Home » » কক্সবাজার জেলার দুটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়ার একটি চরে স্থানান্তরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া চলছে।

কক্সবাজার জেলার দুটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর হাতিয়ার একটি চরে স্থানান্তরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া চলছে।

Written By Unknown on শনিবার, ২০ জুন, ২০১৫ | ১১:১৩ AM

ভারত বিভাগ–পূর্ব যুগে দেশে
রাজনৈতিক অপরাধে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আন্দামান
দ্বীপপুঞ্জের একটি কারাগারে
পাঠানো হতো। নিয়ম-নীতির
বেড়াজাল আর দুর্গম
যোগাযোগব্যবস্থার কারণে
তারা প্রায় সারা জীবনের জন্য
পরিবারের সঙ্গে হয়ে পড়ত
সম্পর্কবিহীন। একপর্যায়ে সশস্ত্র
আন্দোলনের মাধ্যমে যাঁরা
ভারতের স্বাধীনতার প্রচেষ্টা নেন,
তাঁদের অনেককেও সেখানে
পাঠানো হয়েছে। সেই শাস্তি
ব্যাপকভাবে দ্বীপান্তর বলে পরিচিত
ছিল। এখন এ ধরনের শাস্তির যুগ শেষ
হয়েছে। বিভিন্ন দ্বীপে সাহসী
মানুষ বসতি স্থাপন করছে বাঁচার
তাগিদে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস তাদের
নিত্যসঙ্গী। প্রায়ই তাদের
জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে অনেক
আলোকিত ব্যক্তিত্বও এসব দ্বীপে
বসবাস করেন। শিক্ষা-সংস্কৃতিরও
ঘটেছে ব্যাপক প্রসার। তবে
আলোচিত বিষয়টি এরূপ কোনো
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে চালান করে
দেওয়া সম্পর্কে নয়; বরং শিবিরে
জীবনযাপনকারী ৩২ হাজার
লোকের একটি দ্বীপে স্থানান্তর
প্রসঙ্গ।
খবরে প্রকাশ, কক্সবাজার জেলার দুটি
শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকারী
রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর
হাতিয়ার একটি চরে স্থানান্তরের
প্রাথমিক প্রক্রিয়া চলছে। তারা
মিয়ানমারের আরাকান থেকে
বিতাড়িত হয়ে এ দেশে এসেছিল
১৯৯১ সালে। এসেছিল প্রায় আড়াই
লাখ। দ্বিপক্ষীয় সমঝোতায় অন্যরা
স্বদেশে ফিরে গেছে বিভিন্ন
পর্যায়ে। অবশিষ্টদের ভাগ্যে রয়ে
গেছে সিকি শতাব্দীর শিবিরজীবন।
ইতি অজানা। সেই সময়ে এখানে জন্ম
লাভ করা বহু শিশু আজ শিশুর মা-বাবা।
বাংলাদেশ সরকার ও উদ্বাস্তুবিষয়ক
জাতিসংঘ হাইকমিশনের যৌথ
ব্যবস্থাপনায় শিবির দুটি পরিচালিত
হয়। শিবিরবাসীর অনেকেই শিক্ষা-
দীক্ষাহীন। অনেকটা অমানবিক
পরিবেশে বসবাস করছে দীর্ঘকাল।
নিজের বলতে কিছুই নেই। উপেক্ষিত
সর্বত্র। তাই এ জনগোষ্ঠীর একটি অংশ
স্থানীয় প্রভাবশালী দুর্বৃত্তদের
হাতের ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়
কখনো কখনো। জড়িয়ে পড়ে
বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে। তবে
তারা সবাই অপরাধী নয়। অপরাধ
দেশের সর্বত্রই ঘটে চলেছে। তবু
পরিস্থিতির শিকার এ
লোকগুলোকে পাইকারিভাবে
অপরাধী বলে চিহ্নিত করেছে কেউ
কেউ।
শিবিরে বসবাসকারীদের বাইরেও
প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা
কক্সবাজার ও পাশের জেলাগুলোর
জনজীবনে মিশে আছে। হয়তোবা
ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বাড়ছেও।
যে অবস্থায় তারা আরাকান প্রদেশে
আছে, তা গণমাধ্যমের কল্যাণে সবারই
জানা। তাই সেখান থেকে যে
যেভাবে যেদিকে পারছে
পালাতে চাইছে। এমনকি অকূল সমুদ্রে
মাছ ধরার নৌকায় পাড়ি দিয়ে
আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছে
বিপুলসংখ্যক নর-নারী ও শিশু। এভাবে
আমাদের দেশ থেকেও কিছু লোক
যাচ্ছে বটে। তবে তাদের উদ্দেশ্য
উন্নত জীবনযাত্রার সন্ধান। আর
রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশুরা এটি
ছাড়াও নিরাপত্তার সন্ধানে ছুটে
বেড়াচ্ছে। মনে হয়, বিশ্ববাসীর
তাদের জন্য তেমন কিছু করার নেই।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও
জাতিসংঘের মহাসচিব তাদের
নাগরিকত্ব ও মানবাধিকারের
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার
মিয়ানমারকে চাপ দিয়েছেন। এখন
দিচ্ছেন আরও অনেকে। কিন্তু তাতে
তেমন ফল পাওয়া যাবে, এমনটা মনে
হয় না। সে দেশের মানবাধিকার
আন্দোলনের জন্য বিশ্বনন্দিত নেত্রী
অং সান সু চিও আজ চুপ মেরে আছেন।
মনে হচ্ছে তাঁরা রোহিঙ্গাদের
সে দেশ থেকে সমূলে বিতাড়নে
দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সম্প্রতি ব্যাংককে
অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সম্মেলনেও তাঁদের
অনড় অবস্থানের কারণে মানব পাচার
প্রতিরোধ কার্যক্রমে আশানুরূপ
অগ্রগতি হয়নি।
অন্যদিকে, পরিস্থিতির শিকার
আমাদের জনবহুল দেশটি। সীমান্ত
নিরাপত্তা বাহিনী সব অনুপ্রবেশ
সামলাতে পারে না। তাই প্রায়ই
কিছু না কিছু ঢুকে পড়ছে আমাদের
দেশে। অবশ্য শিবিরের বাইরে
জনগণের সঙ্গে মিশে যাওয়া
রোহিঙ্গারা পরিশ্রম করে
জীবিকা অর্জন করে। কম মূল্যে শ্রম
পাওয়া যায় বলে তাদের চাকরি
জুটে যায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের
কল্যাণে। তাঁদেরই কেউ কেউ আবার
বিভিন্ন সভা-সমাবেশে
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ও
সামাজিক বিরূপ প্রভাব নিয়ে সরব
আলোচনায় লিপ্ত হন। শিবিরে
বসবাসকারীদের হাতিয়ায় সরিয়ে
নেওয়া হলেও অচিহ্নিতরা থেকেই
যাবে যার যার নতুন ঠিকানায়। সেটা
যাই হোক, ধরে নেওয়া হয় শিবির
দুটি অন্য পার থেকে শরণার্থী
আসাকে হয়তো উৎসাহিত করছে।
তবে বিষয়টি অনেক ব্যাপক ও গভীর।
শিবির তুলে দিলেও প্রাণ বাঁচাতে
ও পেটের টানে তাদের আসা
ঠেকানো কঠিন।
মিয়ানমার সরকার তাদের দেশে
অধিবাসী রোহিঙ্গাদের জন্য
দেশটিকে জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ডে
পরিণত করেছে। কেড়ে নেওয়া
হয়েছে নাগরিক অধিকার, সম্পদের
মালিকানা এমনকি বেঁচে থাকার
অধিকারও। সেই রাষ্ট্রটির মোট
জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ এ হতভাগ্য
আদম সন্তানেরা। আর এদের ৯০
শতাংশই বসবাস করে আরাকান
অঞ্চলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালেও
রোহিঙ্গা বিতাড়ন কার্যক্রম চলে।
আবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার
পর ১৯৭৪ সালে মিয়ানমার
রোহিঙ্গা উচ্ছেদ অভিযান চালায়।
হাজার হাজার রোহিঙ্গা
যুদ্ধবিধ্বস্ত দুর্ভিক্ষপীড়িত
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।
তখনকার বঙ্গবন্ধু সরকারের দৃঢ়তায়
মিয়ানমার তাদের ফেরত নিতে
বাধ্য হয়। আবার ’৭৭ সালে আসে প্রায়
দুই লাখেরও অধিক। কূটনৈতিক চাপে
১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তাদেরও ফেরত নেয়
সে দেশ। তবে ১৯৯০ সালে যারা এল,
রয়ে গেছে তাদের রেশ। আর
অবশিষ্টদের বিতাড়নের প্রক্রিয়াও
থেমে নেই। মিয়ানমারকে তাদের এ
নীতি থেকে বিরত করতে না
পারলে সমস্যাটি রয়েই যাবে।
কক্সবাজারের বনজঙ্গল কেটে এর
পরিবেশ বিপর্যয় রোহিঙ্গারা
করছে—এমন অভিযোগ হামেশাই করা
হয়। আর এ বনজঙ্গল উজাড়ের মূল
নায়কেরা সাধু সেজে থাকতে চান।
আমাদের দু-তিনটি জেলাতেই
রোহিঙ্গা রয়েছে। এর বাইরে
দেশের সর্বত্র খাল–বিল, নদী–নালা,
পাহাড়, জঙ্গল বিরান করছে কোন
রোহিঙ্গারা? জঙ্গি কার্যক্রমও কিছু
পরিমাণে আছে দেশের অন্যত্রও। তাই
এসব বিষয়ে শুধু রোহিঙ্গাদের দোষ
দিয়ে লাভ নেই। অবশ্য এ বক্তব্য তাদের
এ দেশে আসা বা থাকতে দেওয়ার
সপক্ষে নয়। রোহিঙ্গারা এ দেশে
আসবে না এবং যারা এসেছে, তারা
নিজ দেশে ফিরে যাবে—এটাই
আমাদের নীতি। এ বিষয়ে কোনো
বিতর্ক নেই। জনবহুল এ দেশটিতে আমরা
নিজ জনগণকে স্থান দিতে পারছি
না। আটকে পড়া পাকিস্তানিরা
তো রয়েই গেল। তবে
রোহিঙ্গারা আমাদের নিকট
প্রতিবেশী দেশ থেকে বারংবার
আসে, ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরেও আসে,
তাদের ফেরত নেয় না মিয়ানমার
সরকার। তাই এ বিষয়টি আমাদেরও
সমস্যা বটে। এটা বিশ্বসমাজকে
অব্যাহতভাবে জানাতে হবে। সব
প্রচেষ্টা নেওয়া দরকার এর একটি
স্থায়ী সমাধানে।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিশ্বসমাজ
একেবারে চুপ করে আছে, এমনটি বলা
যাবে না। জাতিসংঘের
শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের
সহায়তায়ই শিবিরগুলো পরিচালনা
করা হয়। তবে এসব শিবিরবাসী
রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোনো
দেশে পুনর্বাসনের যথেষ্ট সুযোগ
রয়েছে। ভুটান থেকে শরণার্থী হওয়া
প্রায় এক লাখ নেপালিকে যুক্তরাষ্ট্র,
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের
কয়েকটি দেশ নিয়ে নিয়েছে। আর
পত্রপত্রিকার তথ্য অনুসারে, ২০০৬
থেকে ২০১০ সালের মাঝে মাত্র ৯২৬
জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তৃতীয়
দেশে পুনর্বাসন সম্ভব হয়েছে। এ
দেশগুলো হলো কানাডা,
যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র,
নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন ও
অস্ট্রেলিয়া। সমস্যার ব্যাপকতা আর
এসব দেশের সামর্থ্যের বিবেচনায়
বলতে হবে, এ যেন পর্বতের মূষিক প্রসব।
তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের ব্যাপারে
মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলো অত্যন্ত
অনুদার নীতি অনুসরণ করছে। অথচ
তাদের রয়েছে বিশাল ভূখণ্ড ও অঢেল
সম্পদ। প্রয়োজন রয়েছে প্রচুর
শ্রমশক্তির। মালয়েশিয়া অতিসম্প্রতি
এ ধরনের কিছু করার কথা আলোচনায়
এলেও এর আকৃতি ও প্রকৃতি অস্পষ্ট।
তবে তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন শেষ
প্রচেষ্টাই বলতে হবে। প্রথমে দেখতে
হবে মিয়ানমার যেন তাদের স্বীয়
মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে
বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে। তখন
সম্ভবত তারা অনেকেই অন্য কোথাও
যেতে এমনভাবে আগ্রাসী প্রচেষ্টা
নেবে না। আর আমাদেরও
শিবিরবাসীর দ্বীপান্তরের মাধ্যমে
সমস্যা সমাধানের উদ্যোগটির সব
দিক তলিয়ে দেখা দরকার। এতে
আদৌ সমস্যা সমাধান না হয়ে নতুন
সমস্যা সৃষ্টি করবে কি না, তা নিয়ে
ভাবার আছে। আর বাংলাদেশে
বসবাসকারী রোহিঙ্গারা তো শুধু
৩২ হাজার নয়, কয়েক লাখ। তদুপরি সেই
অবশিষ্টরা অচিহ্নিতও বটে।
আলী ইমাম মজুমদার : সাবেক
মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
majumder234@yahoo.com
Posted 3 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আলী ইমাম মজুমদার, আলোচনা,
উপ-সম্পাদকীয়, প্রথম আলো, মতামত,
রোহিঙ্গা
20
JUN রোহিঙ্গা সমস্যা-
দ্বীপান্তর সমস্যার সমাধান
নয় by আলী ইমাম মজুমদার
Notify me
Comment as:
Publish
Preview
0 Add a comment
মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে
আটক এক বাংলাদেশী সীমান্ত
রক্ষীর যে ছবি ফেসবুকে প্রকাশ
করেছে, তা বাংলাদেশে ব্যাপক
ক্ষোভ তৈরি করেছে। অনেকেই
ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করছেন এবং
আটক সীমান্তরক্ষীর সঙ্গে অবমাননাকর
আচরণের অভিযোগ তুলছেন
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ
বর্ডার গার্ডস বা বিজিবির সদস্য আবদুর
রাজ্জাককে গত মঙ্গলবার টেকনাফের
নাফ নদী থেকে মিয়ানমারের
সীমান্ত রক্ষীরা ধরে নিয়ে যায়।
সেদিন দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীদের
মধ্যে গোলাগুলিতে বিজিবির অপর
এক সদস্য আহত হন। অপহৃত বিজিবি সদস্য
আবদুর রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার
জন্য বাংলাদেশ গত কয়েকদিন ধরে
চেষ্টা চালালেও এখনো কোন
অগ্রগতি হয়নি। এ নিয়ে দুদেশের
সম্পর্কে টানাপোড়েনও দেখা
যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায়
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে
বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী
বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বিবিসি
বাংলাকে জানিয়েছেন যে
ছবিটি ফেসবুকে অনেকেই শেয়ার
করছেন সেটি বাংলাদেশের
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য আব্দুর
রাজ্জাকের। ফেসবুকে শেয়ার করা
ছবিতে দেখা যাচ্ছে আবদুর
রাজ্জাককে হাতকড়া পরানো
অবস্থায় একটি চেয়ারে বসিয়ে
রাখা হয়েছে। তাঁর পরনে লুঙ্গি আর
বিজিবির ইউনিফর্ম। আরেকটি
ছবিতে দেখা যায় তার সামনে কিছু
অস্ত্র রাখা। মিস্টার রাজ্জাকের
মুখে আঘাতের চিহ্ণও দেখা যাচ্ছে।
তাঁর নাকের কাছে ক্ষতচিহ্ণ এবং
শুকিয়ে কালচে হয়ে যাওয়া রক্তের
দাগ।
বিবিসির বার্মিজ সার্ভিসের
সাংবাদিক কো কো আং নিশ্চিত
করেছেন যে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষই
এই ছবিটি প্রকাশ করেছেন। তিনি
জানান, মিয়ানমারের
সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট একটি
সংবাদপত্র মায়াওয়াদিতে ছবিটি
প্রকাশ করা হয়। তাদের ওয়েবসাইটে
অবশ্য এখন আগের ছবিটি সরিয়ে একটি
নতুন ছবি দেয়া হয়েছে যেটিতে
আবদুর রাজ্জাককে দাঁড়িয়ে থাকতে
দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবেশী একটি দেশের একজন
সীমান্ত রক্ষীকে ধরে নিয়ে গিয়ে
মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ যে আচরণ
করেছে তাকে বাংলাদেশের
অনেকেই অবমাননাকর এবং চরম
আপত্তিকর বলে মনে করছেন।
অনেকেই এটিকে জাতীয় লজ্জা বলে
বর্ণনা করেছেন।
ফেসবুকে এম এম আমিনুর রহমান
লিখেছেন , বার্মার মতো দুর্বল একটি
দেশের সীমান্তরক্ষীরা ধরে নিয়ে
বেঁধে রেখেছে? এই লজ্জা দেশের,
এই লজ্জা পুরো জাতির । ফেসবুকে
আরাফাত সিদ্দিকী নামে আরেকজন
লিখেছেন , আমাদের বিজিবি সদস্য
নায়েক রাজ্জাকের শিকল দিয়ে
হাত বাঁধা ছবিটি যতবার চোখে
পড়ছে ততবারই মনে হচ্ছে মিয়ানমার
বাহিনী আমাকেই বেঁধে রেখেছে।
আজ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক
সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন
বিজিবি সদস্য অপহরনের ঘটনা জাতির
জন্য লজ্জা । সূত্র- বিবিসি বাংলা
Posted 5 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: Lead, জাতীয়, মানবজমিন,
মিয়ানমার, সীমান্ত সন্ত্রাস
20
JUN বাংলাদেশী
সীমান্তরক্ষীর সঙ্গে
মিয়ানমারের আচরণে
ক্ষোভ
0 Add a comment
মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশ (বিজিপি)
কর্তৃক অপহৃত বর্ডার গার্ড
বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক
আবদুর রাজ্জাককে চার দিন পার হয়ে
গেলেও ফেরত দেয়নি মিয়ানমার
পুলিশ। এমনকি ফেরত দেয়ার বিষয়ে
পতাকা বৈঠকেও সাড়া দিচ্ছে
তারা। ঘটনার চার দিন পার হয়ে
গেলেও এখনো দু’ দেশের মধ্যে
পতাকা বৈঠক হয়নি। এদিকে
মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া
বিজিবি সদস্য নায়েক আবদুর
রাজ্জাককে হাতকড়া পড়িয়ে
ফেইসবুকে ছবি প্রকাশ করেছে
মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ।
বিজিবি সদস্য রাজ্জাককে
মিয়ানমারের একটি সীমান্ত ক্যা
¤েপ হাতকড়া পড়ে আটকে রাখা
হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে
নায়েক রাজ্জাকের মুখম-লে রক্তের
দাগ রয়েছে। ছবিতে নায়েক
রাজ্জাকের সামনে ১টি এম ২২
রাইফেল, গুলি, ৪টি মোবাইল সেট ও
২টি টর্চ লাইট দেখা গেছে।
বিজিবি নায়েক রাজ্জাককে
হাতকড়া দিয়ে অমানবিক ভাবে
আটকে রাখায় বিজিবির পক্ষ থেকে
কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ৪২
বিজিবির অধিনায়েক লে.কর্নেল
আবু জার আল জাহিদ ঘটনার পর থেকে
যে কোন সময়য়ে পতাকা বৈঠক হতে
পারে বলে দাবি করে আসলেও চার
দিন পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত
বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ
বলেন, নাফনদীতে গুলি বর্ষণ ও নিয়ে
যাওয়া নায়েক রাজ্জাককে
ফেরতের বিষয়ে বৃহ¯পতিবার সকাল
১০টায় কক্সবাজার টেকনাফে স্থলবন্দর
রেস্ট হাউজে মিয়ানমার সীমান্ত
পুলিশ (বিজিপি) ও বর্ডার গার্ড
বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে
পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা
থাকলেও তা হয়নি। মিয়ানমার পুলিশ
বৃহস্পতিবার পতাকা বৈঠকে আসার
কথা ছিল শেষ পর্যন্ত তারা
মিয়ানমার উধ্বর্তন কতৃপক্ষের অনুমতি
না পাওয়ায় তারা আসেনি বলে
জানান।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সঙ্গে
আজ (শনিবার) যোগাযোগ করা
হয়েছে। তারা এখনও কোন সাড়া
দেয়নি। তারা ঊধ্বর্তন কতৃপক্ষের
অনুমতি পেলে বৈঠকে আসবে বলে
বিজিবিকে জানিয়েছে। তাদের
সঙ্গে যোগাযোগ অব্যহত রয়েছে।
মিয়ানমার পক্ষ সাড়া দিলে পতাকা
বৈঠক মাধ্যমে নায়েক রাজ্জাককে
ফেরত আনা হবে বলে জানান কর্নেল
আবু জার আল জাহিদ।
গত বুধবার সকালে নাফ নদীতে
বাংলাদেশের জলসীমায় দুটি
নৌকায় তল্লাশি চালায় টহলরত
বিজিবির একটি দল। এ সময়
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী
বাহিনী বিজিপি পূর্ব দিক থেকে
একটি ট্রলারে করে এসে বিজিবির
টহল দলের ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ
করে। এতে বিজিবির সিপাহি
বিপ্লব কুমার (২১) গুলিবিদ্ধ হন।
একপর্যায়ে আহত বিপ্লব কুমারকে
নিয়ে বিজিবি দল নিরাপদ
অবস্থানে চলে এলেও অপর সদস্য
নায়েক আবদুর রাজ্জাককে তুলে
নিয়ে যায় মিয়ানমারের
সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
এদিকে গোলাগুলির এই ঘটনাকে ভুল
বোঝাবুঝি বলে মন্তব্য করেছেন
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান
খান কামাল বুধবার স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি
বলেন, টেকনাফে দুই দেশের
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ভুল
বোঝাবুঝির কারণেই মিয়ানমারের
বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) গুলি
চালিয়েছে।
Posted 6 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: জাতীয়, মানবজমিন, মিয়ানমার,
সীমান্ত সন্ত্রাস
20
JUN চার দিনেও ছাড়েনি
বিজিবি সদস্যকে,
বৈঠকেও সাড়া দিচ্ছে না
মিয়ানমার
0 Add a comment
চাচা বললেন, দেশের অবস্থা নিয়ে
তুমি এত কথা বলো। কিন্তু এবারের
বাজেট নিয়ে তো তুমি কোন কথাই
বললে না।
বললাম, আমি অর্থনীতিবিদ নই যে,
বাজেট সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতো
মতামত দিতে পারবো। তবে বাজেট
সম্পর্কে আমার নিজস্ব কিছু
প্রতিক্রিয়া আছে।
কী রকম? চাচা জানতে চাইলেন।
চাচা! এবারের বাজেট হচ্ছে অত্যন্ত
ব্যতিক্রমী বাজেট। মাননীয়
অর্থমন্ত্রী নিজেই একজন ব্যতিক্রমী
মানুষ।
কী কারণে তাকে ব্যতিক্রমী বলছো?
তিনি একজন নমস্য ব্যক্তি। তার
হাসিটি বড়ই প্রাণখোলা। ‘রাবিশ’,
‘স্টুপিড’ ইত্যাদি শব্দের সহজাত
ব্যবহারের জন্য তিনি আলোচিত। তবে
আমার মনে ও মননে তিনি আসন
পেতেছেন সৃজনশীল চিন্তাভাবনার
কারণে।
কি সেই সৃজনশীলতা?
ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে একবার
তিনি বলেছিলেন, একদিন জোড়
সংখ্যার গাড়ি এবং একদিন বেজোড়
সংখ্যার গাড়ি চালালে সমস্যার
সমাধান হবে। আরও একটা প্রস্তাব ছিল
তার।
কি প্রস্তাব?
গাড়ি রাস্তায় চলতে হলে চারজনের
কম যাত্রী থাকলে হবে না। একজন বা
দুজন যাত্রী থাকলে গাড়ি চলবে না।
তবে এ প্রস্তাবগুলো কার্যকর করার
কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
কথাগুলো তার পক্ষে গেল, না
বিপক্ষে গেল?
পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে আমি ভাবি না।
তবে কথাগুলো খুবই মৌলিক চিন্তা
বলে আমার মনে হয়েছে। এরকম
ব্যতিক্রমী চিন্তার মানুষকে শ্রদ্ধা
না করে পারা যায় না।
চাচা গম্ভীরমুখে বললেন, মুহিত
স্যারের কথা থাক। তার প্রণীত
বাজেটকে তুমি ব্যতিক্রমী বলছো
কেন?
আমি জানালাম, সেই আদিকাল
থেকে দেখে আসছি বাজেট পেশের
আগের দিন সরকারি দল ব্যানার-
প্ল্যাকার্ড তৈরি করে বাজেটের
স্বপক্ষে অভিনন্দন জানিয়ে রাজপথে
মিছিল করে। অন্যদিকে বিরোধী দল
গণবিরোধী বাজেট পেশের নিন্দা
জানিয়ে পাল্টা শোভাযাত্রা
করে। এবারের বাজেট পেশের পর
তেমন পক্ষে-বিপক্ষে শো-ডাউনের
আয়োজন দেখা যায়নি। এ জন্য এটা
ব্যতিক্রম।
এটাও আমার প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো
না।
তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট
বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা
চমক। সেদিক থেকে এটা ব্যতিক্রম। এ
ধরনের বাজেট তারাই দিতে পারেন,
যারা মনে মনে কবি।
মুহিত স্যার মনে মনে কবি?
অবশ্যই। আমি তাকে মনেপ্রাণে কবি
বলিনি। মনে মনে কবি বলেছি।
বাজেটের সঙ্গে কবির সম্পর্ক কি?
চাচা! কেবল কবিদের পক্ষেই
কল্পনাবিলাসিতা সম্ভব। সে জন্যই
অর্থমন্ত্রীদের কবি হওয়ার প্রয়োজন
রয়েছে। কল্পনাবিলাসী না হলে
তারা দেশের মানুষকে স্বপ্ন
দেখাবেন কি করে? তাছাড়া,
নিজে স্বপ্ন না দেখলে দেশের
মানুষকে স্বপ্ন দেখানো সম্ভব নয়।
মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এ গুণটি রয়েছে।
তোমার আজকের কথার মাথামুণ্ডু আমি
কিছুই বুঝতে পারছি না। তুমি
অর্থমন্ত্রীর কথা বাদ দিয়ে বাজেট
সম্পর্কে সরাসরি কথা বলো।
ঠিক আছে। আমি তাই-ই বলছি। আমার
মতে কোন বাজেট প্রণয়নের আগে
পূর্ববর্তী বছরের বাজেটের সাফল্য ও
ব্যর্থতার পর্যালোচনা করা উচিত।
এডিপি’র বাস্তবায়ন কতখানি সম্ভব
হয়েছে, কতখানি হয়নি, কেন হয়নি,
তার মূল্যায়ন করা প্রয়োজন ছিল।
হুঁ। এটা একটা কথা হতে পারে।
এই মূল্যায়ন কেবল যে সরকার করবে, তা
নয়। বিশেষভাবে বিরোধী দলের
উচিত এ ব্যাপারে হোমওয়ার্ক করে
দেশের মানুষের কাছে বাজেটের
সমালোচনার দিকগুলো তুলে ধরা।
শুধু সমালোচনার কথা বলছো কেন?
সাফল্যের কথা বলছো না কেন?
বিরোধী দল যদি সরকারের সাফল্যের
গীত গাইতে চায়, তাহলে তা তারা
করতে পারে। অবশ্য আমাদের দেশের
সংসদের বিরোধী দল তো সরকারেরই
অংশ।
কেন? আমাদের সংসদের
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ
তো বাজেটের সমালোচনাও
করেছেন।
কিছু সমালোচনা না করলে বিরোধী
দলের তকমাটা থাকে না, সম্ভবত সে
কারণেই করেছেন।
তুমি বাজেটের আলোচনা করতে
গিয়ে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছো।
বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়াতে
করের আওতা বাড়ানোর কথা বলা
হচ্ছে। কিন্তু করদাতাদের সেই অর্থের
কত অংশ দুর্নীতি ও অপচয়ে খরচ হবে,
তা বলা হচ্ছে না।
এ কথার অর্থ কি?
দুর্নীতি থেকে রক্ষা পেতে
বাজেটে কিছু অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন
ছিল।
সে তো আছেই। দুদককে সরকার যথেষ্ট
অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে।
আমি দুদকের কথা বলছি না। তাদের
দুর্নীতিমুক্তির সার্টিফিকেট জারি
নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলছি না।
তাহলে?
আমি ন্যায়পালের কথা বলতে চাই।
আমাদের সংবিধানে ন্যায়পালের
কথা আছে। কিন্তু মন্ত্রী-এমপিসহ
প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের দুর্নীতির
সুরক্ষা দিতে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে
না।
আশ্চর্য! মন্ত্রী-এমপি বা
প্রভাবশালীদের সমালোচনা করা
ছাড়া তোমার কি আর কোন কাজ
নেই?
আছে। তবে চোখের সামনে যা দেখা
যাচ্ছে, তার চিত্রটি প্রথমে তুলে
ধরা উচিত।
ঠিক আছে। বলে যাও।
চাচা! সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় ১৬ জন এমপি’র কর্মকাণ্ডে
সরকার বিব্রত বলে খবর ছাপা হয়েছে।
এরা খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি,
টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা,
চোরাচালান, জমি দখলসহ নানা
অপকর্মে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে
জড়িত বলে পত্রিকাটিতে উল্লেখ
করা হয়েছে। পত্রিকায় তাদের নামও
উল্লিখিত আছে। কিন্তু কেউ তা
অস্বীকার বা প্রতিবাদ করেছেন বলে
জানা যায়নি। বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে
উপর থেকে সবুজ সংকেত না মিললে
কর্তৃপক্ষ নাকি এদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নিতে পারে না।
তুমি বাজেটের আলোচনা করতে
গিয়ে অন্যদিকে চলে যাচ্ছো।
চাচা! বাজেটের আলোচনা তো
কেবল কর আদায় আর খাতওয়ারি অর্থ
বরাদ্দের বিষয় নয়। যারা রাজস্ব
যোগাচ্ছেন, তাদের অর্থ লুটপাট হচ্ছে
কিনা, কারা কিভাবে তা লুটপাট
করছে, সে বিষয়টিও সারফেসে উঠে
আসা দরকার। আমার মতে সার্বিক
আর্থিক ব্যবস্থাপনার মধ্যেই লুটপাটের
প্রশ্রয় রয়েছে।
তুমি বড় কঠোর কথা বলছো।
হতে পারে। চোখের সামনে যা
দেখছি, তাই বলছি। আমি জানালাম,
একটা উদাহরণ দিতে চাই। অন্য একটি
জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান
খবরে বলা হয়েছে: ‘টেন্ডারবাজি
রোধে সরকার ই-টেন্ডারের ঘোষণা
দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত
হয়নি। বরং সারা দেশের টেন্ডার
এখন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সরকারি দলের
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এই
সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও
চলছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হানাহানি।’
আরও বলা হয়েছে ‘এমপিদের
রামরাজত্ব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকারি
দলে অব্যাহত সংঘাত-সংঘর্ষ’ চলছে। ই-
টেন্ডার চালু হলে টেন্ডারবাজি বন্ধ
হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তা করা সম্ভব
হচ্ছে না।
তুমি বাজেট সম্পর্কে কথা বলো।
সার্বিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা তো
বাজেটেরই অংশ। যে দেশে
ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি
টাকা লোপাট হয়ে গেলে কারও টনক
নড়ে না। ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে
পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় না,
সেখানে করদাতাদের ওপর চাপ
প্রয়োগ করে রাজস্ব আদায়ের নৈতিক
শক্তি থাকে কিনা, তা
বিবেচনাযোগ্য।
তোমার আজ কি হয়েছে বলো তো?
কিসব কথাবার্তা বলছো?
চাচা! দেশের আইন যেন কেবল
সাধারণ মানুষের জন্য,
প্রভাবশালীদের জন্য কোন আইন নেই।
দুর্নীতির পেটেই যদি সিংহভাগ কর
ঢুকে যায়, তাহলে বাজেটের আকার
বাড়ানোর অর্থ দুর্নীতিরও আকার
বাড়ানো। ক’দিন আগে
ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল অব
বাংলাদেশ অর্থাৎ টিআইবি দাবি
করেছে প্রধানমন্ত্রী, কেবিনেট
মন্ত্রী, উপদেষ্টা, আইনপ্রণেতা,
বিচারক, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও
রাজনীতিবিদদের সম্পদের বিবরণ
প্রকাশ করে তা নিয়মিতভাবে
আপডেট করা হোক। এটা করতে
অসুবিধা কি?
এর সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কি?
আছে। টিআইবি উল্লিখিত মাননীয়
ব্যক্তিবর্গ নিয়মিত কর দেন কিনা,
কতটা কর দেন, তাদের সম্পদ কি হারে
বাড়ে, তা দেশবাসীর জানা
প্রয়োজন। কিছুদিন আগে একজন এমপি
বলেছেন, ‘ক্ষমতায় থাকলে সম্পদ তো
বাড়বেই।’
টিআইবি’র কথা আর বলো না। ওরা
সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে
যাচ্ছে।
বিএনপি আমলেও টিআইবি’র বিরুদ্ধে
একই অভিযোগ ছিল। ঐ সময়ে এ জন্য ডক্টর
মোজাফ্ফর আহমদকে কম নিগ্রহ
পোহাতে হয়নি। তার মানে টিআইবি
এখন ঠিক লাইনেই আছে।
তুমি বাজেটের বিষয়ে বলো।
বাজেটের ব্যাপারে তোমার কোন
সুপারিশ আছে কি?
হ্যাঁ। আমার কমপক্ষে দুটি সুপারিশ
আছে।
কী, কী, বলো।
প্রথমটি হলো, বাজেট বাস্তবায়নে
দুর্নীতিমুক্ত আর্থিক ব্যবস্থাপনা। এটি
না করা গেলে ব্যাপক রাজস্ব আদায়
করা হবে কোন মুখে? মার্কিন পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টেও বলা
হয়েছে: ‘রাজস্ব আদায়ে ন্যূনতম শর্ত
পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ’।
চাচা সরোষে বললেন,
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় নিয়ে
কথা বলার তারা কে? যুক্তরাষ্ট্রকে
এই অধিকার কে দিয়েছে?
এই অধিকার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের
জনগণ। আমি বললাম, যেসব দেশকে
যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক সাহায্য দিয়ে
থাকে, তাদের ব্যাপারে
মার্কিনিরা জানতে চায় তাদের
ট্যাক্সের টাকা কোথায় কিভাবে
খরচ হচ্ছে। যথাযথভাবে তাদের
ট্যাক্সের টাকা ব্যয় হচ্ছে কিনা। এ
সম্পর্কিত রিপোর্টে রাজস্ব খাতের
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত
করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ
মার্কিন সাহায্য না নিলে তারা এই
খবরদারি করতে পারতো না।
চাচা চিন্তিতমুখে বললেন, হুঁ। বুঝলাম।
তোমার আরেকটি সুপারিশ কি?
গণতন্ত্রের সংকট নিরসন করা। এটা করা
হলে দেশে রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা আসবে। রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা ছাড়া জিডিপির
টার্গেট সাত শতাংশ বা যা-কিছুই
ধরা হোক না কেন, তাতে পৌঁছানো
সম্ভব হবে না। আমি জানালাম।
Posted 11 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: Exclusive Articles, Lead, আলোচনা,
মতামত, মানবজমিন, মাহবুব তালুকদার,
রসালোচনা
20
JUN হাঁ-বাজেট না-বাজেট by
মাহবুব তালুকদার
0 Add a comment
কঙ্কালসার দেহ। পরনে জীর্ণ বসন।
উষ্কখুষ্ক চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি।
নির্যাতনের আঘাতে শরীরে
কালচে দাগ। কারও আবার গভীর ক্ষত।
এসব নিয়েই দেশে ফিরেছেন
সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময়
উদ্ধার হওয়া ৬২ বাংলাদেশী। দেশে
ফিরে বর্ণনা দেন সাগর থেকে উদ্ধার
হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের ওপর
চালানো বর্বর ও অমানুষিক আচরণের।
তাদের বর্ণনায় উঠে আসে- দিনের পর
দিন খেতে না দেয়া, নিয়মিত
শারীরিক নির্যাতনসহ নানা
লোমহর্ষক কাহিনী। বলেন, কখনও কখনও
এক মুঠো ভাত দিলেও পানি দেয়নি।
যেন কারবালার ময়দান। পানির জন্য
বুক ফেটে গেলেও পানি পাওয়া
যায়নি। পানির কথা বললেই নেমে
আসতো নির্যাতন। সে নির্যাতনের
মাত্রা এতই ভয়াবহ ছিল যে, সইতে না
পেরে তাদের অনেক সঙ্গীই মারা
গেছেন। অনেকেই অসুস্থ হয়ে
পড়েছিলেন। অর্ধমৃত অবস্থায়ই সাগরে
ফেলে দেয়া হয়েছে তাদের।
চোখের সামনে এমন মৃত্যু দেখে ভুলেই
গিয়েছিলেন বেঁচে ফেরার কথা।
কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায় হয়েছে,
তাই ফিরতে পেরেছেন- আর দেশের
মাটিতে পা রেখে তারা বললেন,
যেন কারবালার ময়দান থেকে ফিরে
এসেছি। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায়
বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৮৭
ফ্লাইটে করে হজরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে
পৌঁছান হতভাগা এই ৬২
বাংলাদেশী। এদের মধ্যে রয়েছেন
৪০-৪৫ বছর বয়সীরা। রয়েছেন ২০-২৫
বছরের যুবক। আবার ১২-১৩ বছরের
কিশোরও রয়েছে। এরা সবাই
দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধ
সমুদ্রপথে পা বাড়িয়েছিলেন। কেউ
জেনে, কেউ না জেনে। বাড়ি
থেকে রওনা দেয়ার আগেই কারও
কাছ থেকে দালালরা হাতিয়ে
নিয়েছিল মোটা অঙ্কের টাকা।
আবার কাউকে জিম্মি করে
পরিবারের কাছ থেকে আদায়
করেছে মুক্তিপণ। বৃহস্পতিবার
বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা
(আইওএম) এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের পর
তাদেরকে পরিবারের কাছে
হস্তান্তর করে। আইওএম-এর ঢাকার
সিনিয়র সমন্বয়কারী শাকিল মনসুর
জানান, সাম্প্রতিক সময়ে
মালয়েশিয়ায় উদ্ধার হওয়া ৭১৬ জন
বাংলাদেশীর মধ্যে প্রথম দফায় এই ৬২
জন দেশে ফিরলেন। সাগরপথে
অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার
সময় গত ১১ই মে লংকাবি দ্বীপের
উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের।
কুয়ালালামপুরে অবস্থিত
বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের
শনাক্ত করে নামের তালিকা
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে
পাঠায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে
যাচাই-বাছাই করে তাদের যাবতীয়
কাগজপত্র মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ
হাইকমিশনে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঈদের
আগেই বাকিরা নিরাপদে দেশে
ফিরতে পারবেন। ফিরে আসা
বাংলাদেশীদের অধিকাংশই
কক্সবাজার, সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী,
নারায়ণগঞ্জ, যশোর, ঝিনাইদহ,
চুয়াডাঙ্গা, জয়পুরহাটের বাসিন্দা।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় থাইল্যান্ড
থেকে ৪৭ জন বাংলাদেশী
অভিবাসীকে ফিরিয়ে আনা হয়।
বৃহস্পতিবার ফিরে আসা ৬২ জনের
মধ্যে ছিল ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর
উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামের আবদুল
মজিদের ছেলে কিশোর রাজিব ও
মনির হোসেনের ছেলে মোস্তফা
কামাল। বিমানবন্দরে তাদের নিতে
আসা চাচা আবুল কালাম জানান,
আমরা ভেবেছিলাম তারা মারা
গেছে। এদের হারানোর শোকে গত ৪
মাস ধরে বাড়িতে সবার খাওয়া-
দাওয়া বন্ধ। রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে
বেড়ায় এদের মা-বাবা। তারা
নিখোঁজ হওয়ার পর যশোর জেলার
জগদীশপুর গ্রামের ওয়াহিদ দালাল
তাদের ফিরিয়ে দেবে বলে মোটা
অঙ্কের টাকা দাবি করে। পরে একেক
জনের পরিবার ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা
দেয় তাকে। কিন্তু ৩ মাসেও
তাদেরকে ফেরত দিতে পারেনি।
এরপর মামলা করার কথা বললে দালাল
ওয়াহিদ নানা ধরনের হুমকি দেয়। সে
বলে- আমার ভাই সচিব। কেউ আমার
কিছু করতে পারবে না। তারপর থেকে
তাদের ফিরে আসার আশা ছেড়ে
দিয়েছিল সবাই। কিন্তু গত ১৯দিন
আগে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে জানায়
তারা বেঁচে আছে। এরপর থেকেই
বাড়িতে খুশির বন্যা। সবাই অধীর
আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
আবুল কালাম আরও জানান, একইসঙ্গে
যাওয়া আরও দুই কিশোর তাদের
গ্রামের মৃত সাঈদের ছেলে উজ্জ্বল
এবং সামাদের ছেলে উজ্জ্বল এখনও
ফেরেনি। তারা এখনও
মালয়েশিয়াতেই আছে। তিনি
দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
করেন। একই জেলার শৈলকুপা
উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের
কালাম বলেন, হাটগোপালপুর গ্রামের
মনোয়ারের মাধ্যমে ৩ মাসে আগে এ
পথে গিয়েছিলেন। কিন্তু তখন বুঝতে
পারেননি তাদের সঙ্গে এমন করা
হবে। বলেন, দেড়মাস একটি পাহাড়ে
আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন
করেছে তারা। পরে ট্রলারে করে
সাগরে নিয়ে গিয়েও নির্যাতন
করেছে। বগুড়ার সালাম। কঙ্কালসার
দেহ। দেখে মনে হয় বহুদিন ধরে অভুক্ত
রয়েছেন এ মানুষটি। তার সঙ্গে কথা
বলতে গেলেই তিনি দুই বাহু ও পিঠ
বের করে দেখান। সেসব জায়গায়
কালচে দাগ। পেশায় কৃষিজীবী
সালামের বাড়ি কাহালু উপজেলার
পাঁচখুর গ্রামে। বলেন, ৬ মাস আগে
স্ত্রীকে জানিয়েই তিনি
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য
একইগ্রামের কামরুল দালালের সঙ্গে
বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু কামরুল
তাকে টেকনাফ পৌঁছে দিয়েই উধাও
হয়ে যায়। পরে অন্যরা তাকে ট্রলারে
উঠিয়ে নেয়। এরপর ট্রলারে চলতে
থাকে নির্যাতন। ওই সময় বাড়িতে
ফোন করে দালাল কামরুলকে ২ লাখ
৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে বলে
জানান। তিনি বলেন পানির ওপরে
থাকতেই টাকা চেয়েছিল। বাড়ি
থেকে টাকাও দিয়েছে। কিন্তু
নির্যাতন থামেনি। তিনি বলেন,
প্রতিদিন খুব মারধর করতো। ২ বেলা
একমুঠো করে শুধু ভাত দিতো। কিন্তু
পানি দেয়নি। পানি চাইলে আরও
মারধর করতো। তাদের মারধরের
কারণে অনেকেই মারা গেছে।
আবার অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ায়
জ্যান্তই সাগরে ফেলে দিয়েছে।
দীর্ঘ তিনমাস তারা এভাবেই
কাটিয়েছেন সাগরে। বেঁচে
ফিরবেন এ আশা কখনই ছিল না।
ভেবেছিলেন অনেক সঙ্গীর মতো
একদিন তিনিও মারা যাবেন। তিনি
আরও বলেন, তারা যে ট্রলারে
ছিলেন তাতে ৪৫০ জন মানুষ ছিল।
এদের সবাই বাংলাদেশী। এর মধ্যে
৬৫ জন মারা গেছে। এদের বেশির
ভাগই নির্যাতন এবং পানির অভাবে
মারা গেছেন। অসুস্থ হয়ে গেলে
আধমরা অবস্থায়ই সাগরে ফেলে
দিয়েছে। নির্যাতনে চিহ্ন তার
শরীরে লেগে থাকা দাগ দেখিয়ে
বলেন, দেশে জেল খাটলেও ভাল।
প্রতিদিন এত মারধর তো কবরে না।
ফিরে আসা প্রত্যেকের জীবনেই
ঘটেছে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা।
প্রত্যেকের শরীরেই রয়েছে ক্ষত।
অনেকেই কথাও বলতে পারছেন না
ঠিকমতো। সেই বিভীষিকাময় দিনের
কথা মনেই করতে চান না তারা।
বলেন, এসব কথা বলে বুঝানোর না।
আইওএম-এর কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাকিল
মনসুর বলেন, ফিরে আসা ৬২ জনের
মধ্যে বাবুল নামে ১ জন অসুস্থ থাকায়
তাকে বিমান থেকে নামানোর
পরেই অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠিয়ে
দেয়া হয়েছে। তার বাড়ি
চট্টগ্রামে। তিনি উদ্ধার হওয়ার পর
মালয়েশিয়াতে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার
হন।
শাকিল আরও বলেন, দেশটিতে উদ্ধার
হওয়াদের মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা
রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার
কোনভাবেই তাদের আনবে না। এজন্য
ভেরিফিকেশনের জন্য একটু সময়
লাগছে। সেদেশে উদ্ধার হওয়াদের
মধ্যে ৭১৬ জনের ব্যাপারে নিশ্চিত
হওয়া গেছে। ঈদের আগেই তাদের
ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে আশা
প্রকাশ করেন তিনি।
Posted 11 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: Lead, অমানবিক, মানবজমিন
20
JUN ‘যেন কারবালার ময়দান
থেকে ফিরে এসেছি’
0 Add a comment
‘এখন শতকরা এক ভাগ শীর্ষ ধনীর হাতে
সব বিশ্ববাসীর অর্জিত সম্পদেরও
অধিক সম্পদ।’ ব্রিটেনভিত্তিক
চ্যারিটি সংগঠন ‘অক্সফাম’ তাদের এই
গবেষণালব্ধ তথ্য সুইস স্কি রেসোর্ট’
ডাভোসে চলমান বিশ্ব ইকোনমিক
ফোরামের বার্ষিক অধিবেশনকে
জানিয়ে সেখানকার সবাইকে অবাক
করেছে। কিন্তু এই অধিবেশনে
অংশগ্রহণকারী প্রায় দেড়শ’ দেশের
অবিশ্বাস্য ধনী রাষ্ট্রনায়ক,
শিল্পপতি, ব্যবসা- প্রতিষ্ঠানের
মালিক, সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্যে
নতুন ধারার জন্মদাতা নোবেল
লরিয়েট ও জীবনের বিভিন্ন
ক্ষেত্রে নতুন নতুন পরিবর্তনের
সূচনাকারী সেলিব্রিটিরা এবং
তাবৎ ব্র্যান্ড ও ফ্যাশন গুরুরা এই তথ্যে
অবাক হননি। কেননা তারাই তো
প্রকারান্তরে এসব প্রবণতার নেপথ্যে
সক্রিয় থাকেন এবং তাদের অবদানের
জন্য যা কিছু পাওয়ার তা তারা
পেতে থাকেন। এক কথা তারাই এর
বেনিফিসিয়ারি।
বিষয়টি বুঝতে একটু পেছনে ফিরে
তাকানো যাক। ব্রিটেন ও তার কিছু
পর ইউরোপের অন্যান্য দেশে শিল্প
বিপ্লব ঘটলে এবং মুনাফাভিত্তিক
পুঁজিবাদের উত্থান হলে তারই
সমান্তরালে তা ‘জীবন ব্যবস্থা’
হিসেবে সমাজতন্ত্রকে উসকে দেয়।
শুরু হয় উভয়ের মধ্যে একটি অসম
প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায়
ধনতান্ত্রিক বিশ্ব অনেকটা এগিয়ে
তার অন্তর্নিহিত শোষণে
সমাজতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান মানবিক
আবেদন ধনতন্ত্রকে ঘিরে যে জীবন
ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তার প্রতি
চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বিংশ
শতাব্দীতে দুটি প্রলয়ঙ্করী বিশ্বযুদ্ধে
যদিও আলোচ্য দুই মতাদর্শের স্পষ্ট
প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি এবং তা
নেহায়েত ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর
বাজার সম্প্রসারণে ও প্রভাববলয়
বিস্তৃত করতেই সংঘটিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষ ভাগে এসে
মিত্র শক্তি যা মূলত ধনতান্ত্রিক ও
সমাজতান্ত্রিক উভয় শিবিরের
সমন্বয়ে সংগঠিত হয়েছিল উত্তর
শিবিরের অভিন্ন শত্রু হিটলারের
দুর্দমনীয় প্রতিপত্তি লিপ্সাকে
মোকাবিলায় তাতে ঘটনাচক্রে উভয়
শিবিরের দেশগুলোর ‘জাতীয়
স্বার্থের’ সংঘাতে চিড় ধরে এবং
তারা পরস্পরকে অবিশ্বাস করতে শুরু
করে।
জার্মানির নাৎসি নেতা এডলফ
হিটলারের থার্ডবাইখের সঙ্গে
স্বার্থের সংঘাত হলেও এই দুর্ধর্ষ
নেতা মতাদর্শে কম ধনতান্ত্রিক
ছিলেন না এবং তার দেশও ছিল শীর্ষ
শিল্পোন্নত দেশগুলোর অন্যতম। তবু
ধনতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে তার
বিরোধ বাধে তার শক্তির অনুপাতে
বিশ্ব ব্যবস্থায় তার স্থান নিরূপণ করার
দাবি করলে। কিন্তু মিত্র শক্তির
অন্তর্গত একমাত্র সমাজতান্ত্রিক দেশ
সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মিত্র
শক্তির ধনতান্ত্রিক অংশের সঙ্গে
সংঘর্ষ ছিল মতাদর্শগত। তাই মিত্র
শক্তির নেতারা ভবিষ্যৎ বিশ্বের
রূপরেখা প্রণয়ন করতে সোভিয়েত
নেতা স্তালিনের চোখে ধুলো
দিয়ে যুদ্ধ সমাপ্তির আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা আসার পূর্বেই গোপনে
আটলান্টিকের ওপারে পাড়ি জমান।
আমেরিকার অঙ্গরাজ্য নিউ
হ্যাম্পশায়ারের ব্রেটনউডে রচিত হয়
আগামী দিনের বিশ্ব ব্যবস্থার
সুদূরপ্রসারী ব্যবস্থাপত্র, যা
বাস্তবায়নের জন্য সব আনুষঙ্গিক
প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিকভাবে
অস্তিত্বে না আসলেও সেগুলোরও সব
খুঁটিনাটি ব্যবস্থাপত্রে সংযোজিত
হয়েছিল। সুচিন্তিতভাবে
ব্রেটেনউডে প্রণীত ব্যবস্থাপত্রে
বিশ্বব্যাংক বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা,
বিশ্বায়ন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল
ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং ক্রমে
ক্রমে পরবর্তীতে সেগুলোর অস্তিত্বে
আসাও আমরা দেখেছি। ব্রেটনউডেই
সম্ভবত আজকে এতদিন পর আমরা যে
ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখছি,
হাজার কোটি টাকার এলিট শ্রেণী
এবং তার গা ঘেঁষেই দেখছি
সমাজের তলানিতে আন্ডারডগ ও
ছিন্নমূলদের অবস্থান তার ব্যবস্থাও
ব্রেটনউডে স্থিরিকৃত হয়েছিল।
ডাভোসে শীর্ষ ধনীদের বিলাসবহুল
পুনর্মিলনী এবং ধনতান্ত্রিক বিশ্বকে
আপন মর্যাদায় স্থায়িত্ব দেয়ার
কৌশল প্রণয়নে ব্রেটনউড মডেলকেই
অনুসরণ করা হয়। আমার জানা মতে
ডাভোসে অংশগ্রহণকারী একমাত্র
সম্ভবত আমাদের দেশের একটি
রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের ফসল
অস্বাভাবিক ও অসাংবিধানিক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ড. ফখরুদ্দীন
আহমদ। তিনি সরকারের প্রধান
নির্বাহী হিসেবে ওই সেলিব্রেটি
সম্মেলনে গিয়েছিলেন এবং হামিদ
কারজাই প্রমুখদের সঙ্গে কাঁধ
ঘেঁষাঘেঁষি করেছিলেন। হায়রে
সমাজতন্ত্র যাকে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা
আন্দোলনের ছাত্র সমাজের চাপে
সমাজতন্ত্রের দাবি সংবলিত
এগোরো দফা গ্রহণ করেছিলেন।
স্বাধীনতার পর সমাজতন্ত্র রাষ্ট্রীয়
চার মূলনীতির সঙ্গে সংবিধানে
স্থান পেয়েছিল। এখন হাজার কোটি
টাকার সুপার রিচদের দাপটে
সমাজতন্ত্র এ দেশে নির্বাসিত।
তবু সমাজতন্ত্রের বাতি আজো ধিকি
ধিকি জ্বলছে সুদূর লাতিন
আমেরিকায় ‘সোশ্যাল ফোরামের’
ব্যানারে। ব্রেটনউডের কাছে
সোভিয়েতরা হার মানলেও বিশ্বের
কোটি কোটি মুক্তিকামী মানুষ
এখনো আশায় বুক বাঁধে এবং সোশ্যাল
ফোরামে সংঘবদ্ধ হয় এশিয়ায়,
আফ্রিকায় এবং লাতিন আমেরিকায়।
তারাও দেখে তারা বলিভিয়ায়,
হুগো শ্যাভেজ, চে গুয়েভারা ও
ফিদেল ক্যাস্ট্রোর দেশে।
লেখক: সাবেক সেনা কর্মকর্তা,
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট।
সাবেক মহাপরিচালক, বিআইআইএসএস
Posted 12 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: অর্থনীতি, আলোচনা, এম আবদুল
হাফিজ, মতামত, মানবকণ্ঠ
20
JUN ব্রেটনউড থেকে ডাভোস
by এম আবদুল হাফিজ
0 Add a comment
আওয়ামী লীগে যোগদানের হিড়িক
পড়েছে বিরোধীজোটের তৃণমূলে।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হয়রানি
থেকে বাঁচতে সরকারি দলে আশ্রয়
নিচ্ছেন মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত
বিরোধী জোটের কর্মী-সমর্থকরা। ৫ই
জানুয়ারির নির্বাচনের পর শুরু
হয়েছিল এ দলবদল। সেটা ত্বরান্বিত হয়
২০১৫ সালের শুরুতেই
অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি
চলাকালে। একদিকে আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনীর অসহনীয় হয়রানি অন্যদিকে
বিরোধী জোটের গন্তব্যহীন
আন্দোলন। অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে
কোণঠাসা এবং নিরাপত্তাহীনতায়
ভোগা বিরোধী জোটের তৃণমূল
নেতাকর্মী-সমর্থকরা অস্তিত্ব রক্ষায়
বাধ্য হয়েই ছেড়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ
দল। মন্ত্রী-এমপিদের ফুলের তোড়া
দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে তারা
ভিড়ছেন ক্ষমতাসীনদের ছায়াতলে।
আওয়ামী লীগও দলে টেনে নিচ্ছে
তাদের। বিরোধী জোটের শক্তিক্ষয়
করতে বাছ-বিচারহীনভাবেই দলে
বেড়াচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত
নেতাকর্মীদের। এ নিয়ে
রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা
থাকলেও বিরোধী জোটের
আন্দোলনকে দুর্বল, তৃণমূল পর্যায়ে দল
ভারি করার নানাদিক বিচার করে
প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মীদের দলে
টানতে আওয়ামী লীগ
নেতাকর্মীরাও উৎসাহী। ২০১৫
সালের প্রথম সাড়ে পাঁচ মাসে
সারা দেশে কমপক্ষে ২০ হাজার
কর্মী-সমর্থক যোগ দিয়েছেন আওয়ামী
লীগে। প্রতিদিনই দেশের কোন না
কোন জেলায় চলছে এ যোগদান পর্ব।
অনেকে আবার আনুষ্ঠানিকভাবে
দলবদল না করলেও সরকারি দলের
নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে
চলছেন। বিএনপি নেতারা অভিযোগ
করে বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের
শক্ত ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত
এলাকাগুলোকেই টার্গেট করেছে
আওয়ামী লীগ। তৃণমূল নেতা-কর্মী
ভাগানোর জন্য চাপ দেয়ার
পাশাপাশি লোভ দেখানো হচ্ছে
প্রতিনিয়ত। এমনকি মামলায় জর্জরিত
নেতাকর্মীদের চাপ দেয়া হচ্ছে
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমেও।
বিএনপির জেলা পর্যায়ের বেশ
কয়েকজন নেতা জানান, দল ক্ষমতার
বাইরে প্রায় এক দশক। পুরো সময়টা
মামলা-হামলায় জর্জরিত
নেতাকর্মীদের বুকে কষ্টে পাহাড়
জমে উঠেছে। বিশেষ করে
আন্দোলনে দলের কেন্দ্রীয়
নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা কিছুটা ক্ষুব্ধও
করেছে তৃণমূলকে। এছাড়া হতাশা ও
ক্ষোভ-বিক্ষোভের কারণেও কেউ
কেউ দলবদলে বাধ্য হচ্ছেন। তবে
নেতাকর্মী বাগিয়ে নিয়ে
বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না। নতুন
কর্মী-সমর্থকরা তাদের স্থান পূরণ
করবে। তৃণমূলে দল বদলের ব্যাপারে
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো.
শাহজাহান বলেন, সারা দেশে
বিএনপি নেতাকর্মীরা মামলা-
হামলায় অনেকটা দুর্বল অবস্থায়
পড়েছে। তার ওপর বিএনপি ছেড়ে
সরকারি দলে যোগ দেয়ার জন্য
আওয়ামী লীগ নেতাদের
পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন তাদের
ওপর চাপ দিচ্ছে। ফলে নতুন মামলা-
হামলা থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন
এলাকায় তৃণমূল পর্যায়ে কিছু কর্মী-
সমর্থক আওয়ামী লীগে সঙ্গে যাওয়ার
ঘটনা ঘটেছে। তবে এরকম কর্মী
বাগিয়ে বিএনপিকে দুর্বল করা
যাবে না।
২০১৫ সালের ১৭ই জানুয়ারি ২০দলের
অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি
চলাকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এমপির হাতে ফুল
দিয়ে উপজেলা যুবদলের প্রচার
সম্পাদক মোহাম্মদ আলীসহ
অর্ধশতাধিক, ১৮ই জানুয়ারি
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা
বিএনপির কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান
আলী সরদারের নেতৃত্বে তিন
শতাধিক, ২রা ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর
সদর উপজেলার অর্ধশতাধিক ও ১৯শে
ফেব্রুয়ারি বরগুনার পাথরঘাটায়
জনসভার মাধ্যমে বিএনপি ও
অঙ্গসংগঠনের শতাধিক, ১০ই মার্চ
ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম
মুকুলের হাতে ফুল দিয়ে সদর
উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন মদনপুরের
বিএনপির সভাপতি ও ইউপি
চেয়ারম্যান একেএম নাছির উদ্দিন
নান্নু’র নেতৃত্বে সহস্রাধিক ও ১৪ই
মার্চ জামালপুরের সরিষাবাড়িতে
শতাধিক কর্মী-সমর্থক আওয়ামী লীগে
যোগ দেন। ১৯শে মার্চ প্রতিরক্ষা
মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী
কমিটির সভাপতি মে. জে. (অব.) সুবিদ
আলী ভূঁইয়া এমপি’র হাতে ফুল দিয়ে
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌর বিএনপি
সভাপতি ও মেয়র এবং চারজন
চেয়ারম্যানসহ কয়েক শতাধিক
নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ
দেন। ২১শে মার্চ ঢাকা-১৯ আসনের
এমপি ডা. এনামুর রহমানের হাতে ফুল
দিয়ে আশুলিয়া বিএনপির ৩৪ জন
কর্মী ও জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ
সম্মেলন করে জয়পুরহাট সদর উপজেলার
জামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির শতাধিক
কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ৫ই
এপ্রিল মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ
ইউনিয়ন জামায়াতের সহ-সভাপতি
সাব্বিরুল হক তালুকদার শামীমের
নেতৃত্বে জামায়াতের অর্ধশতাধিক
ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার দুল্লা
ইউনিয়নের ৭ ইউপি সদস্যসহ দুই
সহস্রাধিক এবং ১০ই এপ্রিল
রাজশাহীর বাগমারায় আওয়ামী
লীগ নেতাদের হাতে ফুল দিয়ে
উপজেলা জামায়াতের সাবেক
সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল
ইসলাম শতাধিক সমর্থক নিয়ে
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৪ই
এপ্রিল কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে
বাংলা বর্ষবরণের এক অনুষ্ঠানে
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা
কামালের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপি-
জামায়াতের সহস্রাধিক, ১৭ই এপ্রিল
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার একটি
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
জামাল আকন্দের নেতৃত্বে দুই শতাধিক
এবং ১৮ই এপ্রিল পাবনা জেলা
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপির হাতে
ফুল দিয়ে সদর উপজেলার চর তারাপুর
ইউনিয়ন বিএনপির দুই শতাধিক কর্মী-
সমর্থক আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
২১শে এপ্রিল জয়পুরহাট সদর উপজেলার
জামালপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা
আবদুল কুদ্দুস সরকারের নেতৃত্বে
শতাধিক, ২১শে এপ্রিল কুমিল্লার
মনোহরগঞ্জে সৌদি আরব আওয়ামী
লীগের নেতা জাকির হোসেনের
হাতে ফুল দিয়ে উপজেলার
বিপুলাসার ইউনিয়ন বিএনপি ও
যুবদলের অর্ধশতাধিক ও ২২শে এপ্রিল
চাঁদপুরের কচুয়ায় ড. মহীউদ্দীন খান
আলমগীর এমপি’র হাতে ফুল দিয়ে
বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২রা মে
সিরাজগঞ্জে ডা. হাবীবে মিল্লাত
মুন্না এমপির হাতে ফুল দিয়ে
কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা
মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে
সহস্রাধিক, ৮ই মে লক্ষ্মীপুরের
রায়পুরে দুই শতাধিক ও একইদিন ভোলা
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম
আহ্বায়ক সামসুদ্দিন রাঢ়িসহ বিএনপি
ও বিজেপির সহস্রাধিক কর্মী
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ৯ই মে
গাজীপুরের টঙ্গীতে এক অনুষ্ঠানে যুব
ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ
আহসান রাসেল এমপির হাতে ফুল
দিয়ে বিএনপি নেত্রী ও সিটি
কাউন্সিলর রিনা হালিম ও
জামায়াত নেতা মাওলানা শরীফ
হোসাইনের নেতৃত্বে বিএনপি-
জামায়াতের দুই শতাধিক কর্মী-সমর্থক
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ৯ই মে
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির ২
শতাধিক, ১২ই মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি
মইনুদ্দীন মণ্ডলের হাতে ফুল দিয়ে
পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর
আফজাল হোসেন পিন্টু ও সুন্দরপুর
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
বিএনপি নেতা মতিউর রহমান
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর
কিছুদিন আগেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের
বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-
বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মী
আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। ১৩ই মে
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক
রেদোয়ান চৌধুরী নয়ন ভোলা-২
আসনের এমপি আলী আজম মুকুলের হাত
ধরে আওয়ামী লীগে যান। ১৫ই মে
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান
উপজেলা শ্রমিক দলের সহসভাপতি
দীলবারসহ বিএনপির পাঁচ শতাধিক
কর্মী-সমর্থক স্থানীয় এমপি সুকুমার
রঞ্জন ঘোষের হাতে ফুল দিয়ে এবং
২৪শে মে নোয়াখালীতে বিএনপি-
জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মী
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপির
হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে
যোগ দেন। ২৫শে মে লক্ষ্মীপুরের
রায়পুরে বিএনপির দুই শতাধিক ও শহর
বিএনপির ২৫ জন আওয়ামী লীগে
যোগ দেন। ৪ঠা জুন সিলেটের
বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি
ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ফজর আলী
মেম্বারসহ ৮০ জন, ৬ই জুন ভোলা
পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও বিএনপি
নেতা মঞ্জুর আলম এবং একইদিন
জামালপুর সরিষাবাড়ীর যুবদল নেতা
রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে দুই
শতাধিক, একইদিন জয়পুরহাট জেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয়
এমপি শামসুল আলম দুদুর উপস্থিতিতে
পাঁচবিবি উপজেলা জামায়াত
নেতা আবদুস সালামের নেতৃত্বে পাঁচ
শতাধিক কর্মী-সমর্থক আওয়ামী লীগে
যোগ দেয়। ৬ই জুন জেলা আওয়ামী
লীগের সভাপতি ও সাবেক ধর্ম
প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়ার
হাতে ফুল দিয়ে মৌকরণ ইউপি
বিএনপি’র শতাধিক এবং ১৪ই জুন
টেংরাখালীর শতাধিক বিএনপি
কর্মী-সমর্থক আওয়ামী লীগে যোগ
দেন। এছাড়াও গাইবান্ধা-৪ আসনের
এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের
হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে
গোবিন্দগঞ্জে বিএনপি ও জাতীয়
পার্টির শতাধিক, মাগুরার শ্রীপুর
উপজেলার আমলসার ইউনিয়ন বিএনপির
তিন শতাধিক, লক্ষ্মীপুর জেলা
বিএনপির সাবেক সদস্য ইব্রাহীম
হোসেন রতনসহ ২৫ জন, বরগুনা আওয়ামী
লীগের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী
নাসিমা ফেরদৌসী এমপির হাতে
ফুল দিয়ে পাথরঘাটায় বিএনপি ও
অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী
আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এদিকে
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার
ডৌবাড়ী ইউপি বিএনপির তিন
শতাধিক, বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক কবির সিকদারের
নেতৃত্বে শতাধিক, আড়াইহাজার
থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি
আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে দুই
শতাধিক ও আড়াইহাজার পৌরসভা ও
ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের শতাধিক এবং যুব
ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ
আহসান রাসেলের হাতে ফুল দিয়ে
গাজীপুরের গাছা ইউনিয়নের
শতাধিক কর্মী-সমর্থক আওয়ামী লীগে
যোগ দেন। নাটোরের সিংড়ায়
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ
আহমেদ পলকের উপস্থিতিতে এক
অনুষ্ঠানে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের
বিএনপি নেতা রবিউল ইসলামের
নেতৃত্বে শতাধিক, জামালপুরের
বকশীগঞ্জে সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল
কালাম আজাদের হাতে ফুল দিয়ে
উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ
সম্পাদক নজরুল ইসলাম সওদাগরের
নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের
পাঁচ শতাধিক এবং জয়পুরহাট জেলা
অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের
সাধারণ সম্পাদক ও শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড
ছাত্রদলের সভাপতি মাহমুদুল হাসান
বিএনপির পাঁচ শতাধিক কর্মী-সমর্থক
নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
চাঁদপুরে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল
হোসেন চৌধুরী মায়ার উপস্থিতিতে
এক অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির
আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক ও
ফরাজীকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান
দেলোয়ার হোসেন দানেশ দুই
শতাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে আওয়ামী
লীগে যোগ দেন।
৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের
প্রাক্কালে কুষ্টিয়াতেই শুরু হয়েছিল
এ দলবদল। ২০১৪ সালের ১লা জানুয়ারি
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াত নেতা
নওশের আলী স্থানীয় যুবলীগ
আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় দলের
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম
হানিফের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী
লীগে যোগ দেন। ৪ঠা জুন
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা
যুবদল ও মহিলা দলের দুই শতাধিক, ১৫ই
জুন দিঘীনালা বিএনপি ও বিভিন্ন
অঙ্গ সংগঠন থেকে শতাধিক এবং ১৮ই
জুলাই বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা
আজমের হাতে ফুল দিয়ে
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা
বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক
মাকছুদুর রহমান আনসারীসহ
মুক্তিযোদ্ধা দল, কৃষক দল, যুবদল,
স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামাদল, তরুণ দল ও
মহিলা দলের পাঁচ শতাধিক
নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ
দেন। ৯ই নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা
আওয়ামী লীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল
ত্রিপুরা এমপি’র হাতে ফুল দিয়ে
সাবেক উপজেলা যুবদল সাধারণ
সম্পাদক আব্দুর রহমান মেম্বার ও
জাতীয় পার্টির নেতা মনির
ফরাজীসহ ১৫শ’ নেতাকর্মী আওয়ামী
লীগে যোগ দেয়। ২৪শে নভেম্বর
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে জেলা
আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের
সদস্য মাহবুবুর রহমানকে ফুল দিয়ে
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শতাধিক,
২৯শে নভেম্বর মাদারীপুরের শিবচরে
সাবেক হুইপ ও স্থানীয় এমপি নুর-ই-আলম
চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে
উপজেলা বিএনপি নেতা ও সাবেক
পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ
হাওলাদারসহ পাঁচ শতাধিক এবং ১৬ই
ডিসেম্বর লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা
যুবদলের সহসভাপতি শাজাহান
বিশ্বাস ও ছাত্রদলের সহসভাপতি
আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রদল-
যুবদলের তিন শতাধিক আওয়ামী
লীগে যোগ দেয়।
Posted 12 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আওয়ামী লীগ, কাফি কামাল,
মানবজমিন, রাজনীতি
20
JUN দলবদলের হিড়িক by কাফি
কামাল
0 Add a comment
নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল
ইসলামসহ আলোচিত সাত খুন মামলার
প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে
ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে
ফরেনার্স আইনে করা মামলা এক বছর
পেরিয়ে গেলেও আদালতে চার্জ
গঠন করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাকে
বাংলাদেশের ফেরত পাওয়া এখনও
দুরূহ বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
গ্রেপ্তারের এক মাসের মধ্যেই অবশ্য
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতের
মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিমের
আদালতে নূর হোসেনকে ফেরত চেয়ে
বাংলাদেশ যে আবেদন করেছে
সেটি নথিভুক্ত হয়েছিল বলে
জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি
বিকাশরঞ্জন দে। তারপর আর এ নিয়ে
আদালতে সরকারি কৌঁসুলির তরফে
নতুন করে আর কোন আবেদন জানানো
হয়নি। তবে গত একবছরে একডজনেরও
বেশি বার আদালতে নূর হোসেনকে
নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু গত ১৮ই
আগস্ট পুলিশ চার্জশিট দাখিল করলেও
প্রত্যেকবারই মামলার তিন আসামি
একসঙ্গে হাজির না থাকায় চার্জ গঠন
করা যায়নি বলে তদন্তকারী পুলিশ
অফিসার জানিয়েছেন। তবে
ফরেনার্স আইনের ১৪ ধারায় করা এই
মামলায় নূর হোসেনের সর্বোচ্চ ৫ বছর
জেল হতে পারে। নূর হোসেন
বর্তমানে দমদম সংশোধনাগারে
রয়েছেন। বন্দিদের সঙ্গে তিনি খোশ
মেজাজেই সময় কাটান বলে জেল
সূত্রে জানা গেছে। শেষবার গত
২২শে এপ্রিল নূর হোসেনকে তার এক
সঙ্গীসহ বারাসাত আদালতে হাজির
করা হয়। কিন্তু মামলার অপর জামিনে
থাকা আসামি উপস্থিত না থাকায়
শুনানি হয়নি। পরবর্তী হাজিরার দিন
ধার্য হয়েছে ২২শে জুলাই। যদিও এই
সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে মন্ত্রী
থেকে শুরু করে পুলিশ কর্তারা বারে
বারে নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার
ব্যাপারে তৎপরতার কথা জানালেও
ভারতে সেই ধরনের কোন তৎপরতার
প্রতিফলনের কথা মামলার সঙ্গে যুক্ত
পদাধিকারীরা জানাতে
পারেননি। মামলায় এখনও পর্যন্ত নূর
হোসেন কোন আইনজীবী দেননি। তবে
তার সঙ্গে অন্য দুইজন আইনজীবী দিয়ে
জামিনের চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে
খান সুমন ধরা পড়ার কয়েক মাসের
মধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছিলেন যে, ১০ই জুন
বৈধ কাগজপত্র নিয়েই তিনি
বিমানে করে কলকাতায়
এসেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, মামলা
প্রলম্বিত করার কৌশল হিসেবেই তিন
আসামিকে এক করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত বছরের ১৪ই জুন কলকাতা
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে
কৈখালিতে ভিআইপি রোডের উপর
সুবিশাল ইন্দ্রপ্রস্থ আবাসনের এ ব্লকের
একটি বাড়ির চার তলার ৫০৩ নম্বর
ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করা
হয়েছিল নূর হোসেন ও তার দুই
সহযোগী খান সুমন ও ওহিদুল জামান। গত
১৫ই জুন বারাসাত আদালতে পুলিশ যে
কেস ডায়েরি পেশ করেছে তাতে
বলা হয়েছে, বাংলাদেশের
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার
শিমরাইলের বাসিন্দা নূর হোসেন
ওরফে চেয়ারম্যান, বন্দর থানার কুড়ি
পাড়ার ওহিদুল জামান শালিম ওরফে
শালিম ও ফতুল্লা থানার
বাসরবাদের খান সুমন ওরফে বিট্টুকে
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের
দায়ে বিদেশী আইনের ১৪ ধারায়
মামলা করা হয়েছে। পুলিশ
জানিয়েছে, এরা বসিরহাট সীমান্ত
দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। এদের
কাছে ভারতের ও বাংলাদেশের
১১টি সিম কার্ড এবং ভারত ও
বাংলাদেশের কয়েক হাজার টাকা
পেয়েছে। তবে এদের কাছে কোন
অস্ত্র পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ
আদালতে জানিয়েছে। পুলিশ প্রথম
দিকে নূর হোসেনকে হেফাজতে
নিয়ে বিভিন্ন জায়গায়
বাংলাদেশী অপরাধী ও তার
কনটাক্টম্যানদের খোঁজে তল্লাশি
চালালেও পরবর্তী সময়ে আর
রিমান্ডে নেয়া হয়নি। এরপর থেকে
সে জেল হেফাজতে রয়েছে। ঘটনার
বিবরণে জানা গেছে, গত বছরের
২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি
করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর
ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম
এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ
সাতজন অপহৃত হন। অপহরণের পরপরই
নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের
সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি
করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের
কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান
আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার
পর অভিযোগ অস্বীকার করে
সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিলেও তিন
দিনের মাথায় শীতলক্ষ্যা নদীতে
অপহৃতদের লাশ ভেসে ওঠার পর
লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান নূর
হোসেন। নূর হোসেন ও তার
সহযোগীরা র্যাবকে ছয় কোটি টাকা
দিয়ে নজরুলসহ সাতজনকে হত্যা
করিয়েছেন বলে নজরুল ইসলামের শ্বশুর
শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন। তার
অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১-এর
তখনকার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট
কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর
আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট
কমান্ডার এমএম রানাকে অবসরে
পাঠানো হয়। এরপর হাইকোর্টের
নির্দেশে র্যাবের সাবেক তিন
কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। আদালতে
দেয়া জবানবন্দিতে আরিফ ও রানা
ওই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা
স্বীকার করেন। নূর হোসেনের কাছ
থেকে পাওয়া অর্থের বিনিময়ে
তারা নজরুলসহ সাতজনকে খুন করেছেন
বলে স্বীকারোক্তি দেন। তবে ঘটনার
পর থেকেই নূর হোসেন পলাতক ছিলেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নূর
হোসেন কলকাতায় পালিয়ে গেছেন।
তাকে ধরার জন্য ইন্টারপোলের
মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা
হয়েছিল। ভারতের কাছেও পাঠানো
হয়েছিল সেই আবেদন। সেই নোটিশের
ভিত্তিতেই নূর হোসেনকে শনাক্ত
করেছিল বিধান নগর পুলিশ
কমিশনারেটের গোয়েন্দারা।
আদালতে হাজির হবার প্রথম দিকে নূর
হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের
উত্তরে জানিয়েছিলেন যে, তিনি
রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আর
বাংলাদেশে মামলা হওয়াতেই
তিনি ভারতে চলে এসেছেন। কে
তাকে ফাঁসিয়েছে তার নাম বলতে
অস্বীকার করলেও তিনি
জানিয়েছেন, যে তাকে
ফাঁসিয়েছে সেই তাকে ভারতে
পাঠিয়ে দিয়েছে। একপর্যায়ে
তিনি দাবি করেছিলেন, নজরুলের
সঙ্গে তার কোন বিরোধ ছিল না।
তিনি র্যাবকে কত টাকা দিয়েছেন
জানতে চাইলে রাগত ভঙ্গীতে নূর
হোসেন বলেছিলেন, র্যাবকে কেন
টাকা দেব ? কোন টাকাই আমি
দিইনি। তবে পরবর্তী কালে নূর
হোসেন সাংবাদিকদের কাছে আর
কোন কথাই বলেন নি।
Posted 13 hours ago by Kutubi Coxsbazar
Labels: আইন আদালত ও বিচার, পরিতোষ
পাল, পশ্চিমবঙ্গ, মানবজমিন
20
JUN

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন