চালিত হচ্ছে "হাসিনা সংবিধান" নামের একটি চটি বই মোতাবেক;যার সাথে দেশের সংবিধানের কোন সম্পর্কই নেই।
__________________________________________
সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন বা নিরপেক্ষ ছিল না। তবুও কোনো প্রকার জোড়াতালি দিয়ে বলা হতো যে দেশের বিচার ব্যবস্থা বলে কিছু একটা রয়েছে। সমগ্র অনিয়মের মধ্যেও সাধারণ মানুষ আদালতের উপর কিছুটা হলেও বিশ্বাস রেখে তাদের জীবন চালিয়ে নিচ্ছিলো।স্বাধীনতা, স্বশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং ব্যবস্থায় যথেষ্ঠ্য ত্রুটি থাকা সত্বেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশের মানুষ তাদের গতানুগতিক জীবন যাত্রা মেনে নিয়েছিল।
দেশের ক্রান্তিলগ্নে স্বশস্ত্রবাহিনী এবং সুপ্রীম কোর্টের উপর সাধারণ জনগণের আস্থা ছিল বললে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না।কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা এতোটাই দুর্ভাগা যে আমাদের ভাগ্যাকাশের মেঘ কাটতে গিয়েও কাটে না। কোন এক সময় ভারতের নির্ভুল এক দাবার চালে স্বাধীনতা নামের সোনার হরিণকে ধরতে গিয়ে ত্রিশ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে।ঐ ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ সত্যিকারের স্বাধীনতা না পেলেও ভারত তার অস্তিত্ব রক্ষা করেছে। কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক, আজ আর একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ১৯৭১ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের বিষয়, উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ছিল ভারত নামক রাষ্ট্রটির অস্তিত্ব; পূর্ব পাকিস্তানীদের মুক্তি বা স্বাধীনতা নয়। ঐ যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বিনা রক্তক্ষরণে পূর্ব পাকিস্তানীদের জীবনের বিনিময়ে ভারত শুধু তার অস্তিত্বই রক্ষা করেনি; তারা ৫৫ হাজার বর্গমাইল ভূ-খন্ডের অর্জন নিশ্চিত করেছে।
যাইহোক, আগের কথায় ফিরে আসি। ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয় ভারতের সরাসরি হস্তক্ষেপ। পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে হাসিনা এবং রেহানা শেখের কথিত মুচলেকা(১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর চতুর ভারত তার দুই মেয়ে হাসিনা এবং রেহানা শেখের দায়িত্ব গ্রহণ করে।হাসিনা এবং রেহানা শেখ এবং তাদের পরিবারের রাজকীয় এবং উশৃঙ্খল জীবন যাত্রার যাবতীয় খরচ বহনের বিনিময়ে ভারত তাদেরকে দিয়ে বহু শর্তাবলী স্বাক্ষর করিয়ে নেয় যা বোঝার ক্ষমতা হাসিনা এবং রেহানা শেখের আজও হয়নি।) অনুযায়ী হাসিনা শেখকে নিরংকুশ ক্ষমতা প্রদান করা হয়। শুরু হয় ভারতীয় আধিপত্যবাদ।ভারত পেছন থেকে ঘুঁটির চাল বাদ দিয়ে বিনা যুদ্ধেই বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করে।হাসিনা শেখকে পুতুলের মতো সামনে বসিয়ে রেখে বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।দেশকে দেউলিয়া করে দুর্নীতির মাধ্যমে হাসিনা শেখকে বিলিওনিয়ার হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। সাথেসাথে প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ চরিতার্থ করতে হাসিনা শেখকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়।১৯৭১ সালের অর্জিত অর্ধসিদ্ধ স্বাধীনতা অর্জনের ৪৭ বছরের মাথায় স্বাধীনতার রূপকারদের একজন মহান নেতা শেখ মুজিবেরই কুলাঙ্গার সন্তান হাসিনা শেখ শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভ এবং পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী ভারতের কাছে দেশটির নির্বাহী ক্ষমতা তুলে দেয়।
নির্বাহী বিভাগ দিল্লী থেকে চালিত হওয়ার পাশাপাশি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে স্বশস্ত্র বাহিনীকে পঙ্গু করে দেয়া হয়। অতীতের সব ইতিহাস ভঙ্গ করে এই প্রথম কোনো এক সরকার প্রধান বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে অস্ত্রধারী ইতর/দুর্বৃত্তদের পাঠিয়ে ক্ষমতাসীন একজন প্রধান বিচারপতিকে উলঙ্গ করে পেটানো হয়!(বি:দ্রঃ ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে হাসিনা শেখ আমেরিকা যাওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বঙ্গভবনে ডেকে রাষ্ট্রপতি সহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতেই বলেছিলেন, " শোনেন, আমেরিকা থেকে আইসা আমি আপনার মুখ দেখতে চাইনা।কারো দোহাই দেবেন না। এমনকি রাষ্ট্রপতির ও না। এই দেশের রাষ্ট্রপতি হইলো ভগবানের মূর্তি যার কোনো ক্ষমতা নাই।আমি দেশ চালাই। আমার কথা বুঝতে পারছেন?" প্রধান বিচারপতি প্রচলিত সংবিধান এবং দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলতে গেলে হাসিনা শেখ অগ্নিশর্মা হয়ে চিৎকার করে বলেন, "মালাউনের বাচ্চা, তুই এই দেশের সংবিধানের কেডা? বলেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতি, আইনমন্ত্রী, এটর্নি জেনারেল, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল তারেক সিদ্দিকী এবং নবম ডিভিশনের জেনারেল আকবরের দিকে তাকিয়ে আদেশের সুরে বলেছিলেন, "আমি আমেরিকা থাইকা আইসা এই মালাউনের বাচ্চারে দেখতে চাইনা। এইটা আমার শেষ কথা!" এরপরে কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই হাসিনা শেখ সম্রাজ্ঞীর মতো নয় বরং মক্ষীরাণীর মতোই দুলেদুলে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে যান।বঙ্গভবনে উপবিস্টরা প্রধান বিচারপতিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করে পরামর্শ দিলেন, "বেশী বাড়াবাড়ি খোঁচাখুঁচি না করে পদত্যাগ করে বিদেশে চলে যান।এত পেঁচাপেঁচি করবেন না। করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।" পরিস্থিতি অনুকূলে নেই এমনকি তার জীবনেরও নিরাপত্তা নেই বিবেচনা করে দেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজেই সুবিচার না পেয়ে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।)
পরবর্তীতে হাসিনা শেখের নির্দেশ মতোই প্রচলিত সংবিধানের রক্ষক হওয়া সত্ত্বেও প্রধান বিচারপতিকে মধ্যরাতে জোড় করে টেনে হিঁচড়ে বিছানা থেকে উঠিয়ে পদত্যাগ করতে বলা হলে তিনি পদত্যাগ করতে অস্বীকার করলে তার উপরে নেমে আসে নারকীয় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার।অস্ত্রের মুখে আর পিস্তলের বাটের আঘাতে জর্জড়িত বিচারপতিকে চোখ বেঁধেই পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করানো হয়।স্বাক্ষরের পর তাকে গৃহ বন্দি করে রাখা হয়। হাসিনা শেখের অস্ত্রধারী ইতর/দুর্বৃত্তরা (অবৈধ এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক, অবৈধ আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, মেজর জেনারেল(অব:) তারেক সিদ্দিকী এবং নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল আকবর এবং অন্যান্য)ছাড়া কাউকেই প্রধান বিচারপতি সিনহার সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি।
নির্লজ্জ্যের মতো হাসিনা শেখ, তার কুলাঙ্গার ছেলে সজীব আহমেদ জয়, ঠুঁটোজগন্নাথ রাষ্ট্রপতি এবং হাসিনা শেখের অস্ত্রধারী ইতর/দুর্বৃত্তরা মিডিয়ার মাধ্যমে জনগনের উদ্দেশ্যে মিথ্যার পর মিথ্যা প্রচার করতে থাকে। প্রধান বিচারপতিকে কখনও সুস্থ, কখনো অসুস্থ, কখনো অপরাধী, কখনো অসৎ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে অভিহিত করা হয়।অথচ হাসিনা শেখ নিজেই তৃতীয় গ্রেডের একজন উকিলকে নিজ স্বার্থ্য চরিতার্থে দেশের প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিলেন।তাকে দিয়েই বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে নিরপরাধ কিছু লোকজনদেরকে ফাঁসির রশিতে ঝুঁলিয়ে লংকাধিপতি রাবন শাসনের সূচনা করেন।সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতিদেরকে বঙ্গভবনে ডেকে বলা হলো,"সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পরিণতি থেকে আপনারা শিক্ষা নিতে পারেন।এটা হাসিনা শেখের দেশ। তার কথা যারা না শুনবে তাদের সকলেরই একই পরিণতি হবে।" শুধু সুপ্রিম কোর্ট নয়, পুরো বাংলাদেশের বিচারকরা ভুলে গেলেন সংবিধান।হাসিনা শেখের নির্দেশ তাদের সংবিধান। হাসিনা শেখের অস্ত্রধারী ইতর/দুর্বৃত্তদের হাত থেকে যদি দেশের প্রধান বিচারপতিই রেহাই না পান তবে দেশের কোনো বিচারপতিরাই রেহাই পাবেন না।সংযোজন করা হলে হাসিনা সংবিধান নামের চটি বই। ঐ চটি বইয়ের বাহিরে গিয়ে কোনো মামলার রায় দিলে যে কোন বিচারকদের এস কে সিনহার পরিণতিই ভোগ করতে হবে।
সুতরাং আজকের বাংলাদেশের পুরো বিচার ব্যবস্থা চালিত হচ্ছে হাসিনা সংবিধান নামের চটি বইয়ের উপর নির্ভর করে যার সাথে সংবিধানের কোন সম্পর্কই নেই। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারকের মাথা একটি। হাসিনা শেখের অস্ত্রধারী ইতর/দুর্বৃত্তদেড় হাত থেকে বেঁচে থাকতে হলে হাসিনা সংবিধানের কোনো বিকল্প নেই! গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকেরও মাথা একটিই। তারও বেঁচে থাকার উপায় হাসিনা সংবিধান নামের চটি বই।শুধুমাত্র বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাই নয়, ১৭ কোটি বাংলাদেশী জনগণ বাঁচবে কি মরবে সেটাও নির্ভর করছে হাসিনা সংবিধান নামক চটি বইয়ের উপর।
দেশের সবার জীবন যখন হাসিনা সংবিধানের দ্বারা চালিত তখন বেগম খালেদা জিয়ার হাজত বাস, মাওলানা নিজামীর ফাঁসি, মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর হাজতবাস অথবা কুষ্টিয়ার আদালতে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের উপর হামলা নিয়ে মক্ষীরানী হাসিনা শেখ লজ্জার মাথা খেয়ে লোফারদের সামনে সাংবাদিক সম্মেলনের নামে তার বুড়ী শরীরে যৌবনের উপলব্দি নিয়ে ঠাট্টা মস্করা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আর অন্য দিকে দেশমাতৃকা বাংলাদেশ হারিয়ে যাচ্ছে ১৭ কোটি বাংলাদেশীদের জীবন থেকে।
দেশের প্রতিটি মানুষ যদি এখনো যারযার অবস্থান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় তবে কোনো একসময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের মতোই উচ্চারিত হবে আমাদের দেশমাতা বাংলাদেশের নাম ঠিক যেমনি আজ আমরা সিক্কিমের নাম উচ্চারণ করি। হাসিনা শেখের নাম কাজী লেন্দুপ দর্জির পাশাপাশি উচ্চারিত হলেও তার কিছু আসবে যাবে না যেহেতু তিনি ইতিমধ্যেই দেশের অস্তিত্বের বিনিময়ে নিজের এবং বোনের সন্তান সন্তদিদেরকে বিলিওনিয়ার বানিয়েছেন আর গরীব জনগণের পয়সা খরচ করে শ'খানেক ডিগ্রী আর খেতাব ক্রয় করে রেখেছেন কবরে নিয়ে যাওয়ার জন্য; যদি স্রষ্টা তার ভাগ্য কবর রেখে থাকেন।
Jacob Milton
Face of A Nation (FAN)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন