Home » » মৃত গোলাম আযমের মামলা কার্যক্রম বাতিল

মৃত গোলাম আযমের মামলা কার্যক্রম বাতিল

Written By Unknown on মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ | ৫:০৭ AM

মৃত গোলাম আযমের
মামলা কার্যক্রম
বাতিল
ঢাকা : দীর্ঘ প্রায় ছয়মাস পর
জামায়াতের সাবেক আমির
প্রয়াত গোলাম আযমের
যুদ্ধাপরাধের
মামলাটি অ্যাবেটেড
(কার্যক্রম বাতিল)
ঘোষণা করলেন
সুপ্রিমকোর্টে আপিল
বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র
কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন
আপিল বিভাগের পাঁচ
বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এ
আদেশ দেন।
গতকাল সুপ্রিমকোর্টের
আপিল বিভাগের
কার্যতালিকায় আদেশের জন্য
গোলাম আযমের
মামলাটি ২নং রাখা হয়েছিল।
সেখানে লেখা ছিল, প্রফেসর
গোলাম আযম বনাম চিফ
প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
জামায়াতের এই প্রয়াত নেতার
বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের
দায়ে ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই ৯০
বছরের সাজা দিয়ে রায়
ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
সে রায়ের
বিরুদ্ধে তিনি ২০১৪ সালের ৫
আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের আপিল
বিভাগে একটি আপিল আবেদন
দায়ের করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২
ডিসেম্বর এ মামলার আপিল
আবেদনটি শুনানির জন্য দিন
ধার্য করা হয়। ২০১৪ সালের ২৪
অক্টোবর
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন
গোলাম আযম।
মারা যাওয়ার দীর্ঘ্য প্রায় ছয়
মাস পর তার মামলাটির
কার্যক্রম
আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত
করলেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ এ
মামলার কার্যক্রম আর
চলবে না বলে ঘোষণা দিলেন
সুপ্রিমকোর্টের আপিল
বিভাগ।
ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো মামলা চলাকালীন
সময়ে যদি এ মামলার
আসামি মারা যান
তাহলে মামলাটি আর চলে না।
তখন এ মামলার কার্যক্রম বাতিল
করে দেয়া হয় আদালতের পক্ষ
থেকে। গোলাম আযমের মামলার
ক্ষেত্রেও তাই করা হলো।

ব্যাপারে জানতে চাইলে সরকারের
প্রধান আইন
কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল
মাহবুবে আলম লেন, ‘গোলাম
আযমের মৃত্যুর
কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ
মামলাটি আজ থেকে অকার্যকর
হয়ে গেল। এর আগে এ
ব্যাপারে বলেছিলেন,
‘মৃত্যুর পর কারো মামলার
বিচারিক কার্যক্রম
পরিচালনার বিধান নেই। তাই
স্বাভাবিকভাবেই এ
মামলা অকার্যকর, বাতিল
হয়ে গেল।’
জানতে চাইলে আসামি পক্ষের
আইনজীবী অ্যাডভোকেট
শিশির মোহাম্মাদ মনির বলেন,
‘ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো মামলা চলাকালীন
সময়ে যদি এ মামলার
আসামি মারা যান
তাহলে সে মামলাটি আর
চলতে পারে না। তখন
আনুষ্ঠানিকভাবে আদালত এ
মামলার কার্যক্রম বিলুপ্ত/
বাতিল ঘোষণা করে দেন।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু গোলাম
আযম তার রায়ের
বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল
করেছিলেন। সে আপিলটি চলমান
ছিল। কিন্তু
তিনি মারা যাওয়ায় তার
সাজার বিরুদ্ধে দায়ের
করা আপিলের কার্যক্রম
চলবে না, শুনানিও হবে না।
কারণ তিনি মারা গেছন।
তিনি বলেন, মৃত ব্যাক্তির
বিরুদ্ধে মামলা কোন
ফৌজদারি মামলা চলে না। তাই
আদালত তার মামলার কার্যক্রম
অনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাবেটেট
বা বিলুপ্তি ঘোষণা করলেন
আদালত।
এর আগে একই অপরাধে আমৃত্যু
কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত
আব্দুল আলীম মারা যাওয়ায়
তার আপিল মামলাটিও অকার্যকর
ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, ৯২ বছর বয়সী গোলাম
আযম গত ২৩ অক্টোবর
রাতে কারবন্দি থাকা অবস্থায়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ)
মারা যান। অসুস্থতার
কারণে রায়ের আগে থেকেই ওই
হাসপাতালের প্রিজন
সেলে রেখে বিচার করা হয়।
রায়ের পরও সেখানেই
সাজা খাটছিলেন তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধে গোলাম
আযমের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের
৬১টি অভিযোগই
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত
হয়। পাঁচ ধরনের অভিযোগেই
তার ভিন্ন ভিন্ন সাজা হয়। সব
মিলিয়ে তাকে ৯০ বছরের
কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার্
অপরাধের উপযুক্ত
সাজা মৃত্যুদণ্ড হলেও
বার্ধক্যজনিত
কারণে তাকে ৯০ বছরের
কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর মধ্যে এক নম্বর ষড়যন্ত্রের
অভিযোগে ১০ বছর, ২ নম্বর
অভিযোগে পাক হানাদার
বাহিনীকে সহযোগিতায় ১০ বছর,
৩ নম্বর
অভিযোগে ব্যক্তিগতভাবে নির্যাতনের
দায়ে ২০ বছর, ৪ নম্বর
পরিকল্পনার
সঙ্গে সম্পৃক্ততায় ২০ বছর
এবং ৫ নম্বর হত্যা ও গণহত্যায়
জড়িত থাকায় ৩০ বছর কারাদণ্ড
দেয়া হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইব্যুনাল-১ এর রায়ে ৯০
বছরের কারাদণ্ডাদেশের
বিরুদ্ধে আপিল করে খালাস
চেয়েছিলেন গোলাম আযম।
অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের
সাজা অপর্যাপ্ত উল্লেখ
করে তার সর্বোচ্চ
সাজা মৃত্যুদণ্ড ও জামায়াত
নিষিদ্ধের আবেদন
জানিয়ে আপিল
করে রাষ্ট্রপক্ষও।
অন্যদিকে বিচার
চলাকালে মারা যাওয়ার
কারণে একাত্তরের
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত
জামায়াতের সিনিয়র
নায়েবে আমির একেএম ইউসুফের
বিরুদ্ধে মামলা আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত
বিলুপ্ত করে গত ১২
ফেব্রুয়ারি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন
ট্রাইব্যুনাল-২।
মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার
বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা একেএম
ইউসুফের মামলার বিচারিক
প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে ছিল।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন