছে। রেলস্টেশন
পুড়িয়ে দিয়েছে। লাগাতার
হরতালে এসএসসি পরীক্ষা ৩ মাস
পর্যন্ত পিছাতে বাধ্য করেছে। পবিত্র
রমজান মাসে পর্যন্ত হরতাল করেছে।
কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের মাথা ইট
দিয়ে থেতলে দিয়েছে। ইয়াসমিন
হত্যার প্রতিবাদের
নামে দিনাজপুরে পুলিশ ব্যারাক
জ্বালিয়ে দিয়েছে। তদানীন্তন
বিডিআর-এর পানি সরবরাহের লাইন
কেটে দিয়েছে। এখনকার নৃশংস
ঘটনাবলীও তাদের অতীত
কার্যকলাপের সঙ্গেই মিলে যায়।
কাজেই দেশবাসী মনে করেন যে,
আন্দোলন দমন ও বিরোধী দলের ওপর
জুলুম-নির্যাতনের
মাত্রা আরো বাড়াবার
উদ্দেশ্যে শাসকদলই
সুপরিকল্পিতভাবে এইসব সন্ত্রাসী ও
নাশকতামূলক হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে।
আমি এ ধরনের নৃশংস
অপরাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানাই।
আমরা মনে করি, অতীতের
ধারাবাহিকতায় নিরাপরাধ
মানুষকে নৃশংস পন্থায় হত্যা করে তার
দায়ভার চাপিয়ে আন্দোলনের
বিরুদ্ধে প্রচার-মাধ্যমে অপপ্রচার
এবং বিরোধী দলকে সেই সুযোগে দমন
করার অপরাজীতি ব্যর্থ
হবে ইনশাআল্লাহ্। বাংলাদেশের
মানুষ আর এত বোকা নেই।
দেশবাসী জানেন, সম্প্রতি আমার
কনিষ্ঠপুত্রের আকস্মিক অকাল
মৃত্যুতে আমি মানসিকভাবে এক চরম
শোকাবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।
এই বিপর্যয়ের ধকল কাটিয়ে ওঠার
আগেই আমার সঙ্গে কী ধরনের নিষ্ঠুর
আচরণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে তা-ও
সকলেই দেখছেন।
সুপরিকল্পিতভাবে সর্বমুখী চাপ ও
অনিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করে
তারা আমাকে জনগণ ও নেতা-
কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সচেষ্ট।
কিন্তু আমি সকলকে পরিষ্কার ভাষায়
বলতে চাই, কোনো অনৈতিক চাপ
বা ভীতির মুখে আমি নত
হবো না ইনশাআল্লাহ্। যে-
কোনো পরিস্থিতি বা পরিণতির জন্য
আমি তৈরি আছি।
আওয়ামী শাসকদের একদলীয় ধাঁচের
স্বৈরশাসন কায়েমের অপতৎপরতার
কারণে অতীতে দেশ জঙ্গীবাদের
কবলে পড়েছিল। আমরা তা দমন
করেছিলাম। আজ আবার তারা একই
কায়দায় উদারনৈতিক রাজনীতির
ধারাকে নিশ্চিহ্ন করতে যে চ-
নীতি অবলম্বন
করছে তাতে আবারো সেই একই
আশংকা দেখা দিয়েছে। এতে শুধু
বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
আমরা এই কঠিন বাস্তবতার
দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও
গণতান্ত্রিক বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ
করছি। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং জনগণের
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের
পক্ষে সোচ্চার হবার জন্য তাদের
প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
গত একটি বছর
ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আলাপ
আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের
পথে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ক্রমাগত
আহ্বান জানিয়েছি।
তারা কোনো কিছুতে কর্ণপাত
করেনি। বরং সীমাহীন অত্যাচার
উৎপীড়ন চালিয়ে গেছে।
অবৈধভাবে করায়ত্ব
করা রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখার
হীন অভিপ্রায়ে তারা কোনো রকম
সমঝোতায় রাজী হয়নি।
এমনকি নির্বাচনী প্রহসনের
মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার
কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটের
কথা তারা স্বীকার করতেও রাজী নয়।
তারা মনে করে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের
পথেই জনগণের আশা-
আকাঙ্খাকে দমিয়ে দেয়া সম্ভব।
আমাদের পিঠ
দেয়ালে ঠেকে গেছে। আন্দোলন
ছাড়া দেশবাসীর সামনে আর
কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি। তাই
ক্ষমতার জন্য নয়, গণতন্ত্র, দেশবাসীর
ভোটাধিকার ও হৃত মৌলিক মানবিক
অধিকার ফিরিয়ে আনতে, শান্তি,
নিরাপত্তা, আইনের শাসন ও সুবিচার
নিশ্চিত করতে আমাদের এ আন্দোলন
অভীষ্ট লক্ষে না পৌঁছা পর্যন্ত
চলতে থাকবে। আমি এ
আন্দোলনে সকলকে শরীক
হতে আবারো উদাত্ত আহ্বান
জানাচ্ছি।
একদলীয় বাকশালী স্বৈরশাসনের
অবসানের পটভূমিতে শহীদ
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের
মানুষকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও অপহৃত
অধিকার সমূহ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
আমরাই স্বৈরশাসনের অবসান
ঘটিয়ে ‘৯০এর ঐতিহাসিক
গণঅভ্যুত্থানের পথে গনতন্ত্র
পুণপ্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আজ
আবারো আমরা গণতন্ত্র ও মানুষের
অধিকার ফিরিয়ে আনার
সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছি। ন্যায়ের এ
সংগ্রাম অবশ্যই অভীষ্ট
লক্ষ্যে পৌঁছাবে ইনশাআল্লাহ্।
তারিখঃ ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
Posted 2 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আন্দোলন, খালেদা জিয়া,
বিএনপি, রাজনীতি
5
FEB চাপে আমি নত হব না:
খালেদা জিয়া
0 Add a comment
(ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের বার্ন
ইউনিটে চলছে বাসে পেট্রলবোমার
আগুনে দগ্ধ হওয়া রোগীদের
নিয়ে মিউজিক ভিডিও তৈরির কাজ।
পর্যবেক্ষণ কক্ষে যন্ত্রণায় কাতর একজন
রোগীর পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন
মডেল। তাঁদের দাবি,
বিটিভিকে সরবরাহের জন্য এই
ভিডিওচিত্র ধারণ করা হচ্ছে। ছবি:
মনিরুল আলম) গ্রামের মেয়েদের
ঢঙে পুরোনো একটি চেক
সুতি শাড়ি পরেছেন তিনি।
পায়ে সামান্য উঁচু হিলের জুতো।
চেহারা সুরত আর
শাড়িতে তাঁকে মেলানো যাচ্ছিল
না। এ জন্যই নজর কাড়লেন তিনি। তাঁর
পাশেই একজন চেঁচালেন, ‘অ্যাই
গ্লিসারিন কই?
তাড়াতাড়ি গ্লিসারিন লাগান।’
সেই নারী চোখে গ্লিসারিন
লাগানোর পর চালু হলো ক্যামেরা। শুরু
হলো দৃশ্য ধারণ। আশপাশে কিছু লোকও
জমে গেল। এভাবে খানিকক্ষণ চলল
শুটিং। তারপর তাঁরা বের
হয়ে গেলেন। এটি একটি গানের দৃশ্য।
তবে লোকেশন নয়নাভিরাম
দৃশ্যে ভরা আহামরি কোনো জায়গা নয়
, ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন
ইউনিট। আজ
দুপুরে সেখানে অবজারভেশন
ওয়ার্ডে এই গানের দৃশ্য ধারণ করা হয়।
গ্রামীণ নারীর
বেশধারী পেট্রলবোমায় দগ্ধ
হয়ে চিকিৎসাধীন একজনের মাথায়
হাত রেখে শট দেন। এই রোগী গতকাল
বুধবার
গাজীপুরে বাসে পেট্রলবোমায় দগ্ধ
হয়েছেন। সেই রোগী বা তাঁর
আত্মীয়স্বজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই
শুটিং শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন
গণমাধ্যমের
ক্যামেরা এবং সাংবাদিকেরাও
ব্যস্ত ছিলেন পেট্রলবোমায় দগ্ধ
লোকজনকে নিয়ে। তাই
বিষয়টি অনেকেরই
তেমনভাবে চোখে পড়েনি।
শুটিং যিনি পরিচালনা করছিলেন
তিনি নিজেকে রফিকুল ইসলাম বুলবুল
বলে পরিচয় দেন। তাঁর পরিচয়
জানতে চাইলে প্রথমে তিনি নিজেক
ে সাংবাদিক দাবি করেন। কোন
পত্রিকা?
জানতে চাইলে তিনি বাংলাদেশ
টেলিভিশনের (বিটিভি) জন্য কাজ
করছেন বলে দাবি করেন।
তাঁকে বলা হলো, বিটিভির
তো নিজস্ব লোকবল থাকে,
এভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ
করছেন কেন? তখন তিনি বলেন, ‘অই
তো হলো। আমি পারসোনালি কাজ
করছি, তারপর বিটিভিকে দেব।’
রফিকুল ইসলামের
দেওয়া ভিজিটিং কার্ডে ইংরেজি
তে প্রেস লেখা। রাজধানীর ২৬
মণিপুরীপাড়া ঠিকানায় পত্রিকার
নাম হিসেবে দৈনিক এই
বাংলা (সারা বাংলার মানুষের
কথা), সাপ্তাহিক দূর্নীতি রিপোর্ট
এবং ইংরেজিতে উইকলি ফ্রাইডে রি
ভিউ লেখা কার্ডে। সাপ্তাহিকের
নামটাও (দুর্নীতি) ভুল
বানানে লেখা। আর রফিকুল ইসলামের
পদবি লেখা রয়েছে সিনিয়র এডিটর/
অথর অ্যান্ড ফিল্ম ডিরেক্টর। তিনি যখন
শুটিং নিয়ে ব্যস্ত, তখন অন্য এক রোগীর
এক স্বজন এসে জানতে চান,
তিনি সরকারের
কোনো মন্ত্রী কি না? বিটিভির নাম
ভাঙিয়ে শুটিং হলেও
বিটিভি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অবগত নয়।
এ
ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ
করা হলে বিটিভির উপমহাপরিচালক
(অনুষ্ঠান) বাহার উদ্দিন প্রথম
আলোকে বলেন,
‘বিটিভি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ
প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে হরতাল
অবরোধের শিকার রোগীদের
নিয়ে ব্যবসা করার জন্য কেউ এ
কাজটি করছে। এই ব্যক্তি বা তাঁর
প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিটিভির
কোনো সম্পর্ক নেই। বিটিভির
প্যাকেজ নীতির আওতায় কেউ কিছু
দিতে চাইলে তাঁদেরকে বিভিন্ন
প্রক্রিয়া বা ধাপ পার হতে হয়। হুট
করে কেউ বিটিভিকে কিছু
দিতে পারে না।’ জাতীয় বার্ন
অ্যান্ড প্লাস্টিক
সার্জারি ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক
উপদেষ্টা সামন্ত লাল সেন প্রথম
আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের শুটিংয়ের
জন্য আমার কাছ
থেকে কোনো অনুমতি নিতে কেউ
আসেনি।’ নাম প্রকাশ না করার
শর্তে বার্ন ইউনিটের একজন প্রশাসনিক
কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বার্ন
ইউনিটে রোগীদের
নিয়ে শুটিং করার অনুমতি দেওয়ার
তো প্রশ্নই আসে না।
Posted 4 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: জাতীয়, প্রথম আলো,
মানসুরা হোসাইন, স্বাস্থ্য ও
চিকিৎসা
5
FEB বার্ন ইউনিটে শুটিং! by
মানসুরা হোসাইন
0 Add a comment
দেশের আইন-
শৃঙ্খলা বাহিনী রাজনীতিবিদদের
দ্বারা অনেক আগে থেকেই
নিয়ন্ত্রিত৷ রাজনৈতিক নেতাদের
ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পরিচালিত হয় প্রশাসন৷
ফলে পুলিশ-ব়্যাব কার
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বা নেবে না,
তাও ঠিক করেন সরকার পক্ষের
রাজনীতিকরা৷
বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সব
সময়ই সরকারের হাতিয়ার
হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে আইন-
শৃঙ্খলা বাহিনী৷ তারা সব সময়ই
বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন
চালিয়েছে, মূলত
সরকারকে খুশি করতে৷ এত কিছুর পরও
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের কখনও
রাজনৈতিক বক্তব্য
দিতে শোনা যায়নি৷ নিরবে কাজ
করলেও মুখ খুলে কিছু বলেননি তাঁরা৷
তবে এখন শুধু কাজ নয়,
রাজনীতিবিদদের মতো বক্তব্যও
দিচ্ছেন তাঁরা৷ সরকার কতদিন ক্ষমতায়
থাকবে, বিরোধী দল থাকবে কিনা –
তাও বলছেন পুলিশ-ব়্যাব প্রধানরা৷
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক
(আইজিপি) নুরুল
হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ১৯৭৯
সালের
সরকারি কর্মচারী আইনে বলা আছে,
কে কতটুকু কথা বলতে পারবেন৷
আইনে বাইরে যাওয়ার
কারো কোনো সুযোগ নেই৷ যদি কেউ
বলেন তাহলে তিনি তা নিজ
দায়িত্বে বলবেন৷ তাই এখনকার ব়্যাব ও
পুলিশ প্রধান যা বলছেন,
তা তাঁরা নিজ দায়িত্বেই বলছেন৷
তবে তাঁরা যে সীমা অতিক্রম
করে ফেলছেন, তা বোঝাই যাচ্ছে৷
তাঁদের উচিত রাজনৈতিক
বিষয়ে কোনো বক্তব্য না দেয়া৷
তাঁরা জনগণের ইচ্ছ-অনিচ্ছার প্রতিফলন
ঘটাবেন৷ কিন্তু এখন
যা ঘটছে তা দুঃখজনক৷
তিনি বলেন, আমি যখন পুলিশ প্রধান
ছিলাম তখন রাজনৈতিক
সংস্কৃতি কিন্তু এরচেয়ে খুব
একটা ভালো ছিল না৷ তারপরও
আমি বা আমার আগে-
পরে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কিন্তু
রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেন না৷
বুধবার কুমিল্লায় নাশকতা প্রতিরোধ ও
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন বিষয়ক
মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির
বক্তব্যে ব়্যাব-এর মহাপরিচালক
বেনজির আহমেদ বলেন, খুন করে ক্ষমতায়
যাবেন? শেইম, শেইম৷ আপনারা নিরীহ
ও শান্তিপ্রিয় মানুষ খুন করে ক্ষমতায়
যেতে চান৷
আমরা সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের
সমাজ থেকে বিদায় করবো৷ তাদের
বিরুদ্ধে একাত্তরের পর আরেকবার
একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ করতে হবে৷ সেই
যুদ্ধে আপনারা সাধারণ জনগণ আমাদের
পাশে থাকবেন৷
চৌদ্দগ্রামে যারা যাত্রীবাহী বাস
ে পেট্রোল
বোমা মেরে সাতজনকে হত্যা করেছে
, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিশোধ
নেওয়া হবে৷ তারা (হামলাকারী)
পাকিস্তানের দোসর৷
একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-
মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম
বলেন, একটি লাশ পড়লে এর
পরিবর্তে দুটি লাশ ফেলে দেয়ার
ক্ষমতা পুলিশের আছে৷ তারপরও অবশ্য
মহাসড়ক
পাহারা দিতে তিনি স্থানীয়
জনগণকে অনুরোধ জানান৷
এর একদিন আগে মঙ্গলবার পুলিশের
মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম
শহীদুল হক গাবতলিতে শ্রমিকদের
সঙ্গে এক আলোচনা সভায় বলেন,
সন্ত্রাসীর কাছে সরকার হার
মানবে না৷ সরকার যদি এদের
কাছে আত্মসমর্পণ করে,
তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে৷ আর
তারপর আওয়ামী লীগও একই কাজ করবে৷
সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের
উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ
ডয়চে ভেলেকে বলেন, পুলিশ বা ব়্যাব
প্রধান যে ভাষায় কথা বলছেন,
সোটা প্রজাতন্ত্রের
কোনো কর্মচারীর ভাষা নয়৷
তাঁরা আওয়ামী লীগ নেতাদের
মতো করে কথা বলছেন৷
এটা একেবারেই ঠিক নয়৷
রাজনীতি আর প্রশাসন এক
হয়ে গেলে দেশের সামনে ভয়াবহ
খারাপ উদাহরণ হয়ে যাবে৷ কিছুদিন
পরে দেখা যাবে সচিবরাও
রাজনীতির ভাষায় কথা বলছেন৷
তাতে আমলাতন্ত্র বলে কিছু
থাকবে না৷ সাধারণ মানুষের
ন্যায়বিচার পাওয়ার পর রুদ্ধ
হয়ে যাবে৷
তাই তিনি পুলিশ ও ব়্যাব প্রধানদের
রাজনীতির ভাষা ছেড়ে সাধারণ
মানুষের পক্ষে কথা বলার অনুরোধ
করেন৷ হাফিজ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন
আগে ব়্যাব মহাপরিচালক রংপুরে এক
অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ২০১৯ সাল
পর্যন্ত সরকার ক্ষমতায় থাকবে৷
এটা কি তাঁর বলার কথা? কে কতদিন
ক্ষমতায়
থাকবে সেটা রাজনীতিবিদরাই
ঠিক করবেন৷ তিনি কেন এটা করছেন?
হাফিজ উদ্দিন বলেন,
রাজনীতিবিদরা এখন যে আচরণ
করছেন, তা হয়ত এক সময় বদলে ফেলবেন৷
কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর
কাঠামো একবার ধ্বংস
হয়ে গেলে সেটা কিন্তু আর ঠিক
করা যাবে না৷ ফলে সরকারের
ঊর্ধতনদের উচিত পুলিশ ও ব়্যাব
প্রধানকে সতর্ক করা৷
না হলে সামনে আরো খারাপ সময়
আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে৷
Posted 4 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: Lead, মানবজমিন, রাজনীতি
5
FEB ‘রাজনীতির
বেড়াজালে আইন-
শৃঙ্খলা বাহিনী’ -
ডয়চে ভেলে
0 Add a comment
বিশ দলীয় জোটের
ডাকা টানা অবরোধ ও
থেমে থেমে হরতালে বিপর্যস্ত
দেশের যোগাযোগব্যবস্থা। বিপর্যস্ত
অর্থনীতি। তারচেয়েও মর্মান্তিক
হলোÑ একের পর এক
পেট্রলবোমা হামলায়
বাসযাত্রীরা পুড়ে মারা যাচ্ছেন,
পঙ্গু হচ্ছেন। এ ধরনের সর্বশেষ
ঘটনা হচ্ছে কুমিল্লায়
বাসে পেট্রলবোমায় সাতজন নিহত ও
২০ জনের মতো দগ্ধ হওয়া। এ ঘটনা যেমন
মর্মান্তিক, তেমনি বর্বরোচিত। এ
ধরনের ঘটনা কিছুতেই
মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের ঘটনার
নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের
নেই। কোনো বিবেকবান মানুষই এ
ধরনের রাজনৈতিক
সহিংসতা মেনে নিতে পারে না।
সবার প্রত্যাশা, অবিলম্বে এর অবসান
হওয়া দরকার। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার
হলো, এর অবসানের
কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাচ্ছ
ি না। কারণ,
বিষয়টি নিয়ে চলছে একধরনের
রাজনৈতিক ব্লেইম গেইম। সরকারপক্ষ
জোর প্রচারণায় ব্যস্ত ২০ দলীয় জোট
মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। অপর দিকে,
২০ দলীয় জোটের কথা হচ্ছে, সরকার
বিরোধী জোটের চলমান ভোটের
অধিকার আন্দোলনকে স্তিমিত
করতে এ ধরনের অমানবিক
ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধী জোটের ওপর
দোষ চাপানোর অপপ্রয়াস
চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পারস্পরিক
বিপ্রতীপ দাবির
মধ্যে অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে দেশের
মানুষ। মানুষ
জানতে পারছে না আসলে এর
পেছনে সত্যিকার অর্থে কারা।
কারা এর জন্য দায়ী। তবে জনগণের
প্রত্যাশা, এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড
বন্ধ হোক। এ জন্য
প্রকৃতপক্ষে যারা দায়ী, তাদের
আইনের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তি দেয়া হোক। কিন্তু দেশের
মানুষ দেখছে, যারা যানবাহনে আগুন
দিচ্ছে, তাদের
কাউকে হাতেনাতে ধরে বিচারের
মুখোমুখি করতে পুরোপুরি ব্যর্থ
হচ্ছে প্রশাসন। অপর দিকে, শুধু সন্দেহের
বশে কিংবা রাজনৈতিক
উদ্দেশ্যে বিরোধী জোটের হাজার
হাজার রাজনৈতিক
নেতাকর্মীকে আটক করছে, তাদের
বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে।
আমরা মনে করি, এ পথ সমাধানের পথ
নয়। রাজনৈতিক কারণে নিরপরাধ
মানুষ যেমন হয়রানির শিকার
হতে পারে না, তেমনি প্রকৃত
দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করাও
জরুরি। কুমিল্লায় সর্বসাম্প্রতিক
পেট্রলবোমায় সাতজন পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায়
২০ দলীয় জোট দোষীদের বিচারের
দাবি জানিয়েছে। অপর দিকে, এ
ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেগম
খালেদা জিয়াকে দায়ী করেছেন
বর্তমান সরকারের এমপিরা। একই
সাথে তাকে গ্রেফতার ও দ্রুত
বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান
রেখে প্রয়োজনে ভারতের
বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনে প্রণীত
‘টাডা’ আইনের মতো কঠোর নতুন আইন
প্রণয়নের জন্য সরকারের
কাছে দাবি জানানো হয়। এই ব্লেইম
গেইমে এ সমস্যা সমাধান নয়।
এমনি পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ
মানুষ সংলাপ-সমঝোতার জন্য
আকুতি জানাচ্ছে। কারণ, মানুষ আজ
কাটাচ্ছে দুঃসহ এক সময়। অব্যাহত
হরতাল-অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ,
পেট্রলবোমা, ক্রসফায়ার কিছুই
থামছে না। মরছে মানুষ; কেউ বোমা,
কেউ গুলিতে। বার্ন ইউনিটে আর্তনাদ।
আহাজারি ক্রসফায়ারে নিহত
স্বজনদের। অচল অর্থনীতির চাকা।
চলছে ব্লেইম গেইম।
এমনি পরিস্থিতিতে ব্লেইম গেইম
ছেড়ে সংলাপ-সমঝোতায় বসতে হবে।
রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের এটাই
শান্তিপূর্ণ পথ।
আরেকটি প্রশ্ন, কুমিল্লায়
পেট্রলবোমা হামলার শিকার ‘আইকন
পরিবহন’ নামে বাসগুলোর কক্সবাজার
রুটে চলাচলের অনুমোদন নেই। এ
ছাড়া কক্সবাজারে পর্যটক
পরিবহনে পুলিশ-বিজিবির
নিরাপত্তাব্যবস্থার বাইরেই চলাচল
করছিল এ পরিবহন। কক্সবাজারে তাদের
সুনির্দিষ্ট কোনো কাউন্টার নেই। নেই
কোনো সুনির্দিষ্ট বুকিংম্যানও।
কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাওয়ার
পথে দুর্বৃত্তদের পেট্রলবোমা হামলার
শিকার হওয়ার পর এই পরিবহন নিয়ে আজ
কক্সবাজারের সর্বত্র দিনভর
আলোচনা চলে। ঘটনা ঘটার
আগে কক্সবাজারের কেউ এ পরিবহনের
নামও শোনেনি। এ ছাড়া পর্যটক
পরিবহনে প্রশাসনের
নিরাপত্তাব্যবস্থার
বাইরে গিয়ে আইকন পরিবহন কেন
চলাচল করছিল, তা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন
উঠেছে। কেউ কেউ এটাকে রহস্যজনকও
বলছেন।
Posted 6 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আন্দোলন, নয়া দিগন্ত,
রাজনীতি, সম্পাদকীয়, হরতাল-অবরোধ
5
FEB অচল মহাসড়ক, পুড়ছে মানুষ-
ব্লেইম গেইম এর সমাধান নয়
0 Add a comment
২০১০ সালে মিসরের পার্লামেন্ট
নির্বাচনের পর ‘ইজিপ্টস রিয়েল স্টেট
অব ইমার্জেন্সি ইজ ইটস রিপ্রেসড
ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে এক
লেখা লিখেছিলেন দেশটির
নোবেল (শান্তি) পুরস্কার
বিজয়ী মোহাম্মেদ এল বারাদি।
মিসরে আরব বসন্তের ছোঁয়া লাগার
ঠিক আগে আগে। লেখাটির শুরুর
লাইনটি হচ্ছে ‘মিসরে আরও
একটি প্রতারণামূলক ও প্রহসনের
নির্বাচন হয়ে গেল।’ আর মূল বিষয় হচ্ছে,
তাত্ত্বিকভাবে মিসরের রাজনৈতিক
ব্যবস্থায় কী আছে আর বাস্তবে কী হয়
বা হচ্ছে। হোসনি মোবারক
তখনো ক্ষমতায়। এল
বারাদি যা লিখেছেন
তা অনেকটা এ রকম,
তাত্ত্বিকভাবে মিসরে একটি সংবিধ
ান ও আইন কার্যকর
রয়েছে এবং সেখানে জনগণের ইচ্ছার
প্রতিফলন রয়েছে, কিন্তু
বাস্তবে ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছাই সব।
হোসনি মোবারক একজন সম্রাটের
মতো ক্ষমতা ভোগ করেন।
তাত্ত্বিকভাবে মিসরে বহুদলীয়
ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু
বাস্তবে কোনো দল গঠন
করতে হলে এমন একটি কমিটির কাছ
থেকে অনুমতি নিতে হয়, যে কমিটির
নিয়ন্ত্রক হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল।
এল বারাদি আরও লিখেছেন,
মিসরে তাত্ত্বিকভাবে একজন
নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রয়েছেন,
কিন্তু গত ৫০ বছরেরও
বেশি সময়ে দেশটি পেয়েছে মাত্র
তিনজন শাসককে। তিনজনের শাসন
পদ্ধতি ও
দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো পার্থক্য
রয়েছে, কিন্তু তাঁরা সবাই
কর্তৃত্ববাদী ও নিপীড়নমূলক
রাজনৈতিক ব্যবস্থারই নিয়ন্ত্রক
ছিলেন। ২৯ বছর ধরে মিসর
দেশটি একটি ‘জরুরি অবস্থার’ মধ্য
দিয়ে যাচ্ছে। জরুরি অবস্থার এই অস্ত্র
ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট
সংবিধানে দেওয়া জনগণের
মৌলিক অধিকারকে সহজেই স্থগিত
করতে পারেন। এবং এই অস্ত্রের যথেচ্ছ
ব্যবহার হয়েছে। কেউ ভিন্নমত
প্রকাশের সাহস দেখালে তা ব্যবহার
করে তাকে আটক, নির্যাতন
বা কখনো হত্যাও করা হয়েছে। এ
ধরনের আরও অনেক প্রসঙ্গই এল
বারাদি তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ
করেছেন,
যেগুলো দেশটিতে তাত্ত্বিকভাবে
কার্যকর আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই।
পাঠকদের অনেকেরই
এটা জানা যে মিসরে ২০১০ সালের
এই ‘প্রতারণাপূর্ণ ও প্রহসনের’
নির্বাচনের মাস খানেক পর ২০১১
সালের জানুয়ারি মাসেই শুরু হয়েছিল
তাহরির স্কয়ারের জাগরণ।
দীর্ঘদিনের ‘কর্তৃত্ববাদী ও
নিপীড়নমূলক’ শাসন যে ধরনের
রাজনৈতিক শক্তি বিকাশের সুযোগ
ও পরিস্থিতি তৈরি করে, মিসরের
ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
এখানে তলে তলে শক্তিশালী হয়ে ওঠ
ে মুসলিম ব্রাদারহুড। মিসরের জনগণ ও
তরুণদের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা ও
গণজাগরণের প্রথম ফসলটি মুসলিম
ব্রাদারহুড নিজেদের
ঘরে তুলতে পেরেছিল।
৮০০-রও
বেশি গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীর
মৃত্যু এবং দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়
ধরে চলা এই গণ-আন্দোলন স্বৈরশাসক
মোবারকের পতন ঘটায়। এরপর
যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়,
সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন
মুসলিম ব্রাদারহুডের মোহাম্মদ মুরসি।
কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল
হিসেবে যে নির্বাচন হলো,
সেখানে বিজয়ী হয়ে নিজেদের
মুখোশ খুলে ফেলতে খুব সময়
নেয়নি মুসলিম ব্রাদারহুড। ক্ষমতার এক
বছর পূর্তি না হতেই শুরু হয় মুরসির
পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন।
বিপ্লবের ফসল এককভাবে নিজেদের
ঘরে তোলা, পুরোনো কায়দায়
ক্ষমতা কুক্ষিগত করা এবং ইসলামি আইন
চালুর চেষ্টার
প্রতিবাদে মিসরে উদারনৈতিক,
সেক্যুলার ও বাম ধারার রাজনৈতিক
দলগুলো আন্দোলন শুরু করে। এর
সুযোগে সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্
ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ক্ষমতার
পালাবদলে মিসরের শাসনক্ষমতা এখন
সাবেক সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট
আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির হাতে।
অনেকটা মোবারক স্টাইলের সেই
পুরোনো কাঠামোতেই আবার
ফিরে গেছে মিসর।
মিসরের গণতন্ত্রের
বারোটা বেজে আছে শুরু থেকেই।
গণতন্ত্রের ঘড়ি সেখানে সেই
বারোটা বাজা অবস্থাতেই অচল
হয়ে আছে। তাহরির স্কয়ারের
গণজাগরণ, আন্দোলন বা বিপ্লব যা-ই
বলা হোক না কেন, কিছুই তাকে সচল
করতে পারল না! মুরসির ব্রাদারহুড
মিসরকে ‘ধর্মীয় রাষ্ট্র
বানিয়ে চরিত্র বদলে দেওয়ার’
যে চেষ্টা শুরু করেছিল,
তা রুখতে সিসি দিনে দিনে আরও
কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছেন। এর
প্রতিক্রিয়ায় সরকারের
বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের পথই
ধরেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। গত ২৫
জানুয়ারি তাহরির স্কয়ার
গণজাগরণের চার বছর পূর্তির
দিনে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সহিংস
বিক্ষোভকারীদের
মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছে ২৫ জনেরও
বেশি।
এমন পরিস্থিতিতে এখন
বিভ্রান্তি আর চরম হতাশার
মধ্যে পড়েছেন মিসরের সেই তরুণেরা,
যাঁরা মুসলিম ব্রাদারহুডের ‘ইসলামি’
বা পুরোনো কায়দায় গণতন্ত্রের
নামে কর্তৃত্ববাদী ও নিপীড়নমূলক
শাসন—কোনোটাই দেখতে চান
না। তাহরির স্কয়ার জাগরণের চার বছর
পূর্তির ঠিক আগেই যখন ক্ষমতাচ্যুত
প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ও
তাঁর দুই ছেলে আদালতের
সিদ্ধান্তে ছাড়া পান, তখন এই
তরুণদের বা দেশটির
গণতন্ত্রকামী জনগণের
হতাশা কোথায়
গিয়ে ঠেকতে পারে,
তা আমরা অনুমান করতে পারি।
বাংলাদেশ মিসর নয়।
এখানে গণতন্ত্রের
ঘড়ি হয়তো থেমে যায়নি,
তবে গণতন্ত্রের
বারোটা বাজানোর সব উদ্যোগ-
আয়োজনই চলছে। এর লক্ষণগুলোও
দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এক বছর
হলো আমাদের
দেশে তাত্ত্বিকভাবে একটি ‘নির্বা
চন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু
একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন
বলতে যা বোঝায়, তার ধারেকাছ
দিয়েও যায়নি ২০১৪ সালের ৫
জানুয়ারির নির্বাচন।
তাত্ত্বিকভাবে দেশে সংসদ
আছে এবং বিরোধী দলও আছে।
কিন্তু বাস্তবে এটা সরকারি দল ও
তাদের সহযোগীদের মিলমিশের এক
সংসদ।
এখানে সাংবিধানিকভাবে বহুদলীয়
গণতন্ত্র কায়েম
রয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর
সভা-সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে।
কিন্তু
বাস্তবে বিরোধী রাজনৈতিক
শক্তি হিসেবে যারা বিবেচিত,
তাদের সভা-সমাবেশ করার
কোনো অধিকার নেই।
তাত্ত্বিকভাবে যে সরকারটি ‘নির্ব
াচিত’ ও ‘গণতান্ত্রিক’
হিসেবে বিবেচিত,
সেটি বাস্তবে কতটা কর্তৃত্ববাদী হয়ে
উঠছে তা এখন সবার কাছেই দৃশ্যমান
হয়ে উঠেছে। সরকারের
আচরণে মনে হচ্ছে তারা তা লুকাতেও
চাইছে না। আলোচনা, সংলাপ
বা সমঝোতা—এসব
কোনো কিছুতেই সরকারের সায়
নেই।
আর যাদের
আমরা বিরোধী রাজনৈতিক
শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছি, সেই
বিএনপি বা তাদের জোট এসব কী
করছে! সরকারের
সঙ্গে না পেরে জনগণকে মাঠে নামি
য়ে গণ-আন্দোলন করার
শক্তি হারিয়ে বা কৌশল
না নিয়ে সাধারণ
মানুষকে তারা তাদের
শিকারে পরিণত করছে। তারা এখন
মানুষ
পুড়িয়ে মারছে এবং এভাবে সরকারের
ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে।
এটা সাধারণ গণ-আন্দোলন
বা সহিংস রাজনৈতিক আন্দোলনও
নয়, এটা স্রেফ সন্ত্রাস।
দুনিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী দলগুলো এ
ধরনের কাজ করে।
বিএনপি যদি সরকারের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’
ঘোষণাও করে, তার পরও
তো তারা মানুষ পুড়িয়ে মারার
মতো কাজ করতে পারে না। যুদ্ধেরও
একটা নিয়ম আছে, কিছু বিষয়
মেনে চলতে হয়। বেসামরিক ও
সাধারণ নাগরিকেরা যুদ্ধের সময়ও
ছাড় পায়। আর এখানে তারাই প্রধান
শিকার। এটা এখন পরিষ্কার যে ‘গণতন্ত্র
উদ্ধার’ বিএনপির লক্ষ্য নয়,
তারা আসলে অন্য কিছু চায়। এ ধরনের
সন্ত্রাস আর মানুষ পোড়ানোর
কৌশল ধরে রাখার
মানে হচ্ছে সরকারকে আরও কঠোর ও
কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে এবং এর
পক্ষে যুক্তি তৈরির সুযোগ
করে দেওয়া। বিএনপি কি সেটাই
চাইছে?
মিসরের জনগণের
মতো বাংলাদেশের জনগণও এখন এক
চরম হতাশা ও বিভ্রান্তির
মধ্যে পড়েছে। জনগণ গণতন্ত্র চায়, চায়
সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন।
তারা সরকারের কাছ থেকে যেমন
গণতান্ত্রিক আচরণ আশা করে,
তেমনি দেশে শাস্তি–
শৃঙ্খলা বাজায় থাকুক, সেটাও চায়।
তারা চায়
যেকোনো রাজনৈতিক
সমস্যা আলাপ-আলোচনার মধ্য
দিয়ে মিটমাট হোক। সরকার এসব
বিষয় বিবেচনায় নিচ্ছে না।
অন্যদিকে বিরোধীরা রাজনীতি ব
াদ দিয়ে সন্ত্রাস ও মানুষ
পোড়ানোর যে বর্বরতা শুরু করেছে,
তাতে দুটি পক্ষের কোনোটির
প্রতিই নিঃশর্ত সমর্থন বা পক্ষপাত
দেখানোর সুযোগ আছে কি?
গত এক মাসের অবরোধ কর্মসূচি ৬০
জনের জীবন নিয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ জন
মরেছেন পেট্রলবোমা, ককটেল ও
আগুনে পুড়ে। কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রামে গত সোমবার রাতের
বাসে পেট্রলবোমার ঘটনা প্রমাণ
করেছে যে এসব
বর্বরতা নিয়ে দেশবাসীর বিলাপ ও
হাহাকার বিএনপি ও তাদের
সহযোগীদের নরম করতে পারেনি।
অবরোধ অব্যাহত থাকা মানে এসব
বর্বরতা চলতেই থাকা। সরকার যে আরও
কঠোর হওয়ার পথ
ধরবে সেটা পরিষ্কার, শেষ পর্যন্ত
চূড়ান্ত কোনো পদক্ষেপই
হয়তো নেবে। এতে কোন পক্ষ
কীভাবে লাভবান হবে, সেই হিসাব–
নিকাশ হয়তো তাদের কাছে আছে,
তবে গণতন্ত্রের
যে বারোটা বাজবে,
সেটা নিশ্চিত। দুই পক্ষই যেন সেই
সময়টির জন্যই অপেক্ষা করছে!
এ কে এম জাকারিয়া: সাংবাদিক।
akmzakaria@gmail.com
Posted 6 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আলোচনা, উপ-সম্পাদকীয়, এ
কে এম জাকারিয়া, প্রথম আলো,
মতামত, রাজনীতি
5
FEB রাজনীতি- গণতন্ত্রের
বারোটা বাজতে কত
বাকি? by এ কে এম
জাকারিয়া
0 Add a comment
৩ ফেব্রুয়ারি বেলা সোয়া ১১টা,
বেশ
কয়েকটি টিভি চ্যানেলে ঢাকা মেড
িকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন
ইউনিটের চিকিৎসকদের সংবাদ
সম্মেলন। চিকিৎসাধীন দগ্ধ
রোগীদের অবস্থার বিবরণী। বার্ন
কারও ২০ শতাংশ, কারও ৪০ শতাংশ।
নাম, বয়স, কোথা থেকে এসেছেন—
এসব তথ্য। মোট
চিকিৎসা নিতে এসেছেন ১১১ জন।
হাসপাতালে এখন আছেন ৬১ জন। ৩
তারিখ ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম
রোডে বাসে পেট্রলবোমা হামলা
য় ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন সাতজন।
সেখান থেকে আরও ছয়জন
আগুনে পোড়া রোগী সকালে ঢাক
া মেডিকেলে এসেছেন। চিকিৎসক
বিভিন্ন হিসাব দিচ্ছেন। আমাদের
বীভৎসতার হিসাব। আমাদের
নির্মমতার হিসাব। আর
সরাসরি টিভিতে সম্প্রচার
করা হচ্ছিল এসব খতিয়ান। অধমের
মতো নিশ্চিত হাজার হাজার
টিভি দর্শক এ হিসাব দেখছিলেন,
শুনছিলেন।
আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছি। নির্মম,
নির্দয়, অসুস্থ জাতি। কয়েক দিন
আগে নরসিংদীর এক গ্রামের
বাসিন্দারা সাতজন
ডাকাতকে পিটিয়ে মেরেছে। একজন
বেঁচে গেছে। পুলিশ, র্যাব,
ডিবি প্রায় প্রতিদিন গুলি করে মানুষ
মারছে। বিজিবিপ্রধানের
আস্ফালনের পর
সহসা বিজিবি যদি গুলি করে মানুষ
না মারে, তাহলে তো তাদের
বীরত্ব নিয়ে গুঞ্জন শুরু হবে। সবাই মানুষ
মারে। আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি।
আমরা ক্ষমতায় থাকব, থাকবই।
আমরা ওদের হটিয়ে ক্ষমতায় যাবই!
এটাই এখন আমাদের ‘রাজনীতি’।
এমন যদি হতো, এক পক্ষ হঠাৎ বলে বসল,
‘আসুন, কথা বলি’। অন্য পক্ষ নির্ঘাত
আঁতকে উঠত, ‘শর্ত কী?’ ‘না,
কোনো শর্ত নেই। আসুন, কথা বলি।’
আমাদের রাজনীতিতে এটা হওয়ার
নয়। সভ্য লোকেরা কথা বলে, আলাপ-
আলোচনা করে, কথা রাখে, ছাড়
দেয়। কিন্তু আমরা সবাই অসুস্থ
হয়ে পড়ছি। অসুস্থ মানুষের হিতাহিত
জ্ঞান থাকে না, থাকার কথাও না।
বরং প্রতিযোগিতা হচ্ছে কে কত
হিংস্র কথা বলতে পারে, তা নিয়ে।
‘গুগল’-এর এক সুবিধা—সহজেই অনেক কিছু
জানা যায় সেখান থেকে। সবকিছুই
যেন আঙুলের ডগায়। খুবই প্রচলিত ও
জনপ্রিয় ধারণা, ‘রোম যখন পুড়ছিল তখন
সম্রাট
নিরো বাঁশি বাজাচ্ছিলেন।’
খারাপ অর্থে নিরো এক দয়া-
মায়াহীন হিংস্র শাসকের প্রতীক।
গল্পে আছে, সম্রাট নিরো নিজেই
আগুন লাগানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
রোম যখন পুড়ছিল, সম্রাট নিরো তখন
ব্যালকনি-বারান্দায় দাঁড়িয়ে মনের
সুখে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন।
ঘটনা ঘটেছিল ৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৮-১৯
জুলাই তারিখে। অবশ্য অনেকে বলেন,
আগুন জ্বলেছিল চার-পাঁচ দিন ধরে।
উল্টো কেচ্ছাও আছে। বলা হয়, যখন
আগুন লেগেছিল তখন বা সেই দিন
সম্রাট নিরো রোমেই ছিলেন না।
দুদিন পর রোমে ফিরে এসে আগুন
নেভানোর ব্যবস্থা তদারকি করেন,
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে সাহায্য
বিতরণ করেন, ইত্যাদি ইত্যাদি।
অর্থাৎ ইতিহাসের
একটা আওয়ামী লীগ ভাষ্য,
আরেকটা বিএনপি ভাষ্য। অধমের ভাষ্য
আরেকটা, বাংলায় নিরোর
বাঁশি বাজানোর
কথা কোথা থেকে কেমনে চালু
হলো? অধম ল্যাটিন
ভাষা জানে না। সভ্যতার
উৎপত্তি ল্যাটিন ভাষায়। তাই এখন
বুঝি ছাত্রাবস্থায় এই ভাষাটি রপ্ত
করা দরকার ছিল। চোর
পালালে বুদ্ধি বাড়ে—ভাষা শেখার
বয়স পেরিয়ে গেছে।
ইংরেজিতে বলা হয়, নিরো ফিডল
বাজাচ্ছিলেন। পরে দেখা গেল
‘ফিডল’ অর্থাৎ বেহালা গোছের সরু
তারের বাদ্যযন্ত্র,
যেটা মোটামুটিভাবে দশম
বা একাদশ শতাব্দীর আগে আবিষ্কৃত
হয়নি। তাই নিরো আর যা বাজান
না কেন, ‘ফিডল’ বাজাচ্ছিলেন না।
ধারণা করছি,
একটা যন্ত্রতে একদিকে ফুঁ দেবেন আর
অন্য দিকে সুরেলা আওয়াজ বের
হবে এমন যন্ত্র। অর্থাৎ বাঁশি। দুই হাজার
বছর আগে আবিষ্কৃত, যা ব্যবহৃত
হতো না। আগুনে সম্রাট নিরোর
একটা প্রধান প্রাসাদ পুড়ে গিয়েছিল।
যাহোক, যতটা রটে, তত না, নিশ্চয়
না; আবার একদমও যা, তা–ও না।
লেখার মাঝখানে এক প্রতিষ্ঠানের
এক কর্মকর্তা কিছু কাগজ নিয়ে এল।
দেখে, সই করার জন্য। ‘স্যার, প্রতিদিন
সকালে বাসে অথবা ট্রেনে নারায়ণগ
ঞ্জ থেকে ঢাকায় আসি।
জানি না আজ সন্ধ্যায় বাসায়
ফিরতে পারব, নাকি আত্মীয়স্বজনদের
আমার পোড়া শরীর
দেখতে ঢাকা মেডিকেলে আসতে হব
ে। চাকরি তো করতে হবে, সকাল-
বিকেল তাই ঝুঁকি নিতে হবে?’
তরুণ কর্মকর্তাটি দুই
নেত্রী সম্পর্কে তারপর যা মন্তব্য করল,
সেটা লিখে সবাই
মিলে জেলে যাওয়ার খায়েশ নেই।
সে কথাগুলো বলে ফেলেছিল
বেফাঁস। নিজেই মাফ চাইল তার
অতি কড়া মন্তব্যের জন্য। বুঝলাম,
যুক্তিতাড়িত নয়, অনুভূতিতাড়িত মন্তব্য।
এটাও অসুস্থতার লক্ষণ। সবাই অসুস্থ
হয়ে পড়ছি।
মানুষ যখন ভেঙে পড়ছে, তখন
প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়তে বাধ্য।
হচ্ছেও তা-ই। অধমের ধারণা, পুলিশের
গ্রহণযোগ্য ও
বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের দেশের
চল্লিশোর্ধ্ব বছরের মধ্যে অন্য
যেকোনো সময়ের চেয়ে কম।
কোনো প্রতিষ্ঠানের
বিশ্বাসযোগ্যতা, গ্রহণযোগ্যতা যত
কমে, তার কর্তাব্যক্তিদের হাঁকডাক,
লম্ফঝম্ফ তত বাড়ে। তা-ই হচ্ছে। আর
মনে হচ্ছে, পুলিশের প্রধান কাজ
হচ্ছে বিএনপির নেতাদের
বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া, গড়ে ৫০টির
কম মামলা নিশ্চয় কোনো বড়
মাপের বিএনপির নেতার
বিরুদ্ধে নেই। কম থাকলেও অচিরেই
পুলিশ সেটা নিশ্চয় পূরণ করবে। অর্থাৎ
মামলার সংখ্যা জনপ্রতি ৫০ পার
করে দেবে।
আর আদালত নির্বিচারে সব
মামলা গ্রহণ করছেন, রিমান্ড দিচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হ
ারাচ্ছে। বিশ্বের বহু দেশে এ
গোছের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের
পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
বিরাট বিরাট অংশকে বিলুপ্ত
করতে হয়েছে। এই গত সপ্তাহেই
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট
ক্রিশ্চিনা কির্চনার তাঁর দেশের
এসআইউই নামে পরিচিত
গোয়েন্দা সংস্থার বিলুপ্তি ও নতুন
আইন করে নতুন
গোয়েন্দা সংস্থা তৈরির
ঘোষণা দিয়েছেন।
অসুখ অল্প-বিস্তর
হলে চিকিৎসা দিয়ে সেরে ওঠা যায়
। অনেক দিন
চিকিৎসা না করলে বা অবহেলা করল
ে সাধারণ রোগবালাই দুরারোগ্য
ব্যাধিতে পরিণত
হতে পারে বা হয়েই যায়।
অবস্থা এভাবে চললে আমরা সবাই
ভীষণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ব।
সরকারকে বুঝতে হবে যে ২০১৪-এর
নির্বাচনের ওপর ভর করে পাঁচ বছর
সরকার চালানো যাবে না।
চালাতে গেলে আমও যাবে, ছালাও
যাবে। ২০ দলকেও
বুঝতে হবে যে পেট্রলবোমা,
তা আপনারা মারেন বা না মারেন,
(নিরোর মতো)
তা দিয়ে আপনাদের
জনপ্রিয়তা বা গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে
না, আর এর মাধ্যমে সরকার উৎখাত
করা অসম্ভব। শেখ
হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকেই তাঁর
সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনই
এখন একমাত্র পথ। অন্য পথও হয়তো আছে।
অধম এই মুহূর্তে তার হদিস পাচ্ছে না।
মধ্যবর্তী নির্বাচন
পরিচালনাকারী সরকারের কলেবর
অবশ্যই ছোট হতে হবে, তাতে দু-চারজন
মন্ত্রী থাকবেন বিএনপির পছন্দ
অনুযায়ী।
বিএনপি হয়তো চাইবে স্বরাষ্ট্র ও
জনপ্রশাসন। দেনদরবার হতে পারে।
দেনদরবার হতে হবে নির্বাচন কমিশন
নিয়ে। নির্বাচন
কমিশনকে ভালো গ্রহণযোগ্য
অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন নিশ্চিত
করার জন্য কী কী করতে হবে,
কাকে দিয়ে করতে হবে,
সে অভিজ্ঞতা জাতির আছে। তাই
কাজটা কঠিন হবে না।
উভয় পক্ষের
রাজনীতিবিদেরা ভাবছেন,
তাঁরা ঠিক করছেন। তাঁরা ভুল
ভাবছেন। তবে যিনি সরকার চালান,
দায়িত্বটা তাঁর বেশি। দেশ
এমনভাবে চালাবেন না,
যাতে পুরো জাতি দীর্ঘস্থায়ী রে
াগবালাইেয় আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত
আমরা সবাই হয়ে গেছি। তবে ওষুধ
পেলে তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে পার
ব।
অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে। পুলিশ, র্যাব,
বিজিবি দিয়ে অর্থনীতিকে চাঙা ক
রতে পারবেন না। শক্তি প্রয়োগ
না করে বিকল্প ব্যবস্থায় দেশের
সমস্যা সমাধান করতে পারেন কেবল
সত্যিকারের নেতারা। আমাদের
দুর্ভাগ্য, দেশে এখন সত্যিকার নেতার
বড়ই অভাব। আছে বিস্তর ক্ষমতাধর
এবং ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ।
তাঁদের
খপ্পরে পড়ে আমরা ক্রমান্বয়ে একটা অসু
স্থ জাতিতে পরিণতি হচ্ছি,
অচিরে যাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর
নিরাপত্তা থাকবে না।
সুস্থতার আশা তো আর ছাড়া যায়
না। মধ্যবর্তী নির্বাচনই এখন একমাত্র
ট্রিটমেন্ট। হয়তোবা।
ড. শাহদীন মালিক: আইনজীবী, সুপ্রিম
কোর্ট।
Posted 7 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আন্দোলন, আলোচনা, উপ-
সম্পাদকীয়, প্রথম আলো, মতামত, শাহদীন
মালিক, হরতাল-অবরোধ
5
FEB আমরা সবাই অসুস্থ
হয়ে পড়ছি by শাহদীন
মালিক
0 Add a comment
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দুই নেত্রীর
মধ্যে একটা অলিখিত
চুক্তি হয়ে আছে যে, আজীবন আমাদের
মধ্যেই
ক্ষমতা ভাগাভাগি হয়ে কেন্দ্রীভূত
থাকবে। বাংলাদেশের
মানুষকে এতটা নির্বোধ ভাবা উচিত
নয়। এই মানুষই ’৬৯-এ ভিসুভিয়াসের
মতো বিস্ফোরিত হয়েছিল, এই মানুষই
’৭০-এর নির্বাচনে ভোট
দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে একক
নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত করেছিল,
পঁচিশে মার্চের পৈশাচিক
আক্রমণকে শুধু প্রতিরোধই করে নি,
তাদেরকে পরাভূত করেছিল। অথচ
বেদনাদায়ক হলেও আজকের বাস্তবতায়
লক্ষণীয়, জনগণ রাজনৈতিক অবক্ষয়ের
দীপ্তিহীন আগুনের নির্দয়
দহনে দগ্ধীভূত হলেও আজ নির্লিপ্ত,
নির্বিকার। এর
সমাধানে যেভাবে বিস্ফোরিত
হওয়ার কথা ছিল তা তো হচ্ছেই না,
বরং সবকিছুই যেন তাদের
কাছে গতানুগতিক বা স্বাভাবিক
নিয়তি হিসেবে তারা নীরবে সহ্য
করে যাচ্ছে।
আজকে সরকারদলীয় শীর্ষনেতৃত্ব
থেকে শুরু করে পাতি নেতারাও চরম
দাম্ভিকতায় নির্লজ্জ উচ্চারণ করছেন-
৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ
না করে আপনারা ভুল করেছেন,
প্রায়শ্চিত্তও আপনাদেরকেই
করতে হবে। ২০১৯ সালের
আগে নির্বাচন সম্পর্কিত কোন
আলোচনা হবে না। অথচ সচেতন
নাগরিকের কে না জানে,
তারা নির্বাচনের আগেই অসংখ্যবার
বলেছেন, যেহেতু সংবিধানের পঞ্চদশ
সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার
ব্যবস্থাটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে (যদিও
পঞ্চদশ সংশোধনীটাই শাসনতন্ত্রের
মৌলিক সত্তার পরিপন্থি)
সাংবিধানিক
ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য
নির্বাচনটি করতে হচ্ছে। ফোন করা,
অনুরোধ করা,
পীড়াপীড়ি করা (রেফারেন্স) তাও
হাস্যকর এই কারণে যে, এর সবই ছিল
বিএনপিকে ৫ই জানুয়ারির
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য। শুধু
খালেদা জিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকেই
নয়, ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোন
বাস্তবতাও ছিল না।
বিএনপি প্রথমে নির্বাচনটি বর্জনের
কথা বলে পরে প্রতিহতেরও
ঘোষণা দেয়। কিন্তু এর কোনটাই
তাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়
নি। বরং ২০১৩-এর ২৯শে ডিসেম্বর মার্চ
ফর ডেমোক্রেসি’র নিদারুণ
ব্যর্থতা রাজনৈতিকভাবে বিএনপিক
ে বিধ্বস্ত ও বিকলাঙ্গ করে দেয়। বান
কি মুন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক
গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহ- যারা সকল
দলের অংশীদারিত্বের নির্বাচন
চেয়েছিলেন তারাও বিএনপির
সাংগঠনিক বেহাল অবস্থা পর্যবেক্ষণ
করে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান।
এখানে আরেকটি মজার বিষয় হলো-
৬৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল
থাকা সত্ত্বেও কেন
তিনি ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্ব
িতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত
করে আনলেন, বিবেকের দর্পণের
সামনে দাঁড়িয়ে আত্মজিজ্ঞাসা করল
ে তিনি এর সদুত্তর খুঁজে পাবেন
আমি নিশ্চিত।
খালেদা জিয়ার অফিসের বিদ্যুৎ,
ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক
বিচ্ছিন্ন করে বলা যায় আধুনিক
সভ্যতা থেকে তাকে বিযুক্ত
করে রাখা হয়েছে। ৫ই জানুয়ারির
সমাবেশকে কেন্দ্র
করে ইতিমধ্যে যে ঘটনাগুলো ঘটে গেল
এই ঘটনাটির পর সেটাকে আর ভুল
হিসেবে দেখা যাচ্ছে না।
এটা কোন রাজনৈতিক আচরণের
মধ্যে তো পড়েই না-
সম্পূর্ণভাবে শিষ্টাচার-বহির্ভূত।
সরকারের এই অদূরদর্শিতা ও
অপরিণামদর্শিতা কোন মারাত্মক
পরিণতি ডেকে নিয়ে আসতে পারে।
বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত অনেক
ব্যক্তিত্ব ও রাষ্ট্রস্বীকৃত ব্যক্তিত্ব এত
দিন যারা অজানা আশঙ্কায় নীরব,
নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, কাছিমের
মতো পেটের
মধ্যে মাথা লুকিয়েছিলেন, টক-
শোতে, লেখনিতে,
বিশ্লেষণে অকষ্মাৎ তারা প্রচ-
ভাবে মুখর হয়েছেন একচ্ছত্র
ক্ষমতাধারী নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের
নিমিত্তে। গোটা দেশ আজ
দুটি শিবিরে বিভক্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক,
সরকারি কর্মকতা-কর্মচারী, চিকিৎসক,
আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, কবি ও
কেরানি সকলেই কোন না কোন দলের
কাছে নিজেদের
সত্তা বিক্রি করে বসে আছেন। কেউ
কেউ সুবিধা নেয়ার জন্য আর সাধারণ
জনগোষ্ঠি নিজেদের নিরাপত্তার
জন্য। কারণ তারা আজ বড়ই অসহায়।
যেকোন
অজুহাতে জঙ্গি বা সন্ত্রাসী তালিক
াভুক্ত হয়ে নির্যাতনের স্বীকার
হওয়ার আশঙ্কায় তারা শঙ্কিত থাকেন।
সামাজিক এই অনিশ্চয়তার
মুহূর্তে রবি ঠাকুরের উক্তিটি আমার
বারবার মনে পড়ছে- ‘অলক্ষুণের এই
দুর্যোগে বেঁচে থাকাটাই সব’।
কোকোর মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট
এবং স্পিকার যারা দলের ঊর্ধ্বে,
জাতির অভিভাবক-
নিঃসন্দেহে তাঁরা সাবেক
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়
াকে সমবেদনা জানাতে পারতেন।
কিন্তু তাও হয় নি। বিএনপি’র পক্ষ
থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ন্যূনতম
সম্মান না দেখানো রাজনৈতিক
শিষ্টাচার-বিবর্জিত। যেকোন
সুনাগরিক নৈতিকতার
খাতিরে এটা স্বীকার করতে বাধ্য।
কিন্তু
এটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোতে যে
তর্ক-বিতর্কের ঝড় উঠলো সেটাও
নিতান্তই বাড়াবাড়ি। রাজনীতির
সুষ্ঠু চর্চা ও পরিচর্যা নেই বলেই ‘নেই
কাজ তো খই ভাজ’ -এর মতো অবস্থা।
দেশবাসী আশ্চর্যান্বিত হয়েছে যে,
কোকোর মৃত্যুর
দিনে এমনকি জানাজার দিনেও
বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট তাদের
অবরোধ কর্মসূচি তো প্রত্যাহার করেই
নি এমনকি সাময়িক শিথিলও করে নি!
এতে করে তারা দেশবাসীর
কাছে জোরালোভাবে প্রমাণ
করলো যে ক্ষমতার
মোহে তারা কতটা অন্ধ।
অন্যদিকে কোকো রাজনীতির
সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পিতা-মাতার
উত্তরাধিকার ছাড়া অন্য কোন
পরিচয়ও তার নেই, তবুও তার জানাজায়
বিশাল সমাগমটি নিদারুণ
উপেক্ষা না করে বিশ্লেষণের
দাবি রাখে- অবহেলার বিষয়
তো নয়ই।
দেশ যখন অগ্নিদগ্ধ হচ্ছে- সন্ত্রাস,
জঙ্গিবাদ যখন সাধারণ মানুষের
জীবনকে চরম আতঙ্কের মধ্যে নিপতিত
করেছে তখনও এ নিয়ে দুপক্ষের
মধ্যে কোনরকম উদ্বেগ
আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না।
বিএনপির রাজনৈতিক
কর্মসূচিতে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন
কথাই নেই। থাকলে আসন্ন
২রা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু
হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার
বিষয়টি তাদের বিবেচনায় থাকতো।
দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার
গুরুত্ব বিবেচনা করে হরতাল-অবরোধ
বা নেতিবাচক কোন রাজনৈতিক
কর্মসূচি তারা স্থগিত রাখবেন। উভয়
জোটেরই কর্মসূচির শেষ কথা- ক্ষমতা।
একদল ক্ষমতায় থাকবেনই, আরেক দল
ক্ষমতায় আসবেনই। দেশ কোথায়
গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সেটি তাদের
কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়।
গত ৫ই জানুয়ারি জাতির
উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর
ভাষণটি আমি গভীর মনোযোগের
সঙ্গে শ্রবণ করেছি। সেখানে তার এক
বছরের অর্জন-সফলতার চিত্র আর
খালেদা জিয়ার চৌদ্দ-গুষ্টি উদ্ধার
করা হয়েছে। শুধু দেশে বিদ্যমান
সীমাহীন দুর্নীতির
বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারিত হয় নি।
বিএনপিও দুর্নীতির বিরুদ্ধে টুঁ
শব্দটি করে না। এই সমীকরণের অর্থ জনগণ
বুঝতে অক্ষম মনে করা নির্বুদ্ধিতার
পরিচয়। শেখ হাসিনা ও
খালেদা জিয়ার জন্য এটি ভয়াল কোন
বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
বিএনপি কিভাবে গণতন্ত্র
রক্ষা করতে চায়
তা কি তারা কখনো বলেছে। মানুষ
হত্যা করে তো গণতন্ত্র রক্ষা করা যায়
না। ২৭ দিন লাগাতার অবরোধ
কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত নৃশংসতায় নিহত
হয়েছে ৪৫ জন সাধারণ নিরীহ মানুষ।
একটি জরিপ মতে, অর্থনীতির
ক্ষতি কমপক্ষে ৫৫,০০০ কোটি টাকা।
প্রতিটি সাধারণ মানুষের জীবন-
জীবিকা হুমকির সম্মুখীন। দেশের
রপ্তানি খাত থেকে শুরু করে পর্যটন
শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের
সর্বক্ষেত্রে প্রচ- স্থবিরতা বিরাজ
করছে। কৃষক তার উৎপাদিত ফসল
বিক্রি করতে পারছে না- পারলেও
সঠিক মূল্য পাচ্ছে না, সাধারণ খেটে-
খাওয়া শ্রমিক কাজ পাচ্ছে না।
বাসের নিরীহ যাত্রীটি- দুই পক্ষের
কারও রাজনীতির সঙ্গে যার কোন
সংশ্লিষ্টতা নেই- অতর্কিত
পেট্রলবোমায় পুড়ে অঙ্গার
হয়ে যাচ্ছে। নিষ্পাপ শিশু
থেকে নারী কেউই সন্ত্রাসী ও
জঙ্গিবাদীদের নৃশংসতা,
পৈশাচিকতা থেকে রেহাই
পাচ্ছে না। যেন সাধারণ মানুষ হয়ে এ
দেশে জন্ম নেয়াটাই তার অপরাধ!
ধরে নিলাম এই
সন্ত্রাসে খালেদা জিয়ার কোন হাত
নেই, কিন্তু তার বিরামহীন অবরোধ-
হরতালের ছত্রচ্ছায়ায়ই তো এই
নাশকতা, নৃশংসতা ও পাশবিক
হত্যাকা-ের পটভূমি তৈরি হয়েছে।
আর
চোরাগুপ্তা জঙ্গি হামলা ছাড়া অন্য
কোন রাজনৈতিক কর্মকা-
তো সাধারণ জনগণের কাছে দৃশ্যমানও
হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রশাসনযন্ত্রের
শীর্ষকর্তাদের
দম্ভোক্তি রাজনীতিতে শুধু আতঙ্ক আর
সংশয়ই নয়- একটা মারাত্মক বিপর্যয়ের
আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নূর হোসেন, ডা. মিলনদের
মতো আত্মাহুতি দেয়ার জন্য এখন আর
কেউ নেই। কেন-না দেশের শতকরা ৮৫
ভাগ লোক বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক
আদর্শের প্রশ্নে দুজন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
এ যেন জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ।
দেশে যা কিছুই ঘটুক
তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না- কোন
সমাধানের দিকেও যাবেন না। আর
বেগম জিয়ার অবস্থান হচ্ছে-
‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার
সোনার হরিণ চাই’- দেশ
সোমালিয়াই হোক আর জাহান্নামেই
যাক। রাজনীতিকে কুক্ষিগত রাখার
দাবাখেলায় তারা উভয়েই সমান
পারদর্শী। উভয়েই তরুণ
সমাজকে সুকৌশলে অবক্ষয়ের
অতলান্তে নিক্ষেপ করেছেন, বিকল্প
কোন নতুন শক্তির উত্থান ঘটতে দেননি।
একমাত্র এখানেই তাদের সাফল্য
আকাশছোঁয়া।
’৬০-এর দশক থেকে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত
এদেশের ছাত্র-সমাজ বিশেষ
করে ছাত্রলীগ বাঙালি চেতনার
উন্মেষ, বিকাশ, ব্যাপ্তি ও
স্বাধীনতার চেতনা ও সফলতার
যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তার
সঙ্গে বর্তমান ছাত্র রাজনীতির কোন
চেতনাগত ও চারিত্রিক যোগসূত্র
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ত্রাস
এবং অর্থ এখন সংগঠনের পদলাভের
প্রধানতম যোগ্যতা। এর আগে বিশ্বজিৎ
হত্যাকা-ের সঙ্গে যুক্ত
একটি ছেলে তার
জবানবন্দিতে বলেছিল, মূল নেতৃত্বের
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সে এটি করেছে।
মাত্র ক’দিন
আগে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ
করতে গিয়ে ধরা পড়া ছাত্রদলের
একটি ছেলে বলেছে যে,
‘তাদেরকে দল থেকে আশ্বাস
দেয়া হয়েছে, যে যত
বেশি গাড়ি পোড়াতে পারবে তাক
ে তত ভাল পদ দেয়া হবে।
কি ভয়াবহতাপূর্ণ অপরিণামদর্শিতা!
যে কারণে শুভ বোধসম্পন্ন
অংশটি সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিবিমুখ
হয়ে পড়ছে। আর স্বাভাবিকভাবেই
রাজনৈতিক অঙ্গনটি দুর্বৃত্তদের
অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। এটি দেশের
ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্যও
একটি মারাত্মক অশনি সংকেত।
স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার,
স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার মূল
কারিগর ছাত্রলীগই, আর বঙ্গবন্ধু এর
স্থপতি। ছাত্ররাই এখানে সবসময় সকল
রাষ্ট্রীয় দুঃশাসন ও অপশাসনের
বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত মশাল বহন করেছে,
রুখে দাঁড়িয়েছে। আমি নিশ্চিত এই
বাস্তবের আলোকেই
সুপরিকল্পিতভাবে নতুন
প্রজন্মকে অবক্ষয়ের গভীরে নিমজ্জিত
করে দেয়া হয়েছে। ’৯০ পর্যন্ত সামরিক
শাসনের সময়ও দেশের কলেজ,
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ
ছিল। কিন্তু এরপর
ক্রমান্বয়ে সুকৌশলে তা বিলুপ্ত
করা হয়েছে। সেই
ছাত্রদেরকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি,
টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত
করা হয়েছে। এখন যে যত বড়
সন্ত্রাসী সে তত বড় নেতা।
নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের
ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচিত
হলে কোনভাবেই এ
অবস্থাটি তৈরী হতো না, কেন না-
সেক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের
সমর্থন পাওয়ার জন্য আদর্শ ও নৈতিকতার
চর্চার মাধ্যমে তাদের আস্থা ও
শ্রদ্ধা অর্জন করতে হতো।
এ কথা বলার অধিকার আমি রাখি এই
কারণে যে, স্বায়ত্তশাসন
থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার
থেকে স্বাধীনতা অর্জনের
আন্দোলনের উত্তরণে আমি সক্রিয়
ছিলাম। আমাদের সময়ে ছাত্ররা মূল
রাজনৈতিক আন্দোলনের
ধারাকে তৈরি করেছে বঙ্গবন্ধুকে সা
মনে নিয়ে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই
কারও অঙ্গসংগঠন ছিল না। সেই
আমি কখনোই তাদের ৬০ দশকের
রাজনৈতিক পথ পরিক্রমণের ধারায়
আর দেখতে চাই না। কারণ, তখনকার ও
এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কিন্তু অবশ্যই
তারা জ্ঞান ও প্রদীপ্ত আলোকচ্ছটায়
শিক্ষাঙ্গনে উদ্ভাসিত
হবে এবং দেশকে সামনের
দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে- এটিই
এখন আমার মতোই দেশবাসীরও কাম্য।
গোটা দেশটা আজ সরকার ও
বিরোধী পক্ষের শুধু জেদেরই শিকার
নয়, জাহান্নামের আগুনে দগ্ধীভূত। এই
অসহ্য অসহনীয় পরিবেশ
থেকে দেশবাসী আমার মতোই
আল্লাহর
কাছে নিষ্কৃতি প্রার্থনা করছেন
বলেই আমার বিশ্বাস।
==================
আপডেট >> ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বুধবার
Posted 8 hours ago by Nejam Kutubi
Labels: Lead, WikiOpinion, আলোচনা,
নূরে আলম সিদ্দিকী, মতামত,
রাজনীতি
5
FEB রাজনীতি আজ আদর্শ
বিবর্জিত by নূরে আলম
সিদ্দিকী
0 Add a comment
(বগুড়া শহরের তিনমাথার
নিরালা ফিলিং স্টেশন এলাকায়
আজ বৃহস্পতিবার
একটি ট্রাকে দুর্বৃত্তদের
ছোড়া পেট্রলবোমায় দুজন নিহত
হয়েছেন। ছবি: সোয়েল রানা, বগুড়া)
বগুড়া শহরের তিনমাথার
নিরালা ফিলিং স্টেশন এলাকায়
আজ বৃহস্পতিবার
একটি ট্রাকে দুর্বৃত্তদের
ছোড়া পেট্রলবোমায় দুজন নিহত
হয়েছেন। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এ
ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন। আশঙ্কাজনক
অবস্থায় তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর
রহমান মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত
দুজন হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার
বন্তেঘড়ি গ্রামের আফজাল
হোসেনের ছেলে পান
ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম (৩৮)
এবং ট্রাকের চালক ঝিনাইদহের
শৈলকুপা উপজেলার ধূপখোলা গ্রামের
পলাশ হোসেন। আহত পান
ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদের
বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে।
ট্রাকে আগুন লাগার পর
হাসপাতালে নেওয়ার পথে শহীদুল
মারা যান এবং দুপুর সাড়ে ১২টার
দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান
মেডিকেল কলেজ
হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় পলাশ মারা যান। শহীদ
জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ
পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ
আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (তদন্ত) নূরে আলম সিদ্দিকীর
ভাষ্য, আজ ভোর পৌনে পাঁচটার
দিকে বগুড়ার
নিরালা ফিলিং স্টেশন এলাকায়
দুর্বৃত্তরা একটি ট্রাকে পেট্রলবোমা ছ
োড়ে। এতে পানবোঝাই ট্রাকটির
চালক নিয়ন্ত্রণ
হারালে ট্রাকটি রাস্তায়
দাঁড়িয়ে থাকা অন্য চারটি বাসের
সঙ্গে ধাক্কা লাগালে বাসগুলোতে
ও আগুন ধরে যায়। ট্রাকটি পান
নিয়ে ঝিনাইদহের শেখেরহাট
থেকে দিনাজপুরের
নবাবগঞ্জে যাচ্ছিল। আগুনে ট্রাকের
চালক ও পান ব্যবসায়ীর গায়ে আগুন
ধরে যায়।
Posted 8 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: প্রথম আলো, বগুড়া, হরতাল-অবরোধ
5
Home »
» মিঠাপুকুর
উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত
ভাইসÑচেয়ারম্যান আবদুল বাসেত
মারজানসহ নিখোঁজ চার জনের সন্ধান
চান তাদের পরিবারে সদস্যরা।
মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইসÑচেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মারজানসহ নিখোঁজ চার জনের সন্ধান চান তাদের পরিবারে সদস্যরা।
Written By Unknown on বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ | ৯:১৮ AM
Related Articles
If you enjoyed this article just Click here Read Dhumketo ধূমকেতু, or subscribe to receive more great content just like it.
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন