Home » » তোমার জন্য হে স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জীবনে এক গৌরবদীপ্ত দিন আজ, ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ সূচনার দিন।

তোমার জন্য হে স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জীবনে এক গৌরবদীপ্ত দিন আজ, ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ সূচনার দিন।

Written By Unknown on বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫ | ১১:০২ AM

তোমার জন্য হে
স্বাধীনতা
বাঙালি জাতির জীবনে এক
গৌরবদীপ্ত দিন আজ, ২৬ মার্চ। মহান
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ৩০ লাখ
শহীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ সূচনার
দিন। হাজার বছরের শোষণ-বঞ্চনার
কবল থেকে মুক্ত হওয়ার দিন। স্বাধীন-
মুক্ত দেশের জন্য অকাতরে
আত্মাহুতির অনন্য ইতিহাস সৃষ্টির
দিন।
রাজনৈতিক সহিংসতা ও
হানাহানিমুক্ত বাংলাদেশের
প্রত্যাশা সামনে রেখে আজ
দিবসটি উদযাপন করবে জাতি। দগ্ধ
মানুষের কান্নার অবসান হোক_
কায়মনে এ কামনা করবে সবাই। একই
সঙ্গে ৪৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয়
দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর
কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা হবে
স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী
দেশের বীরসন্তানদের। শ্রদ্ধা
নিবেদন করা হবে স্বাধীনতার
রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত
নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুশেখ
মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক
জাতীয় নেতাদের এবং নৃশংস
গণহত্যার শিকার সাধারণ মানুষ ও
সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের প্রতি।
২৬ মার্চ দিনটি জাতির জীবনে একই
সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার।
স্বাধিকারের দাবিতে জেগে ওঠা
নিরীহ বাঙালির প্রতি ২৫ মার্চ
রাতে পাকিস্তানি হানাদার
সেনারা যে বর্বর গণহত্যা
চালিয়েছিল, সেই মৃত্যুর বিভীষিকা
থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল
দেশের মুক্তিপাগল বীরসন্তানরা। ২৫
মার্চের গভীর রাতে ধানমণ্ডির ৩২
নম্বর বাড়িতে গ্রেপ্তার হওয়ার
আগেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা
দিয়েছিলেন। তার ডাকে সাড়া
দিয়ে নিরস্ত্র বাঙালিরা
যেভাবে একটি সুশৃঙ্খল অত্যাধুনিক
সমরাস্ত্রে সজ্জিত সামরিক
বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে
দাঁড়িয়েছিল, পৃথিবীর ইতিহাসে
তার দৃষ্টান্ত বিরল।
অবশ্য পাকিস্তানি হানাদারের কবল
থেকে দেশ মুক্ত করার এ প্রতিরোধযুদ্ধ
শুরু হয়েছিল আগে থেকেই।
একাত্তরের অগি্নঝরা উত্তাল
মার্চের নানা ঘটনার
ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের
ঐতিহাসিক ভাষণের আহ্বানে
গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিও
শুরু করে দিয়েছিল। আর ২৬ মার্চের
বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার
ঘোষণায় সূচনা ঘটে সশস্ত্র
মুক্তিযুদ্ধের। নয় মাস চলা সে
মুক্তিযুদ্ধে একদিকে রচিত হয়
ইতিহাসের মহীয়ান অধ্যায়,
মুক্তিকামী বাংলার মানুষের
বীরত্বগাথা। অন্যদিকে ছিল
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর
নির্বিচার গণহত্যা, নারী ধর্ষণ ও
লুটতরাজের কলঙ্কিত অধ্যায়।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায়
হানাদার বাহিনীর আনুষ্ঠানিক
আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই মুক্তিযুদ্ধের
চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বিশ্ব
মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামের
রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
জীবন উৎসর্গ করে শত্রুর মুখোমুখি
দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তির
সংগ্রাম শেষে বাঙালি পরাজিত
করেছিল হানাদারদের। ছিনিয়ে
এনেছিল বিজয়। কিন্তু সেই
সংগ্রামে এ দেশেরই কিছু কুলাঙ্গার
হাত মিলিয়েছিল নিজের ভাই,
নিজের মা-বোনের ওপর
হামলাকারীদের সঙ্গে।
স্বাধীনতার পর উদ্যোগ নেওয়া
হয়েছিল সেই রাজাকার-আলবদরদের
বিচারের। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের মধ্য
দিয়ে সেই বিচারের উদ্যোগ বন্ধ
হয়ে ছিল বহুকাল। সরকারি
পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের
চেতনাবিরোধী সেই পরাজিত
শত্রুদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ করে
দেওয়া হয়েছিল। এমনকি দিন দিন
তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতারও অংশীদার
হয়ে উঠেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের
সত্যিকার ইতিহাস বিকৃত করে নতুন
প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার গভীর
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। অবশেষে
চার দশকের প্রতীক্ষা শেষে
একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের
বিচার হচ্ছে, শাস্তিও হয়েছে শীর্ষ
অপরাধীদের; কিন্তু এখনও ধর্মের
নামে ওই অপশক্তির রাজনীতি
নিষিদ্ধ হয়নি।
এবার যখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
করা হচ্ছে, তখন বার্ন ইউনিটে শুয়ে
বোমায় দগ্ধ মানুষ কাতরাচ্ছে। গত ৫
জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের এক বছর পূর্তিকে কেন্দ্র
করে অবরোধ-হরতালের নামে যে
সহিংসতা শুরু হয়েছে তাতে এ পর্যন্ত
নিহত হয়েছেন ১২৮ জন। নিহতদের
মধ্যে ৭২ জনই পেট্রোল বোমা ও
আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। দগ্ধ
হয়ে যারা বেঁচে আছেন, তাদের
সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এ
অবস্থার অবসান সাধারণ মানুষের
কাছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত এখন।
মন্তব্য
প্রিন্ট সংস্করণ, প্রকাশ : ২৬
মার্চ ২০১৫, ০১:৫৩:৩১
| আপডেট : ২৬ মার্চ ২০১৫,
১১:০৬:২৭

অ-
অ+
সমকাল প্রতিবেদক

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন