ভাড়ায় মিলছে স্বামীদিনে ১০০ টাকা ভাড়ায় মিলছে স্বামী0Byনিউজবিডি .কমonজুলাই ২৩, ২০১৫বিচিত্রনিউজবিডি৭১ডটকমঢাকা:রাজধানীতে ভাড়ায় মিলছে স্বামী! এ বাণিজ্যে তিন ধরনের কাজের জন্য স্বামী পরিচয়ে পুরুষ ভাড়া করা হয় বলে জানা গেছে। স্বামী হিসেবে ভাড়ায় খেটে নিজের সংসার চালাচ্ছেন এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যও পাওয়া গেছে। দিনে ১০০ টাকা থেকে মাসে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকায় ভাড়ায় স্বামী পাওয়া যায়। আবার একই পুরুষ ভাড়ায় খাটেন একাধিক নারীর স্বামী পরিচয়ে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে। রাজধানীর জুরাইনএলাকার ফুটপাতের খুদেদোকানি আলো বেগমের স্বামী নেই। আরেক বিয়ে করে স্বামী চলে গেছে। কোথায় গেছে সেটাওতার জানা নেই। তিনটি সন্তান নিয়ে ফুটপাতে কখনও পিঠা, কখনও মৌসুমি ফল, সঙ্গে চা-পান বিক্রি করে জীবন চালান তিনি। ছেলেকে চা-পানের দোকান আলাদা করে দিতে পাঁচহাজার টাকার ঋণ দরকার তার। একটি এনজিও থেকে ঋণ পেতে স্বামী দরকার। এনজিওর লোকজন বলছে ঋণ পেতে হলে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ছবি লাগবে। মাস কয়েক আগে এনজিওর ঋণ পেতে একজন স্বামী ভাড়া করেছিলেন তিনি। ঋণের টাকা থেকে ৫০০ টাকা দিয়েছেন তাকে। মাত্র ৫০০ টাকাতেই আলো বেগমের সঙ্গে স্বামী পরিচয়ে এনজিও অফিসে গিয়ে ছবি তুলে ঋণ পেতে সহায়তা করেছেন বিশু নামের এক লোক।ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে যৌনকর্মীদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ওইসব যৌনকর্মী এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা শুরু করেছে। বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী ছাড়া বাড়ির মালিক বাসা ভাড়া দিতে চান না। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ওই প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করে যৌনকর্মীরাতাদের পূর্বপরিচিত কোনো পুরুষকে স্বামী হিসেবে ভাড়া করেন। বাড়ি ভাড়া করার সময় সঙ্গে থাকেন ভাড়াটে স্বামী। দেখা গেছে, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়ির মালিককে বলা হয় স্বামী নিয়মিত ঢাকায় থাকে না, বাইরের কোনো জেলায় চাকরি বা ব্যবসা করে। একই সঙ্গে বলা হয়, বাসায় নিয়মিত থাকবে তার স্ত্রী ও দুই বা তিন বোন। ওই বোনদের থাকার কথা বলে জায়েজ করে নেওয়া হয় আরো দুই-তিনজন যৌনকর্মীকে। এভাবেই রাজধানীজুড়ে ফ্ল্যাট বাড়িগুলোতে চলছে যৌনবাণিজ্য।শনির আখড়ার সোহান (ছদ্মনাম) বরিশাল থেকে অভাবের তাড়নায় ঢাকায় আসেন। এসএসসিও পাস নয়, তাই কোনো চাকরি দিতে চাচ্ছেন না কেউ। এরই মধ্যে দেখা মিলে ছিনতাইকারী কাজলের সঙ্গে। নিরূপায় হয়ে তার সঙ্গে যোগ দেয় সংসদ ভবন এলাকায় ছিনতাইয়ের কাজে। পরিবর্তনকরে ফেলে নিজের বংশ-পরিচয়ও। এরই মধ্যে পরিচয় হয় স্বামী পরিত্যক্তা রুপার (ছদ্মনাম) সঙ্গে। তখন তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি যৌন ব্যবসায় লিপ্ত ছিলেন। সিদ্ধান্ত হয় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন রাজধানীর শনির আখড়ায় বসবাস করবেন। এরপরই বিউটি পার্লার ব্যবসার আড়ালে রুপা শুরু করে জোরালো যৌনব্যবসা। বিধিবাম, এলাকার দুষ্ট বেরসিক ছেলেরা জেনে যায় সোহান-রুপা আসলে স্বামী-স্ত্রী নন। দুজনের এ অবাধ বসবাসে বাধ সাদে তারা। দুজনকেই বাধ্য করে সত্যিকারের বিয়েতে। এছাড়াও সোহান রাজধানীর শান্তিনগর, বাড্ডা, ফার্মগেট এলাকাসহ ৮-৯টি স্থানে যৌনকর্মীদের স্বামী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে নিজে কামাচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। আর মাঝে মধ্যে খদ্দের জোগাড় করে দিলে তার কমিশনতো আছেই।রাজধানীতে তিন ধরনের কাজের জন্য মহিলাদের স্বামী পরিচয়ে পুরুষ ভাড়া করার ক্ষেত্রচিহ্নিত করা গেছে। বিশেষ করে যৌনব্যবসার সঙ্গে জড়িত নারীরা বাসা ভাড়া নেওয়ার সময়স্বামী হিসেবে লোক ভাড়া করে বাড়ির মালিককে দেখিয়ে থাকেন। এনজিওসহ বেশকিছু মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে স্বামীর পরিচয় ও তার ছবি ব্যবহার করতে স্বামী ভাড়া করেন। এছাড়া, সাম্প্রতিককালে পাসপোর্ট অফিসে কোনো মহিলা স্বামী ছাড়া একা গেলে তাকে স্বামীর উপস্থিতি দেখানোর প্রয়োজনে স্বামী ভাড়াকরে আবার স্বামী নিয়ে আসার ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে হয়।অনুসন্ধানে একই ব্যক্তির তিন-চারটে ফ্ল্যাট বাড়িতে স্বামীর পরিচয়ে ভাড়া খাটার বিষয়টি জানা গেছে। এমনি একজন সালাউদ্দিন। যে কিনা ছয় নারীর স্বামী হিসেবে ভাড়া খাটেন। ভাড়া খাটার শর্ত হচ্ছে সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন স্বামী পরিচয়ে বাসায় অবস্থান করতে হবে, আর বাসার বাজারও করে দিতে হবে। বাসায় অবস্থান করা ও বাজার করারশর্ত দেওয়ার মানে হচ্ছে যাতে আশপাশের লোকজন কোনো প্রকার সন্দেহ না করেন।জামালপুরের মধ্যবয়সী পুরুষ সালাউদ্দিন। এক যুগ আগে ঢাকায় এসে মিরপুর এলাকায় পান-সিগারেটের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে জড়িয়ে যান এক সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে। ধরা পড়ে জেলও খাটেন দেড় বছর। জেল থেকে বেরুনোর পর পরিচয় হয় এক মহিলার সঙ্গে। সেই থেকে ভাড়ায় স্বামীবাণিজ্য শুরু সালাউদ্দিনের। এখন রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা ও গাবতলী এলাকায় ছয়টি বাসায় ছয় নারীর ভাড়াটে স্বামী তিনি। ভাড়া পান ৩০ হাজার টাকা। কোনো মাসে বেশি মেলে আবার কোনো মাসে কিছুটা কমও মেলে বলে জানান সালাউদ্দিন। নিজের স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে ভাড়ায় থাকেন মিরপুরের কালসী এলাকায়। ভাড়ায় স্বামী খাটাই এখন তার একমাত্র পেশা বলে জানান।জানা গেছে, রাজধানীতে বিভিন্ন ক্ষুদে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বেশিরভাগ বস্তিবাসী বা ভাসমান নারীরা উদয়-অস্ত পরিশ্রম করে সন্তানদের নিয়ে জীবন ধারণ করছেন। তাদের বেশির ভাগই স্বামী পরিত্যক্তা। ব্যবসা পরিচালনা বা সম্প্রসারণের কারণে কখনও কখনওএদের ক্ষুদ্রঋণের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এনজিওগুলো বা নগরীতে সুদের ব্যবসা করে এমন সংস্থাগুলো ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ছবি ও নাম ব্যবহার করে এবং দুজনকেই ঋণের দায়ে আবদ্ধ রাখেন। এনজিওগুলোর এ নিয়মের কারণে স্বামী পরিত্যক্তাদের ক্ষুদ্রঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকে না। সে ক্ষেত্রেবাধ্য হয়ে পরিচিত এবং ভালো সম্পর্ক আছে এমন কাউকে স্বামী হিসেবে ভাড়া করে সংস্থাগুলো থেকে ব্যবসার ঋণ পান মহিলারা। বিনিময়ে ভাড়াটে স্বামীকে ধরিয়ে দিতে হয়নগদ কিছু। আবার জানা গেছে, অনেকে কেবল ভালো সম্পর্কের কারণে বিনা টাকায় মহিলাদের ঋণ পেতে সহায়তা করেন।অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাম্প্রতিককালে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে অফিসে যেতে হয়। অজ্ঞতাপ্রসূত কোনো নারী একা পাসপোর্টের ছবি তুলতে গেলেতাকে স্বামী সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়। সেই ক্ষেত্রে মহিলা পাসপোর্ট প্রত্যাশীকে সময় ব্যয় করে আরেক দিন আসতে হয় অথবা অন্য একদিন যেতে হয়। মহিলারা ফিরে যাওয়ার সময় এখানকার কিছু দালাল সুকৌশলে মহিলাদের প্রস্তাব দেন, ‘টাকা-পয়সা খরচ করে আবারআসবেন। তারচেয়ে মাত্র ১০০ টাকা খরচ করেন। আমি একজন লোক দিচ্ছি, উনি আপনার সঙ্গে যাবেন এবং মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য উনাকে স্বামী পরিচয় দেবেন। ছবিটা তোলা হলে চলে যাবেন।’নিউজবিডি৭১/জে এইচ/ ২৩জুলা
Home »
ভাড়ায় মিলছে স্বামীদিনে ১০০ টাকা
» ভাড়ায় মিলছে স্বামীদিনে ১০০ টাকা
Related Articles
If you enjoyed this article just Click here Read Dhumketo ধূমকেতু, or subscribe to receive more great content just like it.
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন